প্রকাশ: ৯ সেপ্টেম্বর ২০২৫, ১১:১৮
গাজা উপত্যকার উত্তরাঞ্চলে নতুন করে তীব্র সংঘর্ষের ঘটনায় আরও চারজন ইসরায়েলি সেনা নিহত হয়েছে। সোমবার দেশটির সেনাবাহিনী এক বিবৃতিতে এই তথ্য নিশ্চিত করেছে। নিহত সেনারা সবাই ৪০১তম সাঁজোয়া ব্রিগেডের ৫২তম ব্যাটালিয়নের সদস্য ছিলেন। দীর্ঘদিন ধরে গাজায় চলমান সংঘর্ষে এ ব্যাটালিয়ন বারবার হামলার মুখে পড়ছে।
ইসরায়েলি সংবাদমাধ্যম ইয়েদিওথ আহরোনোথ জানিয়েছে, গাজা সিটির একটি সুরক্ষিত সামরিক অবস্থানে হামাসের আকস্মিক আক্রমণে এ হতাহতের ঘটনা ঘটে। হামলার সময় সেনারা ওই স্থানে মোতায়েন ছিলেন এবং হঠাৎ গুলিবর্ষণ ও বিস্ফোরণে চারজন প্রাণ হারান। এ ঘটনায় আহতদের মধ্যে কয়েকজনের অবস্থা গুরুতর বলে জানা গেছে।
সেনাবাহিনীর পরিসংখ্যান অনুযায়ী, সর্বশেষ এই চার সেনার মৃত্যুর পর থেকে ২০২৩ সালের অক্টোবর থেকে এখন পর্যন্ত গাজায় নিহত ইসরায়েলি সেনার সংখ্যা দাঁড়িয়েছে ৯০৪ জনে। ক্রমবর্ধমান এই প্রাণহানি ইসরায়েলের ভেতরে নানা ধরনের প্রশ্ন ও সমালোচনার জন্ম দিয়েছে।
গাজার ভেতরে প্রতিদিনই তীব্র লড়াই চলছে। হামাস এবং অন্যান্য ফিলিস্তিনি প্রতিরোধ যোদ্ধারা বিভিন্ন কৌশলগত হামলা চালাচ্ছে। এর মধ্যে টানেল ব্যবহার, হঠাৎ আক্রমণ ও দূরপাল্লার গোলাবর্ষণ অন্যতম। এসব কৌশল ইসরায়েলি সেনাদের জন্য নতুন চ্যালেঞ্জ তৈরি করছে।
অন্যদিকে ইসরায়েলি সেনারা এখনো গাজা সিটির নিয়ন্ত্রণ পুরোপুরি নিজেদের হাতে নিতে পরিকল্পনা বাস্তবায়ন করছে। তাদের দাবি, হামাসকে দুর্বল করতে হলে রাজধানীসদৃশ এই অঞ্চলের পূর্ণ নিয়ন্ত্রণ নেওয়া জরুরি। তবে সেখানে প্রতিরোধের মুখে প্রতিনিয়ত বড় ধরনের ক্ষয়ক্ষতির শিকার হচ্ছে তারা।
বিশ্লেষকরা বলছেন, গাজার প্রতিটি সংঘর্ষই ইসরায়েলি সেনাদের জন্য কঠিন হয়ে উঠছে। স্থানীয়দের সমর্থন ও প্রতিরোধ শক্তির কারণে ইসরায়েল সহজে লক্ষ্য পূরণ করতে পারছে না। এর ফলে সামরিক অভিযানের সময়সীমা দীর্ঘায়িত হচ্ছে এবং প্রাণহানির সংখ্যা ক্রমেই বাড়ছে।
এদিকে আন্তর্জাতিক অঙ্গনেও এ যুদ্ধ নিয়ে উদ্বেগ বাড়ছে। মানবাধিকার সংস্থাগুলো বলছে, গাজায় তীব্র সংঘর্ষের কারণে সাধারণ মানুষ মারাত্মক ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে এবং যুদ্ধ পরিস্থিতি ক্রমশ ভয়াবহ হয়ে উঠছে। তবে ইসরায়েল তাদের অবস্থান থেকে সরে আসতে রাজি নয়।
সবশেষে বলা যায়, গাজা উপত্যকায় চলমান এ সংঘর্ষ এখন নতুন মাত্রা পেয়েছে। প্রতিদিনই বাড়ছে হতাহতের সংখ্যা। তবুও তেল আবিবের ঘোষণা অনুযায়ী, গাজা সিটি পুরোপুরি দখলে নিতে তারা দৃঢ় প্রতিজ্ঞ।