ইমরানের অভিযোগ: পাকিস্তানে আবার ১৯৭১-এর ইতিহাসের পুনরাবৃত্তি

নিজস্ব প্রতিবেদক
আন্তর্জাতিক ডেস্ক
প্রকাশিত: সোমবার ২০শে জানুয়ারী ২০২৫ ০৮:৪৩ অপরাহ্ন
ইমরানের অভিযোগ: পাকিস্তানে আবার ১৯৭১-এর ইতিহাসের পুনরাবৃত্তি

পাকিস্তানের সাবেক প্রধানমন্ত্রী ও পিটিআইয়ের প্রতিষ্ঠাতা ইমরান খান সামরিক নেতৃত্বের বিরুদ্ধে কড়া সমালোচনা করেছেন। সম্প্রতি এক্সে (পূর্বে টুইটার) করা পোস্টে তিনি অভিযোগ করেছেন, পাকিস্তানে ১৯৭১ সালের ইতিহাসের পুনরাবৃত্তি হচ্ছে। ইমরান দাবি করেন, তখন ইয়াহিয়া খান তার স্বৈরাচারী আচরণে দেশ ধ্বংস করেছিলেন। আজও একইভাবে বর্তমান সামরিক শাসক নিজেদের ক্ষমতা ধরে রাখতে দেশকে ধ্বংসের মুখে ঠেলে দিচ্ছে।  


ইমরান খানের পোস্টে তার কারাদণ্ডের প্রসঙ্গও উঠে আসে। আল-কাদির দুর্নীতি মামলায় তার সাজা হওয়াকে ‘অন্যায়’ আখ্যা দিয়ে তিনি বলেন, এই মামলায় প্রকৃতপক্ষে বর্তমান প্রধানমন্ত্রী এবং তার পুত্রের শাস্তি হওয়া উচিত ছিল। তিনি আরও বলেন, এই রায় বিচার বিভাগের বিশ্বাসযোগ্যতা আরও খর্ব করেছে। বিচারকদের বিরুদ্ধে স্বৈরাচারের পক্ষে কাজ করার অভিযোগ তুলে ইমরান বলেন, যারা স্বৈরশাসনের নির্দেশ মেনে চলে, তাদের পুরস্কৃত করা হয়।  


১৯৭১ সালের ঘটনা উল্লেখ করে ইমরান খান পাকিস্তানের হামুদুর রহমান কমিশনের প্রতিবেদন পড়ে দেখার আহ্বান জানান। তিনি মনে করেন, সেই সময়ের ভুল নীতির কারণে দেশ বিভক্ত হয়েছিল। বর্তমান পরিস্থিতিও একই ধরনের বিপজ্জনক পথ অনুসরণ করছে।  


ইমরান খান তার দাতব্য কাজের প্রসঙ্গেও কথা বলেন। শওকত খানুম হাসপাতাল এবং নমাল বিশ্ববিদ্যালয়ের মতো আল-কাদির বিশ্ববিদ্যালয়ও জনসাধারণের জন্য প্রতিষ্ঠিত একটি দাতব্য প্রতিষ্ঠান বলে তিনি দাবি করেন। তিনি বলেন, আমি বা বুশরা বিবি এই প্রকল্প থেকে কোনো আর্থিক সুবিধা পাইনি। বরং এটি শিক্ষার্থীদের নবী মুহাম্মদ (সা.) এর জীবনী শেখার সুযোগ করে দেয়।  


ইমরানের সাম্প্রতিক মন্তব্যের ফলে পিটিআই এবং সরকারের মধ্যে চলমান সমঝোতা আলোচনা এখন অনিশ্চয়তার মধ্যে পড়েছে। তার সামরিক বাহিনী সম্পর্কিত মন্তব্য সেনাবাহিনীর সঙ্গে আলোচনার পরিবেশ আরও কঠিন করে তুলতে পারে। এর আগে সেনাপ্রধানের পক্ষ থেকে পিটিআই নেতাদের জানানো হয়েছিল, ইমরান খান সেনাবাহিনীর বিরুদ্ধে কোনো মন্তব্য করতে পারবেন না।  


ইমরান বর্তমানে কারাগারে আছেন। তার পক্ষ থেকে এক্সে পোস্ট করা হয়েছে। তার এ ধরনের বক্তব্য পাকিস্তানের রাজনৈতিক অঙ্গনে নতুন করে উত্তেজনা সৃষ্টি করেছে। ইমরানের সমর্থকরা তার মুক্তির দাবিতে সরব হলেও সরকারের অবস্থান কঠোর।  


পাকিস্তানে ইমরান খানের সাম্প্রতিক বক্তব্য শুধু রাজনৈতিক নয়, সামাজিকভাবেও প্রভাব ফেলেছে। তার অভিযোগ ও সামরিক শাসনের সমালোচনার ফলে দেশটির রাজনৈতিক পরিস্থিতি আরও জটিল হতে পারে বলে ধারণা করা হচ্ছে।