সিরাজগঞ্জের তাড়াশ উপজেলার নওগাঁ ইউনিয়নের চকরসুল্লাহ গ্রামের রত্না খাতুনের কৃষি উদ্যোক্তা হওয়ার গল্পটি অনেকের জন্য অনুপ্রেরণা। মাস্টার্স কমপ্লিট করা রত্না চাকরি খুঁজতে গিয়ে বুঝতে পারেন, নিজের উদ্যোগে কিছু করার মাধ্যমে তিনি নিজের এবং পরিবারের অর্থনৈতিক উন্নতি আনতে পারবেন। তার এই পথচলায় সাহস ও সহযোগিতার হাত বাড়িয়ে দিয়েছে দেশের একটি জনপ্রিয় বেসরকারি সংস্থা, আশা তাড়াশ ব্রাঞ্চ।
রত্না জানান, চাকরি না পেয়ে তিনি সিদ্ধান্ত নেন কৃষি উদ্যোক্তা হওয়ার। ২০২৩ সালে বাংলাদেশ ব্যাংকের অর্থায়নে আশা সংস্থা থেকে এক লাখ টাকা ঋণ নিয়ে শুরু করেন বাণিজ্যিক আদা চাষ। তার কৃষি উদ্যোগের প্রথম সফলতা আসে বস্তায় আদা চাষের মাধ্যমে, যা এলাকায় আলোড়ন সৃষ্টি করে। ২৫০ বস্তায় আদা চাষের পর তিনি লাভবান হন এবং এখন শীতকালীন সবজি আলু ও পেঁয়াজ চাষেও ঝুঁকেছেন।
বর্তমানে রত্না ৩০ শতক জমিতে আলু ও পেঁয়াজ চাষ করছেন। বুধবার (১৮ ডিসেম্বর) তার বাগানে গিয়ে দেখা যায় সিমেন্ট ও সারের বস্তায় সারি সারি আদা গাছ, যা সবুজে আচ্ছাদিত একটি সুন্দর দৃশ্য তৈরি করেছে। রত্নার চাষাবাদ দেখে স্থানীয় কৃষক-কৃষাণীরা আদা চাষে আগ্রহী হয়ে উঠছেন বলে জানান কৃষি বিভাগের কর্মকর্তারা।
রত্না খাতুন বলেন, ‘‘বিয়ের পর খুব অল্প বয়সে সংসার শুরু করি, কিন্তু শখ ছিল নিজেকে শিক্ষা-দীক্ষায় পূর্ণাঙ্গ করতে। আমার স্বামী সব সময় আমাকে সহায়তা করেছেন। তার সহযোগিতায় আমি পড়ালেখা চালিয়ে যেতে পেরেছি।’’ তিনি আরও জানান, ‘‘সিরাজগঞ্জ সরকারি কলেজ থেকে মাস্টার্স শেষ করার পর চাকরি না পেয়ে কৃষি উদ্যোক্তা হওয়ার সিদ্ধান্ত নিই। এখন পরিবারের সবার সহযোগিতায় আমি কৃষি কাজের পাশাপাশি সংসারের খুঁটি হয়ে দাঁড়িয়েছি।’’
এদিকে, তার এই কৃষি উদ্যোগে আশার কর্মকর্তারা যথেষ্ট উৎসাহিত। আশা তাড়াশ ব্রাঞ্চের সিনিয়র ম্যানেজার মোঃ গোলাম মোস্তফা এবং সিরাজগঞ্জ শাখার সিনিয়র রিজিওনাল ম্যানেজার (এগ্রী) মোঃ আব্দুল খালেক রত্নার মাঠ প্রদর্শনীতে উপস্থিত ছিলেন এবং তার উদ্যোগকে উৎসাহিত করেন।
রঙিন স্বপ্ন নিয়ে কৃষির আঙ্গিনায় পা রাখা রত্না খাতুন, এখন তার ক্ষেত থেকে আলু ও পেঁয়াজ চাষে লাভের আশা করছেন। তিনি বিশ্বাস করেন, কঠোর পরিশ্রমের মাধ্যমে কৃষি খাতে আরও সফলতা অর্জন করবেন।
আপনার মতামত লিখুন :
বি: দ্র: প্রিয় পাঠক সমালোচনা আপনার অধিকার । তবে ভাষাটাও মার্জিত হতে হবে। সাথে থাকার জন্য ধন্যবাদ ।