প্রকাশ: ২৫ জুন ২০২৫, ১৭:১০
বাংলাদেশে পাচারের উদ্দেশ্যেই ভারত ফেনসিডিল উৎপাদন করে বলে মন্তব্য করেছেন অন্তর্বর্তী সরকারের স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা লেফটেন্যান্ট জেনারেল (অব.) জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরী। বুধবার সচিবালয়ে এক অনুষ্ঠানের পর সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে তিনি এ মন্তব্য করেন। তার মতে, দেশের প্রধান দুই মাদক প্রবেশপথ হচ্ছে ভারতের সীমান্ত দিয়ে ফেনসিডিল এবং মিয়ানমার সীমান্ত দিয়ে ইয়াবা। এই দুটি পথ দিয়েই বিপুল পরিমাণে মাদক বাংলাদেশে প্রবেশ করছে।
তিনি বলেন, ফেনসিডিল ও ইয়াবা বাংলাদেশে যুব সমাজকে বিপথে ঠেলে দিচ্ছে। ভারত মাদক উৎপাদন করে সরাসরি বাংলাদেশের বাজারকে লক্ষ্য করে এবং মিয়ানমার ইয়াবা সরবরাহের ক্ষেত্রে অন্যতম উৎস হয়ে দাঁড়িয়েছে। এই দুই প্রতিবেশী দেশের মাধ্যমে মাদকের যে প্রবাহ চলছে, তা বন্ধ করা অত্যন্ত জরুরি।
স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা জানান, সরকারের পক্ষ থেকে মাদক নির্মূলে কূটনৈতিক পর্যায়ে উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। ভারতের সঙ্গে একাধিকবার বৈঠক হয়েছে যাতে সীমান্তে কড়া নজরদারি ও মাদক কারবারিদের বিরুদ্ধে যৌথ অভিযান চালানো যায়। একইভাবে মিয়ানমারের সঙ্গেও কূটনৈতিক চ্যানেলে যোগাযোগ রাখা হচ্ছে, যদিও দেশটির রাজনৈতিক অস্থিতিশীলতার কারণে কাজ এগোচ্ছে ধীরগতিতে।
তিনি বলেন, মাদক প্রবাহ বন্ধে সীমান্ত রক্ষী বাহিনী, র্যাব, পুলিশসহ সংশ্লিষ্ট আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর তৎপরতা বৃদ্ধি করা হয়েছে। মাদক কারবারে জড়িতদের বিরুদ্ধে শিগগিরই আরও কঠোর ব্যবস্থা নেওয়া হবে। এছাড়া মাদক চোরাচালানের রুট বন্ধ করতে সীমান্ত অঞ্চলে নজরদারি প্রযুক্তি, ড্রোন এবং থার্মাল ক্যামেরা স্থাপন করা হচ্ছে।
জেনারেল জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরী আরও বলেন, দেশে দুর্নীতি এবং মাদক এই দুই সমস্যাই এখনও নিয়ন্ত্রণের বাইরে। তবে সরকার এ দুটির বিরুদ্ধে জিরো টলারেন্স নীতিতে কাজ করছে। তিনি জানান, শুধু আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীর তৎপরতা যথেষ্ট নয়, মাদকের বিরুদ্ধে সামাজিক প্রতিরোধও গড়ে তুলতে হবে।
তিনি দেশবাসীকে আহ্বান জানান, নিজেদের পরিবার, সমাজ এবং ভবিষ্যৎ প্রজন্মকে মাদকের অভিশাপ থেকে রক্ষা করতে সবাইকে সচেতন হয়ে এগিয়ে আসতে হবে। তা না হলে শুধু আইন প্রয়োগ করে এই জাতীয় দুর্যোগ মোকাবিলা সম্ভব নয়।
সবশেষে তিনি বলেন, মাদক নির্মূল একটি জাতীয় সংকল্পের বিষয় এবং এই যুদ্ধে সবাইকে একযোগে কাজ করতে হবে। না হলে একটি প্রজন্ম ধ্বংস হয়ে যাবে এবং দেশের উন্নয়ন ব্যাহত হবে।
মেটা কী-ওয়ার্ডস: