সিরাজগঞ্জের রায়গঞ্জ উপজেলায় সরকারি অ্যাম্বুলেন্সের অভাবে বেসরকারি অ্যাম্বুলেন্সের সিন্ডিকেট চক্র একাধিক রোগীকে প্রতারণা করছে। এলাকার একমাত্র সরকারি অ্যাম্বুলেন্সের সংকটের সুযোগ নিয়ে কিছু ব্যক্তি রোগীদের বিপদে পড়তে বাধ্য করছে।
রায়গঞ্জ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে একটি মাত্র সরকারি অ্যাম্বুলেন্স রয়েছে, যা রোগী পরিবহণের জন্য অপ্রতুল। এই সুযোগে বেসরকারি অ্যাম্বুলেন্স সেবার একটি সিন্ডিকেট গড়ে উঠেছে, যারা রোগীদের অসুবিধায় ফেলে অতিরিক্ত অর্থ দাবি করছে। রোগীরা অভিযোগ করছেন, জরুরি সময়ে সরকারি অ্যাম্বুলেন্স না পেয়ে তাদেরকে বাধ্য হয়ে বেসরকারি অ্যাম্বুলেন্সে যেতে হচ্ছে, যা সময় এবং অর্থের অপচয় হচ্ছে।
সংশ্লিষ্ট এলাকার বাসিন্দাদের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, রায়গঞ্জ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের সরকারি অ্যাম্বুলেন্সের ড্রাইভার সুমন আহমেদের ব্যক্তিগত মাইক্রোবাস রয়েছে, যা তিনি রোগী পরিবহণের জন্য ব্যবহার করেন। সরকারি অ্যাম্বুলেন্সে সেবা পাওয়ার সময় রোগীদের নানা অজুহাত দিয়ে ব্যক্তিগত মাইক্রোবাসে নিতে বলা হয়। রোগীরা আরও জানান, অনেক সময় সরকারি অ্যাম্বুলেন্সের অভাবে তাদেরকে উচ্চ ভাড়ায় বেসরকারি অ্যাম্বুলেন্সে যেতে হয়েছে।
একটি গ্রামের বাসিন্দা বলেন, উন্নত চিকিৎসার জন্য চিকিৎসক তাকে ঢাকায় পাঠিয়েছিলেন, কিন্তু সরকারি অ্যাম্বুলেন্স না পাওয়ায় বাধ্য হয়ে তাকে বেসরকারি অ্যাম্বুলেন্স নিতে হয়েছে, যার ভাড়া ছিল অনেক বেশি। রায়গঞ্জ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের প্রতিশ্রুত সেবা পাওয়া না গেলে রোগীরা নিজেদের অবস্থান আরও খারাপ হতে দেখে।
এছাড়া, রায়গঞ্জ উপজেলার ঘুড়কা ইউনিয়নের শ্যামনাই এলাকার শাহিনুর ইসলাম জানান, তার পিতার জন্য অ্যাম্বুলেন্সের দরকার পড়লে, সুমন আহমেদ সরকারি অ্যাম্বুলেন্সের অজুহাত দেখিয়ে তার ব্যক্তিগত মাইক্রোবাসে রোগীকে নিয়ে গিয়েছিলেন। এই মাইক্রোবাসে গাড়ির যান্ত্রিক ত্রুটির কারণে রাস্তার মধ্যে গাড়িটি থেমে যায়, যা রোগীর জীবনসংশয়কারী পরিস্থিতি তৈরি করেছিল।
রায়গঞ্জ উপজেলার সচেতন জনগণের মতে, স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের একটি সিন্ডিকেট গড়ে ওঠেছে, যা সরকারি অ্যাম্বুলেন্সের সংকট দেখিয়ে বেসরকারি অ্যাম্বুলেন্সের সেবা প্রদান করছে। এতে রোগীরা সঠিক সময়ে সেবা না পাওয়ার পাশাপাশি অতিরিক্ত অর্থ ব্যয় করছে।
এ বিষয়ে, রায়গঞ্জ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের ড্রাইভার সুমন আহমেদ বলেন, তার মাইক্রোবাসের ব্যবহারের কোনো অভিযোগ নেই। তিনি জানান, তিনি সরকারি অ্যাম্বুলেন্সে সেবা প্রদান করে থাকেন এবং এ সম্পর্কে কোনো ধরনের অভিযোগ পেলে তদন্ত করা হবে।
এ বিষয়ে, রায়গঞ্জ উপজেলা পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডাঃ আ.ফ.ম ওবায়দুল ইসলাম বলেন, তিনি নতুন যোগদান করেছেন এবং এরকম কোনো অভিযোগ তার কাছে আসেনি। তবে, অভিযোগ পেলে তদন্ত সাপেক্ষে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেবেন।
রায়গঞ্জের জনগণের দাবি, সঠিক সেবা পেতে এবং সিন্ডিকেটের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে কর্তৃপক্ষের দ্রুত পদক্ষেপ নেওয়া উচিত। এর মাধ্যমে, তারা আশা করছে যে, সরকারি সেবা আরো সুষ্ঠু ও কার্যকর হবে।
আপনার মতামত লিখুন :
বি: দ্র: প্রিয় পাঠক সমালোচনা আপনার অধিকার । তবে ভাষাটাও মার্জিত হতে হবে। সাথে থাকার জন্য ধন্যবাদ ।