ঢাকায় নিযুক্ত সৌদি আরবের রাষ্ট্রদূত ঈসা বিন ইউসুফ আল দুহাইলানকে ব্ল্যাকমেইল করে ৫ মিলিয়ন ডলার দাবি করার অভিযোগ উঠেছে আলোচিত মডেল মেঘনা আলমের বিরুদ্ধে। তবে আদালতে শুনানিকালে চাঞ্চল্যকরভাবে ওই কূটনীতিককে নিজের স্বামী দাবি করেছেন তিনি।
বৃহস্পতিবার (১৭ এপ্রিল) সকালে মেঘনা আলম ও তার সহযোগী দেওয়ান সমিরকে ঢাকার মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট মাসুম মিয়ার আদালতে হাজির করা হয়। রাজধানীর ধানমন্ডি থানায় বিদেশি কূটনীতিকদের ‘হানি ট্র্যাপে’ ফেলে ব্ল্যাকমেইল করার অভিযোগে দায়ের করা একটি মামলায় তাদেরকে গ্রেপ্তার দেখানোর আবেদন করে পুলিশ। শুনানি শেষে আদালত তাদের গ্রেপ্তার দেখানোর নির্দেশ দেন এবং দেওয়ান সমিরের পাঁচ দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেন।
শুনানিকালে রাষ্ট্রপক্ষে উপস্থিত পাবলিক প্রসিকিউটর বলেন, এই আসামিরা বিদেশি কূটনীতিকদের সঙ্গে প্রেমের সম্পর্ক গড়ে তোলে এবং পরে ব্ল্যাকমেইল করে মোটা অঙ্কের অর্থ আদায়ে চক্র গড়ে তোলে। সর্বশেষ সৌদি রাষ্ট্রদূতের কাছ থেকে ৫ মিলিয়ন ডলার দাবি করা হয় বলেও অভিযোগ তোলেন তিনি।
এ সময় নিজের নাম ‘মেঘলা’ নয়, ‘মেঘনা’—এভাবে ঠিকভাবে উচ্চারণের অনুরোধ জানান আসামি মেঘনা আলম। বিচারক তার বক্তব্যের অনুমতি দিলে তিনি বলেন, “আমাকে বিনা বিচারে আটক রাখা হয়েছে। সৌদি রাষ্ট্রদূত ঈসার সঙ্গে আমার বিয়ে হয়েছে। তার সঙ্গে আমার একটি সম্পর্ক রয়েছে, আর কারো সঙ্গে না।”
মেঘনা বলেন, “ঈসা অভিযোগ করেছেন আমি নাকি তার সন্তান নষ্ট করে ফেলেছি, যা সত্য নয়। আমি ঈসাকে অনুরোধ করি এসব গুজব ছড়ানো থেকে বিরত থাকতে। পরবর্তীতে আমি পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের ডিজি শফিকুরের সঙ্গে বিষয়টি নিয়ে কথা বলি, এরপরই পুলিশ আমাকে গ্রেপ্তার করে।”
অন্যদিকে, মেঘনার সহযোগী দেওয়ান সমির আদালতে বলেন, “আমি মেঘনা আলমের কোনো বয়ফ্রেন্ড নই। আমার কোনো সম্পৃক্ততা নেই। আমি প্রবাসে ছিলাম, একজন রেমিট্যান্স যোদ্ধা। আমাকে অহেতুক এই মামলায় জড়ানো হয়েছে।”
ডিবি পুলিশ গত ৯ এপ্রিল রাতে রাজধানীর বসুন্ধরার একটি বাসা থেকে মেঘনা আলমকে আটক করে। পরে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের আদেশে ১০ এপ্রিল রাতে আদালত তাকে বিশেষ ক্ষমতা আইনে ৩০ দিনের আটকাদেশ দেন। তবে তার বিরুদ্ধে সুনির্দিষ্ট অভিযোগের বিস্তারিত প্রকাশ না হওয়ায় ঘটনাটি সামাজিক ও গণমাধ্যমে ব্যাপক আলোচনার জন্ম দেয়।
এ মামলায় সৌদি রাষ্ট্রদূতের ব্যক্তিগত জীবনের প্রসঙ্গ উঠে আসায় বিষয়টি আরও বেশি আলোচিত হয়ে উঠেছে। অনেকেই প্রশ্ন তুলছেন—একজন বিদেশি রাষ্ট্রদূতের সঙ্গে ব্যক্তিগত সম্পর্কের এমন গুরুতর অভিযোগে কূটনৈতিক রীতিনীতি কীভাবে প্রতিফলিত হবে এবং এর রাজনৈতিক প্রভাব কতটুকু হতে পারে।