সুরমায় গাঁজার ট্রলার, ধরা ছোঁয়ার বাইরে চক্রের হোতারা

নিজস্ব প্রতিবেদক
জেলা প্রতিনিধি, সুনামগঞ্জ
প্রকাশিত: সোমবার ১৭ই মার্চ ২০২৫ ০১:১০ অপরাহ্ন
সুরমায় গাঁজার ট্রলার, ধরা ছোঁয়ার বাইরে চক্রের হোতারা

সুনামগঞ্জের জামালগঞ্জের সুরমা নদীতে ঘাটে বাঁধা একটি ট্রলার থেকে গাঁজার চালান জব্দ করলেও মাদক চোরাকারবারি চক্রের মূল হোতারা অধরা থেকে গেছে। স্থানীয়দের অভিযোগ, দীর্ঘদিন ধরে সুরমা নদী দিয়ে মাদক ও চোরাচালানী পণ্য বহন করা হলেও প্রশাসন কার্যকর ব্যবস্থা নিচ্ছে না।  


শনিবার ভোররাতে জামালগঞ্জ উপজেলার রামনগর গ্রামের তীরবর্তী ঘাটে দ্রুতগামী একটি ট্রলার গাঁজার চালান নিয়ে এসে বাঁধা হয়। স্থানীয়দের দাবি, ট্রলারটি ছিল মৃত আবু বক্করের ছেলে জিল্লুর রহমানের। প্রতি ট্রিপে ৫০-৬০ হাজার টাকা ভাড়া নিয়ে তিনি দীর্ঘদিন ধরে এ চক্রের সাথে যুক্ত।  


জানা গেছে, গাঁজা বোঝাই ট্রলার ঘাটে বাঁধা থাকার খবর থানায় জানানো হলে দুপুরের পর পুলিশ ঘটনাস্থলে আসে। তবে অভিযানের আগেই মূল চালান গোপনে সরিয়ে ফেলা হয় বলে স্থানীয়রা অভিযোগ করেছেন। পরে পুলিশ লোক দেখানো অভিযানের মাধ্যমে মাত্র ৬ কেজি গাঁজা জব্দ করে এবং মামলায় অজ্ঞাতনামা আসামি দেখিয়ে মামলা দায়ের করে।  


গ্রামবাসীর দাবি, অভিযানের আগেই পুলিশের কিছু অসৎ কর্মকর্তা মাদক চোরাকারবারিদের কাছে তথ্য ফাঁস করে দেন। ফলে বিপুল পরিমাণ গাঁজা ট্রলার থেকে সরিয়ে নেওয়া হয় এবং কৌশলে কিছু গাঁজা রেখে পুলিশকে বিভ্রান্ত করা হয়। পুলিশও পুরো ঘটনার তদন্ত না করে মামলাটি দায়সারা ভাবে দায়ের করেছে বলে অভিযোগ উঠেছে।  


এদিকে, গাঁজার সাথে ট্রলারটি জব্দ করলেও চক্রের মূল হোতারা থেকে গেছে ধরাছোঁয়ার বাইরে। স্থানীয়দের ধারণা, মামলায় অজ্ঞাতনামা আসামি দেখিয়ে পুলিশ ভবিষ্যতে ট্রলারের মালিকসহ কারবারিদের ছাড়িয়ে নেওয়ার পথ তৈরি করেছে।  


এর আগে একই ধরনের একটি ঘটনায় বশির আহমদের ট্রলার মাদকসহ আটক করা হলেও ঘুষ দিয়ে তা ছাড়িয়ে নেওয়া হয়েছিল বলে অভিযোগ রয়েছে। ফলে মাদক ব্যবসায়ীরা বারবার পার পেয়ে যাচ্ছে।  


এ বিষয়ে জানতে রামনগরের জিল্লুর, রহিম আলী, নুরে আলম ও হরিপুরের বশির আহমদের মোবাইল ফোনে কল করা হলে কেউ ফোন ধরেননি।  


জামালগঞ্জ থানার এসআই শামীম কবির জানান, ট্রলারসহ ৬ কেজি গাঁজা জব্দ করা হয়েছে। তবে ট্রলারের মালিক ও মাদক কারবারিদের সনাক্ত করা সম্ভব হয়নি। থানার পুলিশ পরিদর্শক (তদন্ত) আরিফ উল্লাহ দাবি করেন, জব্দ করা গাঁজার পরিমাণ সত্যি এবং মামলাটি যথাযথভাবে করা হয়েছে। তবে এলাকাবাসী বলছেন, মূল অপরাধীরা ধরা না পড়লে এসব অভিযান কোনো ফল দেবে না।