প্রকাশ: ৮ সেপ্টেম্বর ২০২৫, ১০:৫৬
ফিলিস্তিনের গাজা সিটিতে ইসরাইলি বাহিনী হামলা জোরদার করেছে। সোমবার একদিনে অন্তত ৬৫ জন নিহত হওয়ার খবর পাওয়া গেছে। শহরের আরেকটি বহুতল ভবন ধ্বংস করেছে দখলদার বাহিনী, যা গাজার সিটিতে ইসরাইলি হামলার ধ্বংসযজ্ঞকে আরও তীব্র করেছে।
ফিলিস্তিনি সিভিল ডিফেন্স জানিয়েছে, গাজার শহরে এখন পর্যন্ত অন্তত ৫০টি ভবন ধ্বংস করা হয়েছে। আল-রুয়া টাওয়ারে হামলার পাশাপাশি রোববার গাজার উত্তরাঞ্চলের অন্তত ৪৯ জন নিহত হয়েছেন। ইসরাইলি সেনারা দাবি করছেন, তারা বাসিন্দাদের সরিয়ে দেওয়ার পর ওই ভবনগুলোতে হামলা চালিয়েছে।
হামলার ফলে চারপাশে অস্থায়ী তাঁবুতে আশ্রয় নেওয়া পরিবারগুলোও নিরাপদ স্থানে পালিয়ে যায়। ফিলিস্তিনি এনজিও নেটওয়ার্কের প্রধান আমজাদ শাওয়া জানান, পরিস্থিতি ভয়ঙ্কর এবং শত শত পরিবার আশ্রয় হারিয়েছে। তিনি বলেন, দক্ষিণে সরানো হলেও সেখানে কোনো নিরাপদ স্থান নেই।
ইসরাইলি প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু দাবি করেছেন, সেনারা ‘সন্ত্রাসী অবকাঠামো এবং সন্ত্রাসীদের উচ্চ ভবন’ ধ্বংস করছে। তবে আল-রুয়া টাওয়ার ছিল পাঁচতলা বিশিষ্ট, যেখানে ২৪টি অ্যাপার্টমেন্ট, দোকান, একটি ক্লিনিক ও জিম ছিল। এর আগে ইসরাইল আল জাজিরা ক্লাব এলাকায় হামলা চালায়, যেখানে তাঁবুতে আশ্রয় নেওয়া পরিবারও ক্ষতিগ্রস্ত হয়।
পূর্ববর্তী হামলায়, গত শনিবার সউসি টাওয়ার (১৫ তলা) এবং গত শুক্রবার মুশতাহা টাওয়ার (১২ তলা) ধ্বংসের ফলে বহু পরিবার আশ্রয় হারিয়েছে এবং গুরুতর আহত হয়েছেন। ধ্বংসের সময় এক পরিবার জানিয়েছে, ‘আমাদের আর কিছুই অবশিষ্ট নেই, আধা ঘণ্টার মধ্যে পুরো ভবন গুঁড়িয়ে দেওয়া হয়েছে।’
আগস্টে ইসরাইলি নিরাপত্তা মন্ত্রিসভা গাজা সিটি দখলের পরিকল্পনা অনুমোদন করে। নেতানিয়াহুর এই পদক্ষেপে ইতোমধ্যেই প্রায় ১ লাখ ফিলিস্তিনি বাস্তুচ্যুত হয়েছে। হামলার ফলে শহরের অবকাঠামোগত ক্ষয়ক্ষতি এবং সাধারণ মানুষের জীবনযাত্রা বিপর্যস্ত হয়েছে।
ফিলিস্তিনি ও আন্তর্জাতিক পর্যবেক্ষকরা হামলার কারণে মানবিক সংকট এবং শরণার্থী সমস্যার তীব্রতা বৃদ্ধি পেয়েছে বলেও সতর্ক করেছেন। পরিস্থিতি সামাল দিতে ত্রাণ কার্যক্রম ও আন্তর্জাতিক সাহায্যের প্রয়োজনীয়তা আরও প্রকট হয়েছে।
এই হামলা গাজা সিটিতে বাসিন্দাদের জন্য এক গভীর মানবিক সংকটের সৃষ্টি করেছে, যেখানে নিরাপদ আশ্রয়, খাদ্য ও চিকিৎসা সরবরাহের তীব্র অভাব দেখা দিয়েছে। পরিস্থিতি ক্রমেই সংবেদনশীল হয়ে উঠছে এবং বিশ্ব সম্প্রদায়ের মনোযোগ আকর্ষণ করছে।