জাপানের উপকূলীয় অঞ্চলের দিকে ধেয়ে আসা শক্তিশালী সুপার টাইফুন হাগিবিসের প্রভাবে একজনের প্রাণহানি ঘটেছে। এছাড়া উপকূলীয় অঞ্চল থেকে ৩২ লাখের বেশি মানুষকে নিরাপদ আশ্রয়ে যাওয়ার পরামর্শ দেয়া হয়েছে। গত ৬০ বছরের ইতিহাসে এমন শক্তিশালী সুপার টাইফুনের মুখোমুখি হয়নি দেশটি। শনিবার স্থানীয় সময় সন্ধ্যার দিকে জাপানের পূর্বাঞ্চলে এই টাইফুন আছড়ে পড়তে পারে ২১৬ কিলোমিটার গতিতে। ইতোমধ্যে দেশটিতে নজিরবিহীন বৃষ্টিপাত শুরু হয়েছে; যে কারণে কর্তৃপক্ষ বর্ষণ দূর্যোগের সর্বোচ্চ সতর্ক সঙ্কেত জারি করেছে। কয়েক ঘণ্টার ভারী বর্ষণের কারণে ভূমিধস ও ভয়াবহ বন্যার শঙ্কায় ইতোমধ্যে ৩২ লাখ মানুষকে সরিয়ে নেয়ার উদ্যোগ নেয়া হয়েছে।
প্রলয়ঙ্করী এই ঝড়ের কারণে দেশটিতে চলমান রাগবি ওয়ার্ল্ড কাপের দুটি ম্যাচ স্থগিত করতে বাধ্য হয়েছে কর্তৃপক্ষ। এমনকি রাজধানী টোকিও থেকে বিমানের সব ধরনের চলাচল স্থগিত রাখা হয়েছে। জাপানের আবহাওয়া সংস্থা (জেএমএ) পূর্বাভাসে বলছে, শনিবার স্থানীয় সময় সন্ধ্যার দিকে জাপানের মধ্য অথবা পূর্বাঞ্চলে আছড়ে পড়তে পারে সুপার টাইফুন হাগিবিস। প্রলয়ঙ্করী এই ঝড়ের গতিবেগ ঘণ্টায় ২১৬ কিলোমিটারের বেশি হতে পারে। উপকূলের দিকে প্রবল গতিতে অগ্রসর হতে থাকা এই ঝড়ের কারণে টোকিওর পূর্বাঞ্চলের চিবা শহরে একজনের প্রাণহানি ঘটেছে। প্রচণ্ড বাতাসের কারণে গাড়ি উল্টে এই ব্যক্তি মারা গেছেন বলে বার্তাসংস্থা এএফপি এক প্রতিবেদনে জানিয়েছে।
গত কয়েক ঘণ্টা ধরে দেশটিতে প্রবল বর্ষণ শুরু হয়েছে। বর্ষণের পরিপ্রেক্ষিতে দেশটির আবহাওয়া সংস্থা টোকিও ও এর আশপাশের এলাকায় বর্ষণের সর্বোচ্চ সতর্ক সঙ্কেত জারি করেছে। প্রেস ব্রিফিংয়ে জেএমএর কর্মকর্তা ইয়াসুশি কাজিওয়ারা বলেছেন, শহর ও গ্রামাঞ্চলে নজিরবিহীন ভারী বর্ষণ দেখা দিয়েছে; যে কারণে জরুরি বৃষ্টি সতর্ক সঙ্কে জারি করা হয়েছে। সুপার টাইফুন হাগিবিসের প্রভাবে ক্ষয়ক্ষতি কমিয়ে আনতে আঘাত হানার আগেই টোকিওর কিছু কিছু এলাকায় বিদ্যুৎ সংযোগ বিচ্ছিন্ন করা হয়েছে।
চিবা শহরে বর্ষণ ও তীব্র বাতাসের কারণে একটি বাড়ি পুরোপুরি ধ্বংস ও আরো কিছু বাড়িঘর ধসে পড়েছে। স্থানীয় ফায়ার সার্ভিসের এক কর্মকর্তা বলেছেন, বর্ষণ ও বাতাসে বাড়ির নিচে চাপা পড়ায় অন্তত পাঁচজন আহত হয়েছেন। তাদের উদ্ধারের পর হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে। তবে তারা শঙ্কামুক্ত। জাপানের আবহাওয়া সংস্থা বলছে, ১৯৫৮ সালের কানোগাওয়া টাইফুনের পর এবারই সর্বোচ্চ শক্তিশালী সুপারে টাইফুন হাগিবিস আঘাত হানতে যাচ্ছে। কানোগাওয়া টাইফুনের আঘাতে ওই বছর এক হাজার ২০০ জনের বেশি মানুষের প্রাণহানি ঘটে।
ইনিউজ ৭১/এম.আর
আপনার মতামত লিখুন :
বি: দ্র: প্রিয় পাঠক সমালোচনা আপনার অধিকার । তবে ভাষাটাও মার্জিত হতে হবে। সাথে থাকার জন্য ধন্যবাদ ।