প্রকাশ: ৭ মে ২০২৫, ১০:৪৬
কাশ্মীরকে ঘিরে ভারত ও পাকিস্তানের মধ্যে চলমান উত্তেজনা আঞ্চলিক স্থলসীমা ছাড়িয়ে এবার প্রভাব ফেলেছে আকাশপথেও। মঙ্গলবার মধ্যরাতে ভারতের চালানো আকস্মিক মিসাইল হামলায় অস্থির হয়ে উঠেছে পাকিস্তানের আকাশসীমা, যার ফলে আন্তর্জাতিক বিমান চলাচলে দেখা দিয়েছে বড় ধরনের বিপর্যয়। এই প্রেক্ষাপটে বাংলাদেশগামী দুটি আন্তর্জাতিক ফ্লাইট মাঝ আকাশ থেকে ফিরে যেতে বাধ্য হয়েছে।
ফ্লাইট দুটি হচ্ছে তুরস্কের ইস্তাম্বুল থেকে ঢাকাগামী তার্কিশ এয়ারলাইন্স (TK-712) এবং কুয়েত সিটি থেকে ঢাকাগামী কুয়েত এয়ারওয়েজ (J9533)। সাধারণত এই ফ্লাইটগুলো পাকিস্তানের আকাশসীমা হয়ে ভারতের উপর দিয়ে বাংলাদেশে প্রবেশ করে। তবে নিরাপত্তা হুমকির কারণে এই দুটি ফ্লাইটই বাংলাদেশে না এসে মাঝপথেই গন্তব্য পরিবর্তন করে।
ফ্লাইট ট্র্যাকিং সাইট ফ্লাইটরাডার২৪ জানিয়েছে, TK-712 ফ্লাইটটি ওমানের মাসকট আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে নিরাপদ অবতরণ করে। অন্যদিকে কুয়েত এয়ারওয়েজের ফ্লাইটটি প্রায় দেড় ঘণ্টা আকাশে থাকার পর আবারও কুয়েত আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে ফিরে যায়।
ঢাকার শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের একাধিক সূত্র জানিয়েছে, বাংলাদেশ থেকে মধ্যপ্রাচ্যের বিভিন্ন রুটে যেসব ফ্লাইট চলাচল করে, তাদের অনেকগুলোই পাকিস্তানের আকাশসীমা ব্যবহার করে থাকে। তবে সাম্প্রতিক পরিস্থিতিতে এই রুটগুলোর পরিবর্তে বিকল্প নিরাপদ রুট ব্যবহারের মাধ্যমে ফ্লাইটগুলো গন্তব্যে পৌঁছেছে।
রয়টার্স এক প্রতিবেদনে জানায়, ভারতের সশস্ত্র বাহিনী ‘অপারেশন সিন্দুর’ নামে একটি পরিকল্পিত অভিযান শুরু করেছে। এর আওতায় পাকিস্তান এবং আজাদ কাশ্মীরের অন্তত নয়টি স্থাপনায় ক্ষেপণাস্ত্র হামলা চালানো হয়।
এই হামলার পেছনে রয়েছে কাশ্মীরের পহেলগাঁও এলাকায় ঘটে যাওয়া সাম্প্রতিক একটি সন্ত্রাসী হামলা, যেখানে ২৬ জন প্রাণ হারান। ভারত সেই হামলার জন্য পাকিস্তানকে দায়ী করে প্রতিশোধমূলক ব্যবস্থা নেয়, যদিও ইসলামাবাদ এর দায় অস্বীকার করেছে।
এই সামরিক উত্তেজনার পরিপ্রেক্ষিতে পাকিস্তান তার আকাশসীমায় সতর্কতা জারি করেছে এবং আন্তর্জাতিক ফ্লাইট চলাচলে তাৎক্ষণিক প্রভাব পড়েছে। কূটনৈতিক বিশ্লেষকরা বলছেন, যদি এ ধরনের অবস্থা দীর্ঘায়িত হয়, তাহলে পুরো দক্ষিণ এশিয়ার আকাশপথে নিরাপত্তা ও বিমান চলাচলে বড় ধরনের ব্যাঘাত ঘটতে পারে।
এই অবস্থায় যাত্রীদের নিরাপত্তা ও আন্তর্জাতিক বিমান চলাচলের স্বাভাবিকতা ফিরিয়ে আনতে আঞ্চলিক কূটনৈতিক সমাধানের উপর জোর দেওয়ার আহ্বান জানাচ্ছেন বিশেষজ্ঞরা।