প্রকাশ: ২২ সেপ্টেম্বর ২০২৫, ১০:৫৮
অবরুদ্ধ ফিলিস্তিনের গাজা উপত্যকায় ইসরাইলি হামলায় প্রতিদিনই বাড়ছে হতাহতের সংখ্যা। গত ২৪ ঘণ্টায় ইসরাইলি হামলায় আরও ৭৫ ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছেন এবং ৩০৪ জন আহত হয়েছেন বলে জানিয়েছে গাজার স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়। এতে ২০২৩ সালের অক্টোবর থেকে শুরু হওয়া ইসরাইলের আগ্রাসনে নিহতের সংখ্যা বেড়ে দাঁড়িয়েছে অন্তত ৬৫ হাজার ২৮৩ জনে এবং আহত হয়েছেন ১ লাখ ৬৬ হাজার ৫৭৫ জন।
স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, গত ২৪ ঘণ্টায় যেসব মৃতদেহ হাসপাতালগুলোতে আনা হয়েছে তার মধ্যে চারজন ধ্বংসস্তূপ থেকে উদ্ধার করা হয়েছে। এখনো বহু মানুষ ধ্বংসস্তূপের নিচে আটকা পড়ে আছেন কিন্তু উদ্ধারকারীরা সেখানে পৌঁছাতে পারছেন না।
মানবিক সহায়তা সংগ্রহের চেষ্টাকালে ইসরাইলি সেনাদের গুলিতে গত ২৪ ঘণ্টায় আরও পাঁচ ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছেন এবং ২৪ জন আহত হয়েছেন। এ নিয়ে সহায়তা সংগ্রহের সময় নিহত ফিলিস্তিনির সংখ্যা দাঁড়িয়েছে ২ হাজার ৫২৩ জনে এবং আহত হয়েছেন ১৮ হাজার ৪৭৩ জনের বেশি।
ক্ষুধা ও অপুষ্টির কারণে গাজায় মৃত্যুর সংখ্যা বেড়েই চলেছে। গত ২৪ ঘণ্টায় ক্ষুধাজনিত কারণে শিশুসহ চারজন মারা গেছেন। এ নিয়ে মোট মৃত্যুর সংখ্যা দাঁড়িয়েছে ৪৪০ জনে যার মধ্যে ১৪৭টি শিশু। খাদ্য নিরাপত্তা বিষয়ক আন্তর্জাতিক সংস্থা আইপিসি গাজায় দুর্ভিক্ষ ঘোষণা করার পর থেকে এখন পর্যন্ত ১৬২ জন মারা গেছেন যার মধ্যে ৩২টি শিশু রয়েছে।
যুদ্ধবিরতি চুক্তি লঙ্ঘন করে গত ১৮ মার্চ থেকে ইসরাইলি সেনারা গাজায় নতুন করে হামলা শুরু করেছে। এতে এখন পর্যন্ত অন্তত ১২ হাজার ৭২৪ জন নিহত হয়েছেন এবং ৫৪ হাজার ৫৩৪ জন আহত হয়েছেন যা মানবিক সংকটকে আরও গভীর করেছে।
জাতিসংঘ ও আন্তর্জাতিক সম্প্রদায় বহুবার গাজায় সামরিক অভিযান বন্ধের আহ্বান জানিয়েছে। তারা ইসরাইলের প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহুকে যুদ্ধবিরতির প্রতিশ্রুতি পালনের আহ্বান জানালেও তা বাস্তবায়ন হয়নি।
এদিকে আন্তর্জাতিক ন্যায়বিচার আদালত (আইসিজে) ইতোমধ্যে ইসরাইলের বিরুদ্ধে গণহত্যার মামলা গ্রহণ করেছে। বিভিন্ন মানবাধিকার সংস্থা ও বিশ্বনেতারা গাজার বেসামরিক মানুষদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করার আহ্বান জানাচ্ছেন।
সবশেষে বলা যায়, গাজায় প্রতিদিনের এই হামলা ও মানবিক সংকট আন্তর্জাতিক মানবাধিকার ও যুদ্ধবিরতি চুক্তির স্পষ্ট লঙ্ঘন। ফিলিস্তিনের মানুষের জীবন রক্ষায় এখনই বিশ্ব সম্প্রদায়ের আরও সক্রিয় ও কার্যকর উদ্যোগ প্রয়োজন বলে মনে করছেন বিশ্লেষকরা।