প্রকাশ: ৯ সেপ্টেম্বর ২০২৫, ১৬:২৬
খাগড়াছড়িতে পার্বত্য চট্টগ্রাম নাগরিক পরিষদ মঙ্গলবার সকালে পাকুয়াখালী হত্যাকাণ্ডের বিচার দাবিতে মানববন্ধন, প্রতিবাদ সমাবেশ ও বিক্ষোভের আয়োজন করে। ১৯৯৬ সালের ৯ সেপ্টেম্বর রাঙামাটির লংগদু উপজেলার পাকুয়াখালীতে ৩৫ জন বাঙালি কাঠুরিয়ার হত্যাকাণ্ড দীর্ঘ তিন দশকেও বিচার হয়নি বলে তারা অভিযোগ করেন।
বিক্ষোভ ও সমাবেশে শহরের গুরুত্বপূর্ণ সড়ক প্রদক্ষিণ শেষে শাপলা চত্বরে মিলিত হন সংগঠনের নেতাকর্মীরা। জেলা সভাপতি ইঞ্জিনিয়ার মো. লোকমান হোসেনের সভাপতিত্বে আয়োজিত সমাবেশে প্রধান অতিথি ছিলেন কেন্দ্রীয় মহাসচিব মো. আলমগীর কবির। এছাড়া বক্তব্য রাখেন জেলা সাধারণ সম্পাদক মো. এস. এম. মাসুদ রানা, সহ-সভাপতি জাহিদ হাসান, পার্বত্য চট্টগ্রাম ছাত্র পরিষদের জেলা সভাপতি মো. সোহেল রানা এবং কলেজ শাখার সাধারণ সম্পাদক মো. শামীম আহমেদ।
বক্তারা বলেন, পাকুয়াখালী হত্যাকাণ্ড পার্বত্য অঞ্চলের ইতিহাসে এক ভয়াবহ অধ্যায় হলেও এ পর্যন্ত এর বিচার হয়নি। তারা দাবি করেন, ঘটনার সাথে জড়িত সন্তু লারমাসহ সকল দায়ীদের বিচারের আওতায় আনা হোক। পাশাপাশি ইউপিডিএফ, জেএসএস, কেএনএফসহ পার্বত্য অঞ্চলের সশস্ত্র সংগঠনগুলোর খুন, গুম, চাঁদাবাজি ও সন্ত্রাস বন্ধের দাবি জানান।
বক্তারা আরও বলেন, গণমাধ্যম সংস্কার কমিশনের প্রতিবেদনে ‘আদিবাসী’ শব্দ ব্যবহারের তীব্র সমালোচনা করা হয়েছে। সংবিধান অনুযায়ী পার্বত্য চট্টগ্রামের জনগণ ক্ষুদ্র নৃগোষ্ঠী হিসেবে স্বীকৃত। তারা উল্লেখ করেন, ‘আদিবাসী’ শব্দ ব্যবহার করে রাষ্ট্রবিরোধী ষড়যন্ত্র চালানো হচ্ছে, যা কোনোভাবেই গ্রহণযোগ্য নয়।
সমাবেশে অংশগ্রহণকারীরা বলেন, বিচারহীনতার কারণে পার্বত্য চট্টগ্রামের মানুষ এখনও আতঙ্ক ও অসহায়তার মধ্যে রয়েছে। নিহত পরিবারগুলো দীর্ঘদিন ধরে ন্যায্য বিচার পাওয়ার জন্য অধীর আগ্রহে অপেক্ষা করছে।
সমাবেশ শেষে নাগরিক পরিষদের বিক্ষোভকারীরা শাপলা চত্বরে কমিশনের প্রধান ও সদস্যদের কুশপুত্তলিকা দাহ করে তাদের প্রতিবাদ জানান। বিক্ষোভ শেষে শান্তিপূর্ণভাবে কর্মসূচি সমাপ্ত হয়।
এই বিক্ষোভ পার্বত্য চট্টগ্রামে নাগরিক অধিকার ও ন্যায়বিচারের দাবি জানাতে একটি গুরুত্বপূর্ণ পদক্ষেপ হিসেবে উল্লেখ করা হয়। সংগঠনটি আশ্বস্ত করেছে যে, তারা প্রতিনিয়ত নাগরিক ও মানবাধিকার রক্ষায় সজাগ থাকবে।