টঙ্গীতে শুরু হল ৫৮তম বিশ্ব ইজতেমা: মাগরিবের আম বয়ানে আনুষ্ঠানিকতা

টঙ্গীর তুরাগতীরে গতকাল বৃহস্পতিবার বাদ মাগরিব আম বয়ানের মাধ্যমে ৫৮তম বিশ্ব ইজতেমার মূল আনুষ্ঠানিকতা শুরু হয়েছে। এবারের ইজতেমার প্রথম পর্বটি অন্যান্য বছরের তুলনায় একটু ভিন্নভাবে শুরু হয়েছে। ইজতেমা উপলক্ষে মুসল্লিদের নিরাপত্তা এবং সুবিধার্থে ব্যাপক প্রস্তুতি গ্রহণ করা হয়েছে।

বিশ্ব ইজতেমার প্রথম পর্বের আনুষ্ঠানিকতা শুরু হয় ভারতের মাওলানা ইব্রাহিম দেওলার আম বয়ানের মাধ্যমে। বয়ানের তরজমা করেন বাংলাদেশের মাওলানা জুবায়ের। এবার মাগরিবের নামাজের পর আম বয়ান শুরু হওয়ায় ইজতেমার সূচনা কিছুটা দেরিতে হয়েছে, যা বিগত বছরগুলোতে সাধারণত বাদ ফজর আম বয়ানের মাধ্যমে শুরু হত। 

ইজতেমার এই প্রথম পর্বে পাকিস্তান, ভারত, এবং বাংলাদেশের ওলামায়ে কেরাম অংশগ্রহণ করছেন। শুক্রবার বাদ ফজর মাওলানা জিয়া উল হক বয়ান করবেন। সকাল ১০টায় বিভিন্ন খিত্তায় তালিমের আমল অনুষ্ঠিত হবে, এবং দুপুরে বৃহত্তম জুমার নামাজ অনুষ্ঠিত হবে। ইজতেমায় আগত মুসল্লিরা শহরের বিভিন্ন খিত্তায় অবস্থান করছেন এবং তাদের জন্য নানা ধরনের তত্ত্বাবধান ও দিকনির্দেশনা প্রদান করা হচ্ছে।

বিশ্ব ইজতেমায় অংশগ্রহণকারী মুসল্লিদের সুবিধার্থে ১৪টি বিশেষ ট্রেন সার্ভিস চালু করেছে রেলওয়ে, পাশাপাশি মহাসড়কে যানজট এড়ানোর জন্য কঠোর ট্রাফিক ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়েছে। নিরাপত্তার জন্য প্রায় ১০ হাজার আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্যদের মোতায়েন করা হয়েছে। 

এবারের ইজতেমা দুই ধাপে অনুষ্ঠিত হচ্ছে। প্রথম পর্ব ৩১ জানুয়ারি থেকে ২ ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত চলবে এবং আখেরি মোনাজাতের মধ্য দিয়ে শেষ হবে। দ্বিতীয় পর্ব ৩ ফেব্রুয়ারি শুরু হয়ে ৫ ফেব্রুয়ারি আখেরি মোনাজাতের মাধ্যমে শেষ হবে।

এছাড়া, টঙ্গী ও আশেপাশের এলাকায় ইজতেমায় অংশগ্রহণকারী মুসল্লিদের জন্য বিশেষভাবে ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে। ধর্মীয় পরিবেশে শান্তি ও সম্প্রীতি রক্ষার জন্য ইজতেমা ময়দানে শুরায়ী নেজামের তত্ত্বাবধানে অনুষ্ঠান পরিচালিত হচ্ছে। 

বিশ্ব ইজতেমা মুসলিম উম্মাহর এক বড় মিলনমেলা হিসেবে পরিচিত, যেখানে ধর্মীয় বক্তৃতা, বয়ান এবং নানা ইসলামিক শিক্ষা প্রদানের মাধ্যমে মুসলমানরা নিজেদের জীবনকে আরও উন্নত করতে চেষ্টা করেন। এবারের ইজতেমা সবার জন্য এক অনন্য অভিজ্ঞতা হিসেবে গণ্য হচ্ছে, যেখানে ধর্মীয় ও আধ্যাত্মিক শিক্ষা লাভের সুযোগ রয়েছে। 

এমন একটি মহা আয়োজনের মধ্যে দিয়ে বিশ্বের বিভিন্ন দেশ থেকে আগত মুসল্লিরা একত্রিত হয়ে তাদের ধর্মীয় কার্যক্রম সম্পাদন করছেন।