ভারতের মণিপুরে ফের সহিংসতা ছড়িয়ে পড়েছে। শুক্রবার মেইতেইদের পবিত্র স্থান ‘কংবা মারু’তে প্রার্থনারত ভক্তদের লক্ষ্য করে পাহাড় থেকে গুলি চালিয়েছে কুকি জঙ্গিরা। এতে সাত রাউন্ড গুলি ছোড়া হয় বলে জানিয়েছে নিরাপত্তা বাহিনী। ঘটনার পরপরই এলাকায় অতিরিক্ত নিরাপত্তা বাহিনী মোতায়েন করা হয়েছে।
এর একদিন আগেই মণিপুরের সশস্ত্র মেইতেই গোষ্ঠী নিরাপত্তা বাহিনীর কাছে ২৪৬টি অস্ত্র জমা দেয়। তার ঠিক পরের দিনই এই গুলির ঘটনা ঘটলো, যা নতুন করে উত্তেজনা সৃষ্টি করেছে। তবে এই হামলায় কোনো হতাহতের খবর পাওয়া যায়নি বলে জানিয়েছেন নিরাপত্তা বাহিনীর কর্মকর্তারা।
গুলির ঘটনার পর আশপাশের গ্রাম থেকে শত শত মানুষ রাস্তায় নেমে বিক্ষোভ করেন। তারা পাহাড়ে থাকা জঙ্গিদের বাঙ্কার ভেঙে দেওয়ার দাবি জানান। পাশাপাশি মেইতেই সম্প্রদায়ের নিরাপত্তা নিশ্চিত করার আহ্বান জানান বিক্ষোভকারীরা। বিক্ষোভের কারণে কিছু সময়ের জন্য সড়ক চলাচল ব্যাহত হয়।
এদিকে মণিপুরে লুট করা ও অবৈধ অস্ত্র জমা দেওয়ার সময়সীমা বাড়ানো হয়েছে। নতুন সিদ্ধান্ত অনুযায়ী, আগামী ৬ মার্চ বিকেল ৪টা পর্যন্ত অস্ত্র জমা দেওয়া যাবে বলে জানিয়েছে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ।
২০২৩ সালের মে মাস থেকে মণিপুরে জাতিগত সংঘাত চলছে। রাজ্যের আধা সামরিক বাহিনী ও পুলিশের অস্ত্রাগার লুট করে প্রায় ৬ হাজার অস্ত্র নিয়ে যায় বিদ্রোহীরা। তখন থেকে রাজ্যজুড়ে সহিংসতা অব্যাহত রয়েছে।
এখন পর্যন্ত সংঘর্ষে ২৫০ জনেরও বেশি মানুষ প্রাণ হারিয়েছেন। হামলার শিকার হয়েছেন অসংখ্য সাধারণ মানুষ। এছাড়া বিভিন্ন এলাকায় ভাঙচুর করা হয়েছে মন্দিরসহ একাধিক ধর্মীয় স্থাপনা।
নিরাপত্তা বিশ্লেষকদের মতে, মণিপুরে শান্তি ফেরানোর জন্য উভয় গোষ্ঠীর মধ্যে সমঝোতা জরুরি। তবে সাম্প্রতিক হামলার পর পরিস্থিতি আরও জটিল হয়ে উঠতে পারে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে।
নাগরিকদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে মণিপুর সরকারের পাশাপাশি কেন্দ্রীয় সরকারও কাজ করছে। তবে পরিস্থিতি কতটা নিয়ন্ত্রণে আনা সম্ভব হবে, তা নিয়ে এখনো অনিশ্চয়তা রয়ে গেছে।
আপনার মতামত লিখুন :
বি: দ্র: প্রিয় পাঠক সমালোচনা আপনার অধিকার । তবে ভাষাটাও মার্জিত হতে হবে। সাথে থাকার জন্য ধন্যবাদ ।