প্রকাশ: ৪ অক্টোবর ২০২৫, ১১:৩৭
যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের ২০ দফার প্রস্তাবে গাজায় সামরিক অভিযান বন্ধের আহ্বানে ইতিবাচক সাড়া দিয়েছে ইসরায়েল। গত সপ্তাহে ট্রাম্প এই নতুন প্রস্তাব পেশ করলে ইসরায়েল তা গ্রহণের সংকেত দেয়। শুক্রবার হামাসও আনুষ্ঠানিকভাবে প্রস্তাবে সম্মতি প্রদান করে বলে হাইকম্যান্ড ভবন থেকে জানানো হয়।
হামাসের বিবৃতিতে বলা হয়েছে, তারা যদি ট্রাম্পের শর্তগুলো মেনে চলে তবে গাজার সব বন্দি মুক্তি দিতে এবং প্রশাসনিক ক্ষমতা হস্তান্তরের জন্য প্রস্তুত। একই সঙ্গে হামাস বলেছে, তারা স্থানীয় শাসন ও মানুষের স্বাভাবিক জীবনে ফেরত দেওয়ার প্রতিশ্রুতি দেবে। এই ঘোষণার পরই প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ট্রুথ সোশ্যালে গণতান্ত্রিকভাবে যুদ্ধবিরতির আহ্বান পুনর্ব্যক্ত করেন।
ট্রাম্পের বার্তা পাওয়ার কয়েক মিনিটের মধ্যে ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রীর দপ্তর থেকে বিবৃতি আসে যে, প্রস্তাবের প্রাথমিক ধাপ বাস্তবায়নের জন্য ইসরায়েল সম্পূর্ণভাবে প্রস্তুত। দপ্তরটি আরও জানায় যে ট্রাম্পের নেতৃত্বাধীন প্রশাসনের সঙ্গে সমন্বয় করে যুদ্ধবিরতি নিশ্চিত করা হবে। তারা এটাও স্পষ্ট করেছে যে নিরাপত্তাজনিত শর্তাবলি পূরণ করা হবে।
বিশ্লেষকরা বলছেন, কাগজে সম্মতি থাকায় এখন বাস্তবায়ন কঠিন চ্যালেঞ্জে পড়বে — নজরদারি, বন্দি-হস্তান্তর ও নিরাপত্তা গ্যারান্টি ইত্যাদি বিষয়ে দুইপক্ষের মধ্যে নিশ্চিততা দরকার। আন্তর্জাতিক মধ্যস্থতাকারী ও পর্যবেক্ষক মিশন না থাকলে বাস্তব স্থায়িত্বের প্রশ্ন উঠবে।
প্রস্তাবটিতে থাকা ২০ দফার মধ্যে কোর প্রতিশ্রুতিগুলো হলো যুদ্ধবিরতি, বন্দি-হস্তান্তর ও স্থানীয় প্রশাসনিক ক্ষমতা হস্তান্তর। তবে এই ধাপগুলোর সময়সূচি ও বাস্তব রূপায়ণকে কেন্দ্র করে এখন অনেক প্রশ্ন রয়ে গেছে। উভয় পক্ষকে কিভাবে পর্যায়ক্রমে শর্তাবলি পূরণ করতে হবে, সেটাই এখন অনুসরণীয় বিষয়।
আঞ্চলিক শক্তিগুলোও এ সিদ্ধান্তকে নিয়ে সতর্ক আশাবাদ প্রকাশ করেছে। কিছু দেশ পর্যবেক্ষণ ও সাহায্যের প্রতিশ্রুতি দিয়েছে, আর কিছু দেশের কূটনৈতিক উদ্যোগ আরও জোরদার করার বিশ্লেষণ দেখা গেছে। আন্তর্জাতিক সম্প্রদায় আশা করছে দ্রুত শান্তি ফেরাতে বাস্তব কর্মসূচি দেখা যাবে।
নাগরিকদের নিরাপত্তা ও জরুরি সাহায্য পৌঁছে দেওয়াও আলোচনার অন্যতম বিষয়। গাজার মানুষ বহু দিনের হতাশা ও ক্ষয়ক্ষতির মুখে থাকায় দ্রুত মানবিক সহায়তা প্রয়োজন। বন্দি পরিবারগুলোও এখন মুক্তির ঘোষণা নিয়ে উদ্বেগ-আশা মিশ্র অনুভব করছে।
অবশেষে বলা যায়, কাগজে সম্মতি আশা জাগালেও বাস্তবে শান্তি প্রতিষ্ঠার জন্য ব্যাপক কূটনীতি, মনিটরিং ও ধাপে ধাপে বিশ্বাসের পুনর্নির্মাণ আবশ্যক। বর্তমান পরিস্থিতিতে দ্রুত কোনো চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত না হওয়া পর্যন্ত বিশ্ববাসীর নজর গাজায় রাখা গুরুত্বপূর্ন।