বিয়ের এক মাস না পেরুতেই তরুণ প্রজন্মের সুপরিচিত গায়ক ইলিয়াস হোসাইন ও অভিনেত্রী সুবাহ শাহ হুমায়রার সংসারে ভাঙনের সুর বাজছে। সুবাহকে ডিভোর্স দিয়ে দ্বিতীয় স্ত্রী কারিন নাজের সঙ্গে সংসার করতে চান এই গায়ক। এমনকি সুবাহর বিরুদ্ধে ফাঁসিয়ে বিয়ে করার অভিযোগে রমনা মডেল থানায় জিডি করেছেন তিনি। জিডি নম্বর ১৬২২।
অন্যদিকে স্বামীর বিরুদ্ধে নির্যাতনের অভিযোগ এনে বনানী থানায় সাধারণ ডায়েরি (জিডি) করেছেন সুবাহ। জিডি নম্বর ২৫১৬। তারা দুজনই গুরুতর অভিযোগের কথা উল্লেখ করেছেন। তারা পরস্পরের নিকট শারীরিক নির্যাতন, মান-সম্মানহানি, নারী নির্যাতন মামলার ভয় ও জীবনের নিরাপত্তাহীনতার বিষয় উল্লেখ করেছেন।
তবে ইলিয়াসের সঙ্গেই সংসার করতে চান জানিয়ে সুবাহ গণমাধ্যমকে বলেন, 'আমি তো ছাড়ার জন্য বিয়ে করিনি। আমি বিয়ে করেছি সংসার করার জন্য। আমি একটাই বিয়ে করেছি। বিয়ে করা আমার পেশা না। আমি ওকে ছাড়ব না। আমি ইলিয়াসের ভাতই খাব। নুন-মরিচ দিয়ে ভাত খাওয়ালেও ইলিয়াসের ঘর করব। আমার দিক থেকে ডিভোর্স দেব না।'
অন্যদিকে ইলিয়াস বলেন, 'আমি কেন, দুনিয়ার কেউ ওর (সুবাহ) সঙ্গে সংসার করতে পারবে না। ওর সাথে বিয়ে না হওয়াতে নাসির অনেক ভাগ্যবান। অল্প কয়েকদিনে যা দেখলাম, তা বলার বাহিরে। আমার নামে যাতে বদনাম করতে না পারে, সেই জন্য বিয়ে করেছি। কেউ যাতে কোনো ধরনের বদনাম না দিতে পারে। আমি সুবাহকে ডির্ভোস দেয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছি। আমি কারিনের সঙ্গেই থাকতে চাই।'
তিনি আরও বলেন, 'সুবাহ আমার খুব ভালো বন্ধু ছিল। ও (সুবাহ) ভালো করেই জানত, আমার দ্বিতীয় স্ত্রীর সঙ্গে বেশ কয়েক মাস ধরে দূরত্ব চলছিল। এই সুযোগটা কাজে লাগিয়েছে। যেটা আমি বুঝতে পারিনি। বিয়ে না করলে আমার মানসম্মান, ক্যারিয়ার শেষ করে দেয়ার হুমকিও দিয়েছে। সুবাহ বেশ কিছুদিন ধরে বিভিন্নভাবে আমাকে ব্ল্যাকমেইল করতেছিল। মানসম্মানের কথা চিন্তা করে এতদিন চুপ ছিলাম। কয়েকদিন ধরে একের পর এক আপত্তিকার ঘটনা ঘটছে, যা আমার জন্য বিব্রতকর। পরে ভেবে দেখলাম, সত্যটা সবার জানা উচিত। আর তাই মুখ খুলতে বাধ্য হলাম।'
এই গায়কের ভাষ্য, 'সুবাহর সঙ্গে আমার আড়াই বছরের পরিচয়। তবে বেশি কাছাকাছি আসা হয় আড়াই মাস হবে। বন্ধু হিসেবে কথা বলার জন্য যোগাযোগ করেছিলাম। তবে বুঝতে পারিনি আমার সরলতার সুযোগ নিয়ে ফাঁসাবে। বিয়ে তো আমি করতে চাইনি। জোর করে ব্ল্যাকমেইল করে বিভিন্ন হুমকি দিয়ে বিয়ে করতে বাধ্য করেছে। আমি বিয়েতে রাজি ছিলাম না।'
দ্বিতীয় স্ত্রীর সঙ্গে ডিভোর্স প্রসঙ্গে ইলিয়াস জানান, 'আমাদের ডির্ভোস হয়নি। ডির্ভোস দেওয়ার জন্য আমাকে চাপ প্রয়োগ করে সুবাহ। কারিন আমার স্ত্রী৷ মাঝে কারিনের সঙ্গে কয়েক মাস আমার যোগাযোগ ছিল না। আর সেই সুযোগটা সুবাহ নিয়েছে। বিভিন্নভাবে ব্ল্যাকমেইল করেছে। পরে আমি কাগজ পাঠিয়েছি। তবে কারিনকে সাইন করতে না করে দিই। কারিনের সঙ্গে ডির্ভোস হওয়ার এক বছর পর বিয়ের কথা জানাবে বলেছিল সুবাহ। কিন্তু বিয়ের দশ দিনের মাথায় ছবি প্রকাশ করে৷ আমার আড়ালে ছবি তুলেছে। আমার ব্যক্তিগত কিছু ছবি ও ভিডিও দিয়ে সুবাহ আমাকে প্রতিনিয়ত ব্ল্যাকমেইল করেছে। বিয়ে না করলে এগুলো নেটে ছড়িয়ে দেবে বলে হুমকি দেয়। সেই ভয় থেকে বিয়ে করতে বাধ্য হয়েছি।'
নির্যাতনের বিষয়ে ইলিয়াস জানান, 'পরপর দুইদিন আমার গায়ে হাত তুলেছে। বিয়ের দশ দিনের মাথায় রাস্তায় গাড়ি চালানো অবস্থায় আমাকে মেরেছে। নরমাল একটি কথায় চোখে হিট করেছে। হুমকি দেয়, গাড়ি থেকে লাফিয়ে পরে আমাকে ফাঁসাবে। এছাড়াও নানান কথা বলে। আমি নিরাপত্তাহীনতায় ভুগছিলাম। জিডি করে এখন কিছুটা স্বস্তিতে আছি।'
তিনি আরও জানান, 'বাংলাদেশে পুরুষ নির্যাতন হয়। তবে তার জন্য কোনও আইন নেই। আমি নির্যাতনের শিকার। সুবাহর আসল উদ্দেশ্য কী- সেটা নিয়ে আমি কনফিউজড। কখনও আমার কাছে টাকা পয়সা চায়নি৷ কিন্তু কথায় কথায় আমার ক্যারিয়ার শেষ করে দেওয়ার হুমকি দেয়। তাই সিদ্ধান্ত চূড়ান্ত, কারিনের সঙ্গেই থাকব। সুবাহকে ডির্ভোস দেয়ার প্রস্তুতি নিচ্ছি।'
আপনার মতামত লিখুন :
বি: দ্র: প্রিয় পাঠক সমালোচনা আপনার অধিকার । তবে ভাষাটাও মার্জিত হতে হবে। সাথে থাকার জন্য ধন্যবাদ ।