প্রকাশ: ২৪ জুন ২০২৫, ১১:৪৭
কোনো ট্যাগ পাওয়া যায়নি
গত শনিবার ইরানের তিনটি গুরুত্বপূর্ণ পারমাণবিক স্থাপনায় যুক্তরাষ্ট্রের সরাসরি হামলার পর মধ্যপ্রাচ্যে নতুন করে অস্থিরতা শুরু হয়। ইসরাইল-ইরান চলমান সংঘাতের এই প্রেক্ষাপটে যুক্তরাষ্ট্রের এই হামলা ইরানজুড়ে চরম ক্ষোভ সৃষ্টি করে। এর জবাবে ইরান মধ্যপ্রাচ্যের বিভিন্ন মার্কিন ঘাঁটিতে পাল্টা হামলা চালায়।
এই টানটান উত্তেজনার মধ্যেই সোমবার রাতে মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প ঘোষণা দেন, ইরান ও ইসরাইল একটি ‘পর্যায়ক্রমিক’ যুদ্ধবিরতিতে সম্মত হয়েছে। ট্রাম্প বলেন, এটি দ্বিপক্ষীয় দ্বন্দ্বের আনুষ্ঠানিক অবসান ঘটাবে। তবে ঘোষণার ঠিক পরেই তেহরানে রাতভর ইসরাইলের হামলার খবর পাওয়া যায়।
ইরান এই হামলার জবাবে মঙ্গলবার সকাল পর্যন্ত অন্তত তিন দফায় ইসরাইলে ক্ষেপণাস্ত্র নিক্ষেপ করে। ইসরাইলি সংবাদমাধ্যম জানায়, এতে এখন পর্যন্ত তিনজন নিহত এবং বেশ কয়েকজন আহত হয়েছে।
ট্রাম্প নিজের সোশ্যাল প্ল্যাটফর্ম ট্রুথ স্যোশালে লেখেন, ইসরাইল ও ইরান একটি পূর্ণ যুদ্ধবিরতিতে পৌঁছেছে। যুদ্ধবিরতি শুরু হবে বাংলাদেশ সময় মঙ্গলবার সকাল ১০টা থেকে, যা ২৪ ঘণ্টার মধ্যে ধাপে ধাপে কার্যকর হবে।
তিনি জানান, প্রথমে ইরান একতরফাভাবে হামলা বন্ধ করবে এবং এরপর ১২ ঘণ্টা পর ইসরাইলও একই পথে চলবে। ২৪ ঘণ্টা শেষে দুই পক্ষের সম্মতিতে যুদ্ধের সমাপ্তি ঘোষণা করা হবে বলে জানান তিনি।
তবে, ইরানের পররাষ্ট্রমন্ত্রী আব্বাস আরাগচি বলেন, এখনও যুদ্ধবিরতি বিষয়ে কোনো চুক্তি হয়নি। তিনি শর্ত দেন, ইসরাইল যদি মঙ্গলবার ভোর ৪টার মধ্যে হামলা বন্ধ না করে, তাহলে ইরানও পাল্টা হামলা চালিয়ে যাবে।
এই অবস্থায় সোমবার রাতেই তেহরানে ও তার আশপাশে ব্যাপক বিস্ফোরণের শব্দ শোনা যায়, যা যুদ্ধের পর সবচেয়ে বড় হামলা হিসেবে উল্লেখ করেছে সাংবাদিকেরা।
বিশ্বনেতারা যুদ্ধের সম্ভাবনা নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করছিলেন অনেকদিন ধরেই। যুদ্ধবিরতির ঘোষণা স্বস্তির বার্তা বয়ে আনলেও বাস্তব পরিস্থিতিতে যুদ্ধ থেমেছে—এমন নিশ্চয়তা এখনো কেউ দিতে পারছে না।
এদিকে ইরান দাবি করেছে, যুক্তরাষ্ট্রের হামলার পাল্টা জবাব হিসেবে তারা কাতারে অবস্থিত মার্কিন ঘাঁটি আল উদেইদে ছয়টি ক্ষেপণাস্ত্র ছুড়েছে। যুক্তরাষ্ট্র এটিকে ‘দুর্বল হামলা’ বলে দাবি করলেও কাতার সরকার একে ‘স্পষ্ট আগ্রাসন’ বলে আখ্যা দেয়।
‘ইন্টারন্যাশনাল ক্রাইসিস গ্রুপ’-এর উপদেষ্টা আলি ভায়েজ মনে করেন, হামলাগুলো এভাবে চালানো হয়েছে যাতে হতাহতের ঘটনা না ঘটে এবং আলোচনার দরজা খোলা থাকে। যদিও বিশ্লেষকরা বলছেন, উত্তেজনার আগুনে এখনো ঘি পড়েই চলেছে।