প্রকাশ: ১০ মে ২০২৫, ১২:৫৭
ভারতের গুজরাটে ১৯৭১ সালের যুদ্ধের পর এই প্রথম পাকিস্তানের হামলার অভিযোগ ঘিরে দক্ষিণ এশিয়ার দুই চিরপ্রতিদ্বন্দ্বী দেশের মধ্যে নতুন করে উত্তেজনা দেখা দিয়েছে। পাকিস্তানের লাহোরে গভর্নমেন্ট কলেজ বিশ্ববিদ্যালয়ের এক ছাত্রের ফেসবুক পোস্ট এবং ভারতীয় প্রতিরক্ষা সূত্রের বরাত দিয়ে সংবাদমাধ্যমগুলো এ নিয়ে বিস্তর আলোচনা করছে। জাঘম আব্বাস নামের ওই পাকিস্তানি ছাত্র দাবি করেছেন, পাকিস্তানি বিমান গুজরাট, দিল্লি ও উধমপুরে প্রবেশ করে সামরিক স্থাপনায় আঘাত হেনেছে, যা যুদ্ধপরবর্তী সময়ে গুজরাটে পাকিস্তানের প্রথম হামলা।
আব্বাস তার পোস্টে আরও দাবি করেন, এই হামলা ছিল ‘অপারেশন বুনয়া নুম মারসূস’ এর অংশ, যা পাকিস্তান পরিচালনা করেছে ভারতীয় আগ্রাসনের জবাবে। তিনি বলেন, ভারত বারবার আন্তর্জাতিক সীমা লঙ্ঘন করে পাকিস্তানে হামলা চালিয়ে আসছিল এবং এবার পাকিস্তানও কঠোর প্রতিক্রিয়া দেখিয়েছে। উল্লেখযোগ্যভাবে, আব্বাসের বক্তব্যে গুজরাটকে হিন্দুত্ববাদী সন্ত্রাসের ঘাঁটি বলেও আখ্যা দেওয়া হয়েছে, যেখানে মোদির শাসনে মুসলমানদের বিরুদ্ধে দাঙ্গা সংঘটিত হয়েছিল বলে তিনি উল্লেখ করেন।
পাকিস্তান সেনাবাহিনীর পক্ষ থেকেও আক্রমণের বিষয়টি নিশ্চিত করা হয়েছে। স্কাই নিউজের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, পাকিস্তান জানিয়েছে ভারতের অব্যাহত উসকানির জবাবে তাদের সেনাবাহিনী ভারতশাসিত কাশ্মীর, পাঞ্জাব, রাজস্থান ও গুজরাটে অন্তত ২৫টির বেশি সামরিক লক্ষ্যবস্তুতে হামলা চালিয়েছে। এই হামলায় তারা ‘ফাতেহ’ নামক মাঝারি পাল্লার ক্ষেপণাস্ত্র ব্যবহার করেছে বলে দাবি করেছে ইসলামাবাদ।
অন্যদিকে ভারতের প্রতিরক্ষা বিভাগ থেকে জানানো হয়েছে, পাকিস্তানের এ ধরনের হামলা পরিকল্পিত উত্তেজনা সৃষ্টির প্রচেষ্টা মাত্র। ভারতের পক্ষ থেকে দাবি করা হয়েছে, পাকিস্তানের প্রেরিত ড্রোন ও ক্ষেপণাস্ত্র আকাশ প্রতিরক্ষা ব্যবস্থার মাধ্যমে ধ্বংস করা হয়েছে এবং পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে রয়েছে। তারা তাদের পক্ষ থেকে পাল্টা ব্যবস্থা গ্রহণের কথাও জানিয়েছে।
প্রতিরক্ষা সূত্রের বরাতে ভারতীয় সংবাদমাধ্যম আউটলুক বিজনেস জানিয়েছে, শুক্রবার রাতেও পাকিস্তান ড্রোন হামলার চেষ্টা করে এবং লক্ষ্যবস্তু হিসেবে বেছে নেয় ভারতের বিমানবন্দর ও সামরিক ঘাঁটিগুলো। জম্মু ও কাশ্মীর থেকে শুরু করে গুজরাট পর্যন্ত অন্তত ২৬টি স্থানে হামলার প্রস্তুতি নেওয়া হয়েছিল বলে জানানো হয়েছে।
পাকিস্তানের সামরিক বাহিনী সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম এক্সে একটি ভিডিও প্রকাশ করেছে, যেখানে মোবাইল লঞ্চার থেকে ক্ষেপণাস্ত্র ছোঁড়ার দৃশ্য দেখা যায়। ভিডিওটি নিয়ে বিতর্ক সৃষ্টি হলেও উভয় পক্ষই দাবি করছে, তারা যথাযথ জবাব দিয়েছে এবং দেশের নিরাপত্তা অক্ষুণ্ণ রয়েছে। এখন প্রশ্ন উঠেছে, এই পাল্টাপাল্টি অভিযানের পর পরিস্থিতি কি পূর্ণমাত্রায় যুদ্ধে রূপ নেবে, নাকি কূটনৈতিক পরিসরে ফিরবে?