পানির খোঁজে পচা নর্দমায় নগরবাসী!

নিজস্ব প্রতিবেদক
আন্তর্জাতিক ডেস্ক
প্রকাশিত: মঙ্গলবার ১২ই মার্চ ২০১৯ ১১:২৬ অপরাহ্ন
পানির খোঁজে পচা নর্দমায় নগরবাসী!

পাঁচ দিন ধরে বিদ্যুৎ নেই। তাই পানি সংগ্রহ করতে নগরবাসী পয়ঃনিষ্কাশনের নালার প্রান্তে ভিড় করছে। আর এমনই অবস্থা গোট ভেনিজুয়েলাজুড়ে। ভেনিজুয়েলার রাজধানী কারাকাসের ভেতর দিয়ে বয়ে চলা একটি ছোট্ট নদী গুয়েইরা। এতে নগরীর পয়ঃনিষ্কাশনে নালার সব পানি পড়ে। নদীটির পানি কুচকুচে কালো বর্ণের। আর দুর্গন্ধও মারাত্মক। যেখানে নদর্মার পানি গুয়েইরা নদীতে পড়ছে সেখানেই ভিড় করছে লোকজন। আর সেই পানি বড় বড় প্লাস্টিকের বোতলে সংগ্রহ করছে। নদীর পানির তুলনায় নদর্মা বেয়ে আসা ওই পানি অপেক্ষকৃত পরিষ্কার দেখা যাওয়ায় সেই পানিই সংগ্রহ করছেন স্থানীয়রা। সোমবার ওই ভিড়ের মধ্যে লিলিবেথ টেজেডর নামে এক নারী নর্দমার পানি সংগ্রহ করছিলেন। তিনি বলেন, আমি জীবনে কখনও এমন কাণ্ড ঘটতে পর্যন্ত দেখিনি। এটা ভয়ঙ্কর, ভয়ঙ্কর। কম্পিউটার প্রযুক্তি স্টোরে কাজ ২৮ বছরের টেজেডের ‍দুই বছর বয়সের একটি মেয়ে আছে।

এছাড়া নিজের দুই ভাতিজি তার সঙ্গে থাকে। আমাদের এখানে সবচেয়ে বেশি দুর্ভোগে রয়েছে শিশুরা। আপনি কিভাবে একটি শিশুকে বোঝাবেন যে সেখানে কোনো পানি নেই? যদিও ভিড় করা লোকজনের দাবি, এটা নর্দমার পানি নয়। বরং স্থানীয় কর্তৃপক্ষ রিজার্ভার থেকে নালায় পানি ছাড়ছে। তবে যেহেতু এটা নর্দমার নালা দিয়ে আসছে তাই তারা এ পানি শৌচাগার পরিষ্কার করতে ও ঘরের মেঝে মোছার কাজে লাগাবে। ভেনিজুয়েলা জুড়ে চলমান বিদ্যুৎ বিভ্রাটের ফরে যেসব কারণে প্রাণ ওষ্ঠাগত হওয়ার জোগাড় হয়েছে তার অন্যতম হলো পানির অভাব। যুক্তরাষ্ট্রের ষড়যন্ত্রের কারণে এই বিদ্যুৎ বিভ্রাট হচ্ছে বলে অভিযোগ দেশটির প্রেসিডেন্ট নিকোলাস মাদুরোর। অন্যদিকে, বিরোধী পক্ষ এর পেছনে সরকারের দুর্নীতি ও অযোগ্যতাকে দায়ী করছে। কারাকাসে প্রতি সেকেন্ডে প্রায় ২০ হাজার লিটার পানির প্রয়োজন পড়ে বলে জানান প্রকৌশলী হোসে দে ভিয়ানা।

১৯৯০ সাল থেকে তিনি রাজধানীর পৌর পানি কর্তৃপক্ষের প্রধান হিসেবে দায়িত্ব পালন করছেন। তিনি বলেন, গত সপ্তাহে তারা প্রতি সেকেন্ডে প্রায় ১৩ হাজার লিটার পানির যোগান দিতে পেরেছিলেন। কিন্তু বৃহস্পতিবার থেকে বিদ্যুৎ বিভ্রাট শুরু হওয়ার পর সব কিছু বন্ধ হয়ে গেছে। গত বছরের মে মাসে ভেনেজুয়েলায় সাধারণ নির্বাচনে জয়ী হয়ে দ্বিতীয় মেয়াদে রাষ্ট্রপ্রধান হিসেবে শপথ নেন মাদুরো। এর পর এ বছরের জানুয়ারি মাসে গুইদো নিজেকে প্রেসিডেন্ট ঘোষণা দেন। প্রথমে এর সমর্থন করে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র। পরবর্তীতে ইসরাই ও ইউরোপসহ কয়েকটি দেশ গুইদোকে সমর্থন দেয়। এদিকে তুরস্ক, ইরান, রাশিয়াসহ বেশ কয়েকটি দেশ মাদুরোকে সমর্থন দেয়। তারপর থেকেই চরম রাজনৈতিক সংকটের মধ্যে রয়েছে ল্যাটিন আমেরিকার এই দেশটি। বিরোধীরা নির্বাচনে কারচুপির অভিযোগ এনে বিক্ষোভ করে আসছে। আর এই বিক্ষোভের নেতৃত্ব দিচ্ছিলেন বিরোধীদলীয় নেতা হুয়ান গুইদো।

ইনিউজ ৭১/টি.টি. রাকিব