চট্টগ্রামের শাহ আমানত সেতুর টোলপ্লাজায় লোহাগাড়া উপজেলা বিএনপির আহ্বায়ক নাজমুল মোস্তফা আমিনের বিরুদ্ধে এক টোলকর্মীকে লাঞ্ছিত করার অভিযোগ উঠেছে। শুক্রবার (২৪ জানুয়ারি) দুপুর দেড়টার দিকে কর্ণফুলীর মইজ্জ্যারটেক টোলপ্লাজায় এ ঘটনা ঘটে। অভিযোগ অনুযায়ী, টোল আদায়ে বিলম্ব হওয়ায় ক্ষিপ্ত হয়ে বিএনপি নেতা টোলপ্লাজায় প্রবেশ করেন এবং কর্মচারী মোহাম্মদ ইমনকে শারীরিকভাবে লাঞ্ছিত করেন। সিসিটিভি ফুটেজ ও প্রত্যক্ষদর্শীরা জানিয়েছেন, ঘটনাটি ঘটে চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশনের মেয়র ডা. শাহাদাত হোসেনের গাড়িবহর টোলপ্লাজা পার হওয়ার সময়।
টোলপ্লাজার কর্মীরা জানিয়েছেন, শুক্রবার টোলপ্লাজায় গাড়ির চাপ বেশি থাকায় সামান্য বিলম্ব হচ্ছিল। এ বিলম্বে ক্ষুব্ধ হয়ে নাজমুল মোস্তফা আমিন গাড়ি থেকে নেমে বুথে প্রবেশ করেন, কর্মচারীকে গালিগালাজ করেন এবং কম্পিউটারে আঘাত করেন। এতে কর্মীরা আতঙ্কিত হয়ে পড়েন এবং কিছুক্ষণের জন্য টোল আদায় বন্ধ রাখতে বাধ্য হন। অভিযোগ অস্বীকার করে নাজমুল মোস্তফা আমিন গণমাধ্যমকে জানিয়েছেন, তিনি কেবল উত্তেজিত পরিস্থিতি সামাল দেওয়ার চেষ্টা করেছেন এবং কোনো টোলকর্মীকে শারীরিকভাবে লাঞ্ছিত করেননি।
তিনি আরও জানান, সেদিন দীর্ঘ যানজটের কারণে পরিস্থিতি উত্তপ্ত হয়ে উঠেছিল। কিছু মুসল্লি জুমার নামাজ আদায় করতে না পেরে ক্ষুব্ধ হন এবং উত্তেজনা তৈরি করেন। পরিস্থিতি শান্ত করতে তিনি কড়া ভাষায় কথা বলেছিলেন। তবে কর্মচারীর গায়ে হাত তোলার অভিযোগ পুরোপুরি ভিত্তিহীন বলে দাবি করেন তিনি।
ঘটনাটি সিসিটিভি ফুটেজে ধরা পড়েছে, যা নিয়ে আলোচনা চলছে। টোলপ্লাজার অন্যান্য কর্মচারীরা জানিয়েছেন, এমন আচরণে তারা কর্মস্থলে নিরাপত্তাহীনতা অনুভব করছেন। তারা সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের কাছে সুষ্ঠু তদন্ত এবং ন্যায়বিচারের দাবি জানিয়েছেন।
এদিকে স্থানীয়রা মনে করেন, জনপ্রতিনিধিদের এমন আচরণ সমাজে নেতিবাচক প্রভাব ফেলে এবং আইনশৃঙ্খলার অবনতির ঝুঁকি বাড়ায়। তারা এই ধরনের ঘটনার পুনরাবৃত্তি রোধে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নিতে প্রশাসনের প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন।
ঘটনার পর থেকে ওই টোলপ্লাজার কর্মীদের মধ্যে আতঙ্ক বিরাজ করছে। কর্মীরা বলছেন, টোল আদায়ে দেরি হলে তারা প্রায়ই গাড়ির চালক এবং যাত্রীদের থেকে চাপের মুখে পড়েন। এই ধরনের ঘটনা তাদের পেশাগত জীবনে নেতিবাচক প্রভাব ফেলে।
বিশ্লেষকরা মনে করেন, সড়ক ব্যবস্থাপনায় কার্যকর পদক্ষেপ গ্রহণ না করলে এই ধরনের ঘটনাগুলো বারবার ঘটতে পারে। তারা দ্রুত সমস্যার সমাধানে সংশ্লিষ্ট সব পক্ষকে এগিয়ে আসার আহ্বান জানিয়েছেন। ঘটনার সুষ্ঠু তদন্ত এবং দোষীদের বিরুদ্ধে যথাযথ ব্যবস্থা নেওয়া হলে এমন অপ্রীতিকর ঘটনার পুনরাবৃত্তি রোধ করা সম্ভব।
আপনার মতামত লিখুন :
বি: দ্র: প্রিয় পাঠক সমালোচনা আপনার অধিকার । তবে ভাষাটাও মার্জিত হতে হবে। সাথে থাকার জন্য ধন্যবাদ ।