মৃত্যুকে জয় করার সাধ মানুষের চিরন্তন। বিজ্ঞানীরা তাই মৃত্যুকে জয় করার জন্য শুরু করে নানান গবেষণা। তবে এতদিন আশানুরূপ সাফল্য না-পেলেও সম্প্রতি হার্ভার্ড মেডিকেল স্কুলের গবেষণা সফলতার মুখ দেখেছে।
আণবিক জীববিজ্ঞানের গবেষক ডেভিড সিঙ্কলেয়ারের নেতৃত্বে হার্ভার্ড মেডিকেল স্কুলের একদল গবেষক মানুষের অমরত্ব লাভের পথটি খুঁজেছেন বয়সের গতিকে উল্টো করে।
অর্থাৎ, সময়ের সঙ্গে সঙ্গে আপনি বুড়ো হয়ে গেলেও রূপকথার গল্পের মতো আবার তারুণ্য ফিরে পাবেন। আমাদের শরীরের বৃদ্ধ কোষকে আবার নতুন কোষে রূপান্তরের এই অসাধ্য কাজটি সমর্থ হয়েছেন হার্ভার্ড মেডিকেল স্কুলের গবেষকরা।
গবেষকরা জানান, ২০০৭ সালে ত্বকের কোষের বয়স কৃত্রিমভাবে বৃদ্ধি করে নোবেল জেতেন জাপানি বিজ্ঞানী শিনইয়া ইয়ামানাকা। সেই পদ্ধতিকে ঠিক উল্টো করে কোষের বয়স কমিয়ে আনার চেষ্টা করেছেন তারা।
আণবিক জীববিজ্ঞানের গবেষক ডেভিড সিঙ্কলেয়ারের নেতৃত্বে হার্ভার্ড মেডিকেল স্কুলের গবেষকরা তাদের গবেষণালব্ধ তথ্য পরীক্ষা করেছেন ইঁদুরের ওপর।
প্রথমে তারা একটি ইঁদুরের বার্ধক্যজনিত কারণে দৃষ্টিগত সমস্যার সমাধান করতে চেষ্টা করেন। ২০২০ সালে বার্ধক্যজনিত কারণে ওই ইঁদুরটির রেটিনা নষ্ট হয়ে যাচ্ছিল। বিজ্ঞানীরা ইঁদুরের দৃষ্টি ঠিক করতে ওই ইঁদুরের ক্ষতিগ্রস্ত রেটিনা কোষগুলো পুনরুজ্জীবিত করতে চেষ্টা করেন। প্রচেষ্টা সফল হওয়ার পর বিজ্ঞানীরা আবারও দুটি ইঁদুরকে বেছে নেন।
একই সময়ে জন্ম নেওয়া এই দুটি ইঁদুরের মধ্যে একটিতে কোনো ধরনের পরিবর্তন করেননি বিজ্ঞানীরা। তবে দ্বিতীয় ইঁদুরটির ক্ষেত্রে বিশেষ কিছু প্রোটিন ও জিনগত পরিবর্তন ঘটান তারা।
দীর্ঘ পর্যবেক্ষণে বিজ্ঞানীরা লক্ষ করেন, যে ইঁদুরের কোনো পরিবর্তন ঘটানো হয়নি সেই ইঁদুরটি ক্রমশ বৃদ্ধ হয়ে যাচ্ছে। অথচ বিজ্ঞানীরা যে ইঁদুরটির শরীরে প্রোটিন ও জিনগত পরিবর্তন করেছিলেন, সেই ইঁদুরে কোনো ধরনের বয়সের ছাপ পড়েনি।
জীববিদ্যার এমন সাফল্য মানবসভ্যতার ইতিহাসে নতুন দ্বার উন্মোচন করবে, তাই গবেষণাটি আরও ব্যাপক পরিসরে করা উচিত বলে মনে করছেন অনেক বিশেষজ্ঞ।
সূত্র: আনন্দবাজার পত্রিকা
আপনার মতামত লিখুন :
বি: দ্র: প্রিয় পাঠক সমালোচনা আপনার অধিকার । তবে ভাষাটাও মার্জিত হতে হবে। সাথে থাকার জন্য ধন্যবাদ ।