প্রকাশ: ১৩ জুন ২০২৫, ১১:১২
ইরানের রাজধানী তেহরানসহ আশপাশের গুরুত্বপূর্ণ এলাকায় একযোগে ভয়াবহ বিমান হামলা চালিয়েছে ইসরায়েল। বৃহস্পতিবার গভীর রাতে চালানো এই আক্রমণে লক্ষ্যবস্তু ছিল দেশটির সামরিক ও পারমাণবিক স্থাপনাগুলো, যার মধ্যে ছিল ইসলামিক রেভল্যুশনারি গার্ডস (আইআরজিসি)-এর সদর দপ্তরও।
এই হামলার সবচেয়ে বড় ঘটনা হচ্ছে আইআরজিসি প্রধান জেনারেল হোসেইন সালামির নিহত হওয়া। ইরানের রাষ্ট্রায়ত্ত টেলিভিশন ও সংবাদ সংস্থাগুলো শুক্রবার সকালে আনুষ্ঠানিকভাবে তার মৃত্যুর খবর নিশ্চিত করে। হামলার সময় তিনি সদর দপ্তরে উপস্থিত ছিলেন বলে জানানো হয়।
জেনারেল সালামি ২০১৯ সাল থেকে আইআরজিসির কমান্ডার-ইন-চিফ হিসেবে দায়িত্ব পালন করছিলেন। ইরানের সামরিক কৌশল ও পরমাণু পরিকল্পনায় তার ছিল সরাসরি সম্পৃক্ততা। ইরাক, সিরিয়া ও লেবাননে ইরানের প্রভাব বিস্তারে তার ভূমিকা ছিল অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।
হামলার খবর ছড়িয়ে পড়ার পর ইরানজুড়ে শুরু হয় প্রতিক্রিয়া। দেশটির সেনাবাহিনী এবং রেভল্যুশনারি গার্ডস তার মৃত্যুকে "শহিদী মৃত্যু" হিসেবে আখ্যা দিয়ে প্রতিশোধ নেওয়ার হুঁশিয়ারি দিয়েছে। রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা বলছেন, এই হামলা মধ্যপ্রাচ্যে নতুন করে উত্তেজনা সৃষ্টি করতে পারে।
সিএনএন ও রয়টার্স জানিয়েছে, এই হামলার মাধ্যমে ইসরায়েল সরাসরি ইরানের সামরিক ক্ষমতার কেন্দ্রবিন্দুতে আঘাত করেছে। বিশেষ করে পারমাণবিক কর্মসূচির সঙ্গে যুক্ত গুরুত্বপূর্ণ স্থাপনাগুলো এই হামলার টার্গেটে ছিল।
ঘটনার পরপরই তেহরানে ধোঁয়ার কুণ্ডলী ও আগুনের দৃশ্য ছড়িয়ে পড়ে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে। স্থানীয় সংবাদমাধ্যমগুলো জানিয়েছে, বিস্ফোরণের শব্দে কেঁপে ওঠে তেহরান শহর এবং সাধারণ মানুষের মধ্যে চরম আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়ে।
বিশ্লেষকরা মনে করছেন, ইরানের অভ্যন্তরীণ রাজনীতি, পরমাণু কৌশল ও আঞ্চলিক শক্তির ভারসাম্যে এই হত্যাকাণ্ডের প্রভাব দীর্ঘস্থায়ী হতে পারে। বিশেষজ্ঞদের মতে, জেনারেল সালামির মৃত্যুর মধ্য দিয়ে ইসরায়েল একধরনের মনস্তাত্ত্বিক যুদ্ধের সূচনা করল।
এদিকে আন্তর্জাতিক সম্প্রদায় পরিস্থিতি নিবিড়ভাবে পর্যবেক্ষণ করছে। মধ্যপ্রাচ্যের এমন এক সময়ে এই হামলা ঘটল যখন ইরান ও ইসরায়েলের মধ্যে উত্তেজনা আগে থেকেই তুঙ্গে। আগামী দিনে এর জবাব কীভাবে দেয় ইরান, তা এখন সবার নজর কেড়ে নিচ্ছে।