প্রকাশ: ২৫ জুন ২০২৫, ১১:৩০
দখলদার ইসরায়েলের সঙ্গে চলমান উত্তেজনার মধ্যে ইসলামিক বিপ্লবী গার্ডের এলিট শাখা কুদস ফোর্সের প্রধান জেনারেল ইসমাইল কানি নিহত হয়েছেন—এমন খবর প্রকাশ করে আলোচনার ঝড় তোলে মার্কিন সংবাদমাধ্যম নিউইয়র্ক টাইমস। তবে সেই খবরের সত্যতা নিয়ে প্রশ্ন দেখা দিয়েছে যখন মঙ্গলবার তেহরানে সরকারপন্থি একটি জনসভায় সরাসরি অংশ নিতে দেখা যায় এই শীর্ষ ইরানি কমান্ডারকে।
প্রত্যক্ষদর্শীদের ধারণ করা ছবিতে দেখা যায়, জেনারেল কানি হাসিমুখে সাধারণ মানুষের সঙ্গে কথা বলছেন ও হাত মিলাচ্ছেন। এই ছবি ও ভিডিও স্থানীয় ও আঞ্চলিক সংবাদমাধ্যমে প্রকাশিত হয়, যার মধ্যে রয়েছে হুতি বিদ্রোহীদের আল মাসিরাহ টিভি ও ইরানের সরকারপন্থি গণমাধ্যমগুলো।
কাতারভিত্তিক আলজাজিরা জানিয়েছে, এ ঘটনায় নিউইয়র্ক টাইমসের প্রতিবেদন নিয়ে বিতর্ক তৈরি হয়েছে। কারণ, ইসরায়েলি সেনাবাহিনীর পক্ষ থেকেও ইসমাইল কানির মৃত্যুর বিষয়ে কোনো আনুষ্ঠানিক বিবৃতি দেওয়া হয়নি। ইসরায়েলি সংবাদমাধ্যম টাইমস অব ইসরায়েলও এমন কোনো দাবি করেনি।
এর আগেও গত বছরের অক্টোবর মাসে কুদস ফোর্সের প্রধানকে ঘিরে অনুরূপ গুজব ছড়ায়। লেবাননের রাজধানী বৈরুতে ইসরায়েলি বিমান হামলায় হিজবুল্লাহর সাবেক প্রধান হাসিম সাইফুদ্দিন নিহত হন। তখন গুঞ্জন ওঠে, তার সঙ্গে কানি ছিলেন এবং তিনিও প্রাণ হারান। তবে সেই তথ্যও পরে মিথ্যা প্রমাণিত হয়।
ইসমাইল ক্বানী ২০২০ সালে কাসেম সোলেমানির মৃত্যুর পর কুদস ফোর্সের নেতৃত্ব গ্রহণ করেন। সোলেমানি বাগদাদে এক মার্কিন ড্রোন হামলায় নিহত হন, যা মধ্যপ্রাচ্যে উত্তেজনার নতুন অধ্যায় তৈরি করে। কুদস ফোর্স মূলত ইরানের বাইরের অঞ্চলে গোপন ও সামরিক কর্মকাণ্ড পরিচালনা করে থাকে।
এই বাহিনী হামাস, হিজবুল্লাহ ও হুতি বিদ্রোহীদের দীর্ঘদিন ধরে সহায়তা করে আসছে। ফলে ইসরায়েলের সঙ্গে সাম্প্রতিক যুদ্ধ পরিস্থিতিতে কুদস ফোর্সের ভুমিকা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ বলে মনে করছেন বিশ্লেষকরা।
জেনারেল কানির জীবিত থাকার বিষয়টি প্রকাশ পাওয়ার পর ইরানপন্থি গোষ্ঠীগুলো এটিকে নিজেদের মনোবলের বড় অর্জন হিসেবে দেখছে। বিশেষ করে এমন সময়ে যখন ইরান ও ইসরায়েলের সংঘর্ষ আঞ্চলিক রাজনীতিতে ব্যাপক প্রভাব ফেলছে।
এই ঘটনা আবারও দেখিয়ে দিলো, যুদ্ধের সময় তথ্য বিভ্রান্তি কতটা দ্রুত ছড়িয়ে পড়ে এবং একে প্রতিরোধ করাও কতটা গুরুত্বপূর্ণ। মধ্যপ্রাচ্যের এই নতুন উত্তেজনায় সব পক্ষই এখন প্রচারের লড়াইতেও সরব হয়ে উঠেছে।