সিলেট সরকারি কারিগরি প্রশিক্ষণ কেন্দ্রের (টিটিসি) এক ড্রাইভার কাজি মো. বিল্লাল হোসেনের বিরুদ্ধে বিপুল পরিমাণ সম্পদ গড়ে তোলার অভিযোগ উঠেছে। দীর্ঘ ২০ বছর ধরে একই প্রতিষ্ঠানে কর্মরত থেকে তিনি এক কোটি টাকার বাড়ি, ১০টি সিএনজি ও নানা ব্যবসার মালিক হয়েছেন বলে জানা গেছে। অভিযোগ রয়েছে, বর্তমান ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ শেখ মোহাম্মদ নাহিদ নিয়াজের সহযোগিতায় তিনি বেপরোয়া হয়ে উঠেছেন।
প্রতিষ্ঠানের বিভিন্ন কার্যক্রমে তার প্রভাব ব্যাপক। ভর্তি বাণিজ্যসহ নানা আয়ের উৎস থেকে ভাগ পাওয়ার অভিযোগ রয়েছে তার বিরুদ্ধে। একাধিকবার তার বদলির আদেশ আসলেও প্রশাসনিক তদবিরের মাধ্যমে তিনি তা ঠেকিয়ে দেন বলে জানা গেছে। তার স্ত্রী ফাতেমা আক্তারও একই প্রতিষ্ঠানে কর্মরত রয়েছেন।
সূত্র জানায়, টিটিসিতে আসা মন্ত্রী ও সচিবদের সিলেটের পর্যটন কেন্দ্র ঘুরিয়ে দেখানোর সুবাদে তিনি প্রভাবশালী ব্যক্তিদের সান্নিধ্যে আসেন এবং এই সুযোগকে কাজে লাগিয়ে বিপুল পরিমাণ সম্পদ গড়ে তোলেন। বিগত ১৫ বছরে তিনি প্রচুর অর্থ-বিত্তের মালিক হয়েছেন।
প্রশাসনের বিভিন্ন পর্যায়ে তার বিরুদ্ধে একাধিক অভিযোগ জমা হলেও কার্যকর কোনো ব্যবস্থা নেওয়া হয়নি। প্রতিষ্ঠানটির দীর্ঘদিনের কর্মচারীদের বদলির আদেশ আসলেও তা নানাভাবে আটকে দেওয়া হয় বলে জানা গেছে। এমনকি অতীতে বদলির সিদ্ধান্ত হওয়া দুই কর্মকর্তার আদেশও মন্ত্রণালয়ের মাধ্যমে স্থগিত করা হয়।
সরকার পরিবর্তনের সঙ্গে সঙ্গে টিটিসির কিছু কর্মকর্তা রাজনৈতিক দল পরিবর্তন করেছেন বলেও জানা গেছে। কেউ জামায়াতের, কেউ বিএনপির সমর্থক হিসেবে নিজেদের অবস্থান তৈরি করেছেন। ফলে প্রতিষ্ঠানটির দুর্নীতি নিয়ে অভিযোগ উঠলেও কার্যকর পদক্ষেপ নেওয়া সম্ভব হচ্ছে না।
ড্রাইভার কাজি মো. বিল্লাল হোসেন ও তার ঘনিষ্ঠ সহযোগী শাহিন সিলেটে সিএনজি ও জমি ব্যবসার সঙ্গে যুক্ত রয়েছেন। চাকরির আড়ালে তারা বিভিন্ন ব্যবসা পরিচালনা করে আসছেন। তাদের বিরুদ্ধে তদন্ত শুরু হলেই সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা তা ধামাচাপা দেওয়ার চেষ্টা করেন।
অভিযোগ রয়েছে, টিটিসির দায়িত্বপ্রাপ্ত কর্তৃপক্ষ নিজেদের স্বার্থ রক্ষায় দুর্নীতিকে প্রশ্রয় দিচ্ছে। ফলে কিছু কর্মকর্তা-কর্মচারী অল্প সময়ে বিপুল সম্পদের মালিক হয়ে উঠেছেন।
প্রশাসনের নিরপেক্ষ তদন্ত ও কঠোর পদক্ষেপ ছাড়া সিলেট টিটিসিতে চলমান অনিয়ম ও দুর্নীতি বন্ধ করা সম্ভব নয় বলে মনে করছেন সংশ্লিষ্টরা। স্থানীয়রা দ্রুত ব্যবস্থা নেওয়ার দাবি জানিয়েছেন।
আপনার মতামত লিখুন :
বি: দ্র: প্রিয় পাঠক সমালোচনা আপনার অধিকার । তবে ভাষাটাও মার্জিত হতে হবে। সাথে থাকার জন্য ধন্যবাদ ।