নাম মিজান। পেশায় স্কুল শিক্ষক। পুরুষ হয়েও নারী কণ্ঠে শাবনূর অভিনীত সিনেমার গান গেয়ে বেড়ান তিনি। মানুষকে বিনোদন দেন, নিজেও আনন্দে থাকেন। না দেখলে কেউ বুঝতেই পারবে না গান গাইছে কোনো পুরুষ। মনে হবে কনক চাঁপা কিংবা সাবিনা ইয়াসমিনের কণ্ঠে শাবনূরের ছবির গান। সম্প্রতি এফডিসিতে এসেছিলেন তিনি। জহির রায়হান কালার ল্যাবের সামনে বসে তিনি গান শুনিয়ে মুগ্ধ করেছেন উৎসুক দর্শকদের। সেখানে উপস্থিত ছিলেন শাবনূরের ‘প্রেমের তাজমহল’ ছবির চিত্রনাট্যকার ও সংলাপ রচয়িতা গাজী জাহাঙ্গীরও।
সবার অনুরোধে নারী কণ্ঠে ‘প্রেমের তাজমহল’ গান গেয়ে শোনান তিনি। মনে হয় যেন কনক চাঁপারই গলা। সে এক বিস্ময়কর প্রতিভা বটে। গানের পাশাপাশি সিনেমার আবহ সংগীতও চমৎকার করে গাইতে পারেন। বিশেষ করে শাবনূরের সিনেমার বিষাদের সুরগুলো খুব ভালো পারেন। শাবনূরের ১৫৮টি সিনেমার গান মুখস্ত তার। এছাড়াও মৌসুমী ও পপির ভক্ত তিনি। তাদের গানও গেয়ে গেয়ে বেড়ান। কেন অদ্ভূত এই নেশা? জবাবে মিজান বললেন, গান গাওয়ার নেশা তার খুব। ছোট বেলা থেকেই এন্ড্রু কিশোর, খালিদ হাসান মিলুর গান শোনে শোনে গাইতেন। বিশেষ করে সাবিনা ইয়াসমিন, কনক চাঁপা, ডলি সায়ন্তনীসহ আরও যারা শাবনূর অভিনীত সিনেমায় গান করেছেন তাদের সকলের গান মুখস্ত করেছেন তিনি সেই ছোটবেলা থেকেই। একদম তাদের মত করে গাইতেও পারেন।
কিন্তু নানা কারণে শিল্পী হয়ে উঠা হয়নি মিজানের। তাই নিজেকে বিনোদিত করেন গানে গানে। বিনোদন দেন অন্যদেরও। অন্যের গলা কীভাবে রপ্ত করলেন? উত্তর দিলেন মিজান, ‘আমি চিত্রনায়িকা শাবনূরের ভক্ত। সেই ছোটবেলা থেকে তার ছবি দেখে বড় হয়েছি। তার শুরু থেকে অভিনীত ১৫৮টি সিনেমার সব গান আমি মুখস্ত করেছি। আর সেই ছবিগুলোতে যারা গান গেয়েছেন তাদের মত করে গাইতে চেষ্টা করি। এভাবে চেষ্টা করতে করতেই মূল শিল্পীদের মতো করে গাইতে পারি।’ একজন পুরুষ হয়ে নারী কণ্ঠে এমন গান ও সুর ধারণ করাটা অনেক কষ্টসাধ্য হলেও সেই কাজটিই তিনি রপ্ত করেছেন অনেক দিনের চেষ্টায় আর প্রিয় তারকার প্রতি শ্রদ্ধায় ও ভালোবাসায়।
তিনি আরও বলেন, ‘পুরুষ কণ্ঠে যতটা ভালো পারি, মেয়ে কণ্ঠেও ঠিক ততটাই পারি। তবে সেটা রপ্ত করতে অনেক সময় লেগেছে। অন্য সবার গানে একটু একটু কষ্ট হলেও ডলি সায়ন্তনীর মত করে গাইতে আমার কাছে সবচেয়ে সহজ মনে হয়! উনার কণ্ঠের ধারার সাথে আমি খুব সহজেই ম্যাচ করতে পারি।’ মিজানের মনে আছে স্বপ্নের নায়িকা শাবনূরের সাথে দেখা না হওয়ারও আক্ষেপ। সুযোগ পেলে শাবনূরের সঙ্গেও দেখা করতে চান তিনি। আর তাকে জানাতে চান তার প্রতি ভালোলাগার কথা। সেই সাথে তাকে শোনাতে চান নিজের কণ্ঠে শাবনূরের ছবিগুলোর কিছু গানও। মিজানের গ্রামের বাড়ি যশোর। তিনি বর্তমানে থাকেন কুমিল্লায়। কুমিল্লা জেলার হোমনা থানাধীন গৌরিপুর এলাকায় অবস্থিত মাতৃছায়া স্কুল এন্ড কলেজে রসায়ন বিভাগে শিক্ষকতা করেন তিনি।
ইনিউজ ৭১/এম.আর
আপনার মতামত লিখুন :
বি: দ্র: প্রিয় পাঠক সমালোচনা আপনার অধিকার । তবে ভাষাটাও মার্জিত হতে হবে। সাথে থাকার জন্য ধন্যবাদ ।