প্রকাশ: ১৭ জুন ২০২৫, ২০:৫
ইরান ও ইসরায়েলের মধ্যে চলমান উত্তেজনার পটভূমিতে কাতারের রাজধানী দোহায় এক সংবাদ সম্মেলনে কথা বলেছেন কাতার পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র মাজেদ আল-আনসারি। তিনি ইরানের পারমাণবিক স্থাপনার ওপর ইসরায়েলের হামলার ব্যাপারে তীব্র নিন্দা প্রকাশ করেন এবং এ ধরনের হামলার ভয়াবহ ফলাফল হতে পারে বলেও উল্লেখ করেন। মাজেদ আল-আনসারি এই হামলাকে ‘‘অবিবেচনাপ্রসূত পদক্ষেপ’’ হিসেবে আখ্যায়িত করেন যা আঞ্চলিক শান্তি প্রক্রিয়াকে মারাত্মকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত করবে। তিনি বলেন, এই হামলার সময় নির্বাচিত হওয়ায় তা আরও বেশি সমস্যা সৃষ্টি করতে পারে কারণ ইরান তখন ওয়াশিংটনের সঙ্গে কূটনৈতিক আলোচনায় এগিয়ে যাচ্ছিল। তিনি জানান, ওই আলোচনায় আঞ্চলিক অনেক দেশের অংশগ্রহণ ছিল, যা শান্তির জন্য একটি ইতিবাচক সংকেত ছিল।
মাজেদ আল-আনসারি আরও বলেন, কাতার এখনো যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে মধ্যস্থতায় সক্রিয় এবং একটি শান্তি চুক্তি হওয়ার ব্যাপারে দোহার আশাবাদী। তিনি আশা প্রকাশ করেন যে এই সংলাপ অব্যাহত থাকবে এবং উত্তেজনা কমে যাবে। তিনি ইসরায়েল ও ইরানের মধ্যে সহিংসতা বন্ধের জন্য শান্তিপূর্ণ পথ অনুসরণের আহ্বান জানান। একই সঙ্গে তিনি বলছেন, চলমান এই সংঘর্ষ ও উত্তেজনা আঞ্চলিক স্থিতিশীলতাকে নষ্ট করছে এবং সকল পক্ষের উচিত অবিলম্বে সহিংসতা পরিহার করা।
দোহায় অনুষ্ঠিত সংবাদ সম্মেলনে মাজেদ আল-আনসারি পুনরায় স্পষ্ট করেন যে, কাতার যুদ্ধবিরতি প্রতিষ্ঠায় মধ্যস্থতার কাজ চালিয়ে যাচ্ছে এবং আশা করছে, ভবিষ্যতে একটি স্থায়ী সমাধান আসতে পারে। তিনি ইরান ও ইসরায়েলের মধ্যে সাম্প্রতিক উত্তেজনা নিরসনে আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের সহযোগিতাও জরুরি উল্লেখ করেন।
ইরান ও ইসরায়েলের মধ্যে সাম্প্রতিক কালে উত্তেজনা ও সামরিক সংঘাত বাড়লেও, কাতারের মতো মধ্যস্থতাকারী দেশ শান্তিপূর্ণ সমাধানের ওপর জোর দিয়ে আসছে। মাজেদ আল-আনসারির বক্তব্য ইঙ্গিত দেয় যে, আঞ্চলিক ও বৈশ্বিক শান্তি প্রতিষ্ঠায় কূটনৈতিক পথ অব্যাহত রাখতে হবে। তিনি সবাইকে আহ্বান জানিয়েছেন যে, বর্তমান সংকট থেকে উত্তরণের জন্য সহিংসতা এড়িয়ে কূটনৈতিক আলোচনা বেছে নিতে হবে।
আন্তর্জাতিক পর্যবেক্ষকরা মনে করছেন, কাতারের এই ভূমিকা সাম্প্রতিক সময়ে মধ্যপ্রাচ্যের জন্য একটি ইতিবাচক বার্তা বহন করে। এর মাধ্যমে তারা আঞ্চলিক নিরাপত্তা ও স্থিতিশীলতার জন্য দায়িত্বশীল পদক্ষেপ গ্রহণের চেষ্টা করছে। এই পরিস্থিতিতে কাতারের মধ্যস্থতায় ইরান ও ইসরায়েলের মধ্যে উত্তেজনা কমাতে পারলে তা গোটা অঞ্চলের জন্য শান্তির দিক নির্দেশক হতে পারে।