প্রকাশ: ৮ মে ২০২৫, ১৭:১৫
কাশ্মির ইস্যুকে কেন্দ্র করে ফের ভারত-পাকিস্তানের মধ্যে নতুন করে সামরিক উত্তেজনা দেখা দিয়েছে। দুই দেশের সীমান্তে বুধবার রাত থেকে বৃহস্পতিবার পর্যন্ত একাধিক ড্রোন ও ক্ষেপণাস্ত্র হামলার ঘটনা ঘটে, যেখানে দুই পক্ষের অন্তত ৪৫ জন নিহত হয়েছেন। নিহতদের মধ্যে নারী ও শিশুও রয়েছে বলে দাবি করেছে পাকিস্তান সেনাবাহিনী।
ঘটনার সূত্রপাত ২২ এপ্রিল পেহেলগামে এক বন্দুকধারীর হামলায় ২৬ জন নিহত হওয়ার পর থেকে। ওই ঘটনার পর থেকেই সীমান্তে নিরাপত্তা জোরদার করে ভারত এবং পাকিস্তানের ওপর কূটনৈতিক চাপ বৃদ্ধি পায়। এরই ধারাবাহিকতায় বুধবার গভীর রাতে ভারতের পক্ষ থেকে পাকিস্তানের ৯টি স্থানে ড্রোন ও ক্ষেপণাস্ত্র হামলা চালানো হয়।
পাকিস্তান সেনাবাহিনীর দাবি, ভারতীয় সেনাবাহিনী বৃহস্পতিবার নতুন করে ২৫টি ড্রোন ছুঁড়েছে, যার মধ্যে বেশিরভাগই ভূপাতিত করা হয়েছে। সেনাবাহিনীর মুখপাত্র আহমেদ শরীফ চৌধুরী জানান, রাওয়ালপিন্ডির সামরিক সদরদপ্তরের কাছাকাছি একটি ড্রোন ধ্বংস করা হয় এবং লাহোরের সামরিক স্থাপনায় ড্রোন হামলায় চারজন সৈন্য আহত হন।
ভারতের পক্ষ থেকে এখনো আনুষ্ঠানিক বিবৃতি না এলেও পাকিস্তানের বেসামরিক বিমান চলাচল কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, করাচি বিমানবন্দর বৃহস্পতিবার সন্ধ্যা ৬টা পর্যন্ত বন্ধ রাখা হয়েছে। ইসলামাবাদ ও লাহোর বিমানবন্দরেও সাময়িকভাবে সব ধরনের ফ্লাইট স্থগিত করা হয়েছে।
লাহোর শহরের বিভিন্ন স্থানে বিস্ফোরণের শব্দে জনমনে আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়ে। স্থানীয়রা জানান, ড্রোনের ধ্বংসাবশেষ দেখতে বহু মানুষ সামরিক স্থাপনার কাছে ভিড় করেন, যা পরিস্থিতিকে আরও জটিল করে তোলে।
পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী শেহবাজ শরিফ এক ভাষণে হুঁশিয়ারি উচ্চারণ করে বলেন, শহীদদের রক্তের প্রতিটি ফোঁটার জবাব নেওয়া হবে। তিনি ভারতের হামলার বিরুদ্ধে পাল্টা জবাব দেওয়ার ইঙ্গিত দেন।
উল্লেখ্য, ভারত ও পাকিস্তান উভয়ই পারমাণবিক শক্তিধর রাষ্ট্র। ১৯৪৭ সালে স্বাধীনতা লাভের পর থেকে জম্মু ও কাশ্মির নিয়ে তারা তিনবার যুদ্ধে জড়িয়েছে। বর্তমান পরিস্থিতি সেই পুরনো উত্তেজনাকেই নতুন রূপে ফিরিয়ে এনেছে।