প্রকাশ: ১৮ জুন ২০২৫, ১৯:১৮
মধ্যপ্রাচ্যের চলমান উত্তেজনার মাঝে নতুন মাত্রা যোগ হয়েছে ইরানের সাম্প্রতিক সামরিক ঘোষণায়, যেখানে দেশটি দাবি করেছে যে, গত ২৪ ঘণ্টায় তারা ইসরাইলি বিমান বাহিনীর ২৮টি আকাশযান ভূপাতিত করেছে। এই ঘোষণাটি এসেছে এমন এক সময়ে, যখন ইরান ও ইসরাইল সরাসরি সামরিক সংঘাতে জড়িয়ে পড়েছে এবং যুক্তরাষ্ট্রের সম্পৃক্ততা নিয়ে আন্তর্জাতিক অঙ্গনে আলোচনা তীব্র হয়ে উঠেছে। ইরানের রাষ্ট্রায়ত্ত সংবাদ সংস্থা ও সামরিক সূত্র জানিয়েছে, ধ্বংস করা আকাশযানগুলোর মধ্যে হার্মেস সিরিজের নজরদারি ড্রোন, এফ-১৬ ও এফ-৩৫ যুদ্ধবিমান এবং বিশেষ মিশনের ইলেকট্রনিক ওয়ারফেয়ার প্ল্যাটফর্ম রয়েছে। যদিও এ দাবিগুলো নিরপেক্ষভাবে যাচাই করা যায়নি, তবুও তেহরানের এ বক্তব্য বিশ্ব রাজনীতিতে তীব্র প্রতিক্রিয়া সৃষ্টি করেছে।
ইরান বলছে, তাদের বাভার-৩৭৩, খোরদাদ-১৫ এবং সাইয়েদ ক্ষেপণাস্ত্র প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা এসব আকাশযান ভূপাতিত করতে সক্ষম হয়েছে, যা তাদের প্রতিরক্ষা সক্ষমতার এক বড় প্রদর্শনী। এই ঘটনার মাধ্যমে ইসরাইলের উপর মনস্তাত্ত্বিক চাপ সৃষ্টি এবং যুক্তরাষ্ট্রকে সরাসরি অবস্থান নিতে বাধ্য করার কৌশলও পরিলক্ষিত হচ্ছে। ইরান এমন একটি সময়ে এই ধরনের ঘোষণা দিল যখন ইসরাইল নিজেই জানিয়েছিল তারা ইরানে ৬০টির বেশি বিমান হামলা চালিয়েছে, ফলে পরিস্থিতি আরও জটিল ও দুঃসাহসিক হয়ে উঠেছে।
তবে আন্তর্জাতিক প্রতিরক্ষা বিশ্লেষকরা এই সংখ্যা নিয়ে সন্দেহ প্রকাশ করেছেন। তাদের মতে, কিছু ড্রোন কিংবা তথ্য সংগ্রহকারী ছোট আকারের আকাশযান ধ্বংস করা হয়েছে, যা যুদ্ধবিমান হিসেবে গণ্য করা ঠিক নয়। সেইসঙ্গে ইরানের প্রচারযুদ্ধ এবং মনস্তাত্ত্বিক কৌশলের বিষয়টিও তারা গুরুত্ব দিয়ে দেখছেন।
এছাড়া এই পরিস্থিতিতে ইসরাইল সামরিক কৌশলে পরিবর্তন আনতে পারে এবং বৃহৎ পাল্টা জবাবও দিতে পারে। একইসঙ্গে মার্কিন প্রশাসনের ওপর চাপ বাড়বে এবং তারা সরাসরি হস্তক্ষেপ করবে কিনা, তা আগামী দিনের ঘটনাপ্রবাহ নির্ধারণ করবে। ইরানের এই ঘোষণা আংশিক সত্য হলেও, এটি বিশ্বকে এক স্পষ্ট বার্তা দিচ্ছে—তেহরান প্রস্তুত, এবং আকাশপথে ইসরাইলও নিরাপদ নয়।