নোয়াখালীর কোম্পানীগঞ্জে উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিসের সহকারী হিসাব রক্ষক জনি আইচ তার কার্যালয়ে লাঞ্ছিত হওয়ার অভিযোগ তুলেছেন। বুধবার সকাল সাড়ে ১১টায় অফিস সহকারীর কার্যালয়ে এ ঘটনা ঘটে। অভিযোগ অনুসারে, অক্সফোর্ড স্কুল অ্যান্ড কলেজের ডাইরেক্টর পরিচয়ে আব্দুল কাদের রাহীম নামের একজন ইংরেজি ভার্সনের পাঠ্যবই চেয়ে উত্তেজিত হয়ে তার টেবিলের ল্যাপটপ বন্ধ করে দেন। এরপর রাহীম জনি আইচের দিকে তেড়ে এসে তার হাতে আঘাত করেন এবং হুমকি দিয়ে চলে যান।
অভিযোগ নিয়ে জনি আইচ জানান, উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিস থেকে ইংরেজি ভার্সনের বই বিতরণ করা হয় না, বরং জেলা শিক্ষা অফিস তালিকা অনুযায়ী বই সরবরাহ করে। এই তথ্য জানানো সত্ত্বেও রাহীম উত্তেজিত হয়ে তার প্রতি আক্রমণাত্মক আচরণ করেন। লাঞ্ছনার পর তিনি বিষয়টি সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষকে অবহিত করেছেন।
অন্যদিকে, অক্সফোর্ড স্কুল অ্যান্ড কলেজের অধ্যক্ষ মনির হোসাইন অভিযোগটি অস্বীকার করেন। তিনি দাবি করেন, জনি আইচ প্রতি বছর বই দেওয়ার প্রক্রিয়ায় হয়রানি করেন এবং টাকা ছাড়া কাজ করেন না। তার মতে, ঘটনাটি কেবল বাকবিতণ্ডা ছিল এবং কোনো লাঞ্ছনার ঘটনা ঘটেনি।
কোম্পানীগঞ্জ উপজেলা সহকারী প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা এটিএম এহছানুল হক চৌধুরী জানান, তিনি ঘটনা সম্পর্কে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তাকে (ইউএনও) অবহিত করেছেন। তবে ইউএনও তানভীর ফরহাদ শামীম জানান, এ বিষয়ে তাকে আনুষ্ঠানিকভাবে কিছু জানানো হয়নি, তবে তিনি ঘটনার বিস্তারিত জানার জন্য অনুসন্ধান করবেন।
ঘটনার সূত্রপাত হিসেবে জানা যায়, প্রথম শ্রেণি থেকে পঞ্চম শ্রেণির ইংরেজি ভার্সনের বই সরবরাহে সমস্যার অভিযোগ তুলে রাহীম উপজেলা অফিসে গিয়ে উত্তপ্ত পরিস্থিতি সৃষ্টি করেন। জনি আইচ জানান, তার কার্যালয়ে এ ধরনের বই সরবরাহের কোনো দায়িত্ব নেই, এবং তিনি তার কাজ যথাযথভাবে করছেন।
বিতর্কের পাশাপাশি জনি আইচের অভিযোগ আরও জটিল হয়ে উঠেছে, যেখানে তিনি নিজেকে শারীরিকভাবে আক্রান্ত বলে দাবি করেছেন। অন্যদিকে, অভিযুক্ত পক্ষ এ ঘটনাকে সামান্য ভুল বোঝাবুঝি হিসেবে উল্লেখ করেছেন। তবে বিষয়টি নিয়ে অফিসে আলোচনা এবং অনুসন্ধানের প্রয়োজনীয়তা দেখা দিয়েছে।
স্থানীয় সূত্র জানায়, এ ধরনের অভিযোগ ও পাল্টা অভিযোগ শিক্ষাবই বিতরণের কার্যক্রমে অস্বচ্ছতার ইঙ্গিত দেয়। বিষয়টি নিয়ে উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের নজরদারি এবং স্বচ্ছতা নিশ্চিতের দাবি উঠেছে। শিক্ষা সংশ্লিষ্ট বিষয়ে এ ধরনের বিতর্ক এড়াতে সুষ্ঠু ব্যবস্থাপনার প্রয়োজনীয়তা বিশেষভাবে অনুভূত হচ্ছে।
এদিকে, ঘটনাটি নিয়ে স্থানীয় শিক্ষক এবং অভিভাবকদের মধ্যে মিশ্র প্রতিক্রিয়া দেখা গেছে। কেউ কেউ বিষয়টি দ্রুত সমাধানের আহ্বান জানিয়েছেন। অন্যদিকে, এ ধরনের ঘটনার পুনরাবৃত্তি বন্ধে কর্তৃপক্ষের কার্যকর পদক্ষেপের দাবি জানানো হয়েছে।
তদন্তের মাধ্যমে প্রকৃত দোষীদের চিহ্নিত করা এবং উপযুক্ত ব্যবস্থা নেওয়া ছাড়া এই বিতর্কের মীমাংসা সম্ভব নয় বলে বিশেষজ্ঞরা মনে করছেন। সংশ্লিষ্টদের কার্যক্রম স্বচ্ছতার আওতায় আনতে এ ঘটনাটি শিক্ষা খাতে দায়িত্বশীলতা বাড়ানোর একটি সুযোগ হিসেবে দেখা যেতে পারে।
আপনার মতামত লিখুন :
বি: দ্র: প্রিয় পাঠক সমালোচনা আপনার অধিকার । তবে ভাষাটাও মার্জিত হতে হবে। সাথে থাকার জন্য ধন্যবাদ ।