'বিশ্বে বিজ্ঞান ও প্রযুক্তির ক্ষেত্রে যে দেশ যতবেশি উন্নত সে দেশ ততবেশি সমৃদ্ধি অর্জন করেছে। একবিংশ শতাব্দীর চ্যালেঞ্জ মোকাবেলায় দক্ষ প্রকৌশলী সৃষ্টির কোন বিকল্প নেই।' রোববার রাজশাহী প্রকৌশল ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের (রুয়েট) ৫ম সমাবর্তনে সভাপতির বক্তব্যে রাষ্ট্রপতি ও আচার্য মো. আবদুল হামিদ এ মন্তব্য করেন।
সমাবর্তন অনুষ্ঠানে তিনি আরো বলেন, আমাদের বিপুল মানবসম্পদ থাকা সত্তে¡ও কারিগরী ও প্রযুক্তিগত শিক্ষা কাঙ্খিত মাত্রায় অর্জিত না হওয়ায় আমরা আশানরুভাবে এগোতে পারিনি। বর্তমান সরকার কারিগরী ও প্রযুক্তিগত শিক্ষার উপর বিশেষ গুরুত্বারােপ করেছে। দেশের বিভিন্ন জেলায় বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় স্থাপন করা হচ্ছে । বিশ্ববিদ্যালয়গুলোকে আন্তর্জাতিক মানে নিয়ে যাওয়ার জন্য দীর্ঘমেয়াদী পরিকল্পনা হাতে নেয়া হয়েছে। এ পরিকল্পনার আওতায় বিশ্ববিদ্যালয়গুলোকে এযাবতকালের উল্লেখযোগ্য পরিমাণ উন্নয়ন বাজেট প্রদান ও গবেষণা বরাদ্দ প্রদান করা হচ্ছে । বিদ্যমান সুবিধাসমূহের সর্বোচ্চ ব্যবহার করে বিশ্ববিদ্যালয়গুলো গুণগত উচ্চশিক্ষা প্রদানে ব্রতী হবে বলে আমার বিশ্বাস।
সার্টিফিকেট দেয়া এবং শিক্ষার প্রসারই শেষ কথা নয় উল্লেখ করে রাষ্ট্রপতি শিক্ষকদের উদ্দেশে বলেন, আমাদের প্রয়োজন যুগোপযােগী শিক্ষা। বর্তমানে, প্রতিনিয়তই যুগের সাথে তাল মিলিয়ে শিক্ষা ব্যবস্থা পরিবর্তিত হচ্ছে। কাজেই আমাদেরও বিশ্বের সাথে তাল মিলিয়ে চলতে হবে। বাস্তব ভিত্তিক এবং প্রায়োগিক শিক্ষার উপর জোর দিতে হবে। গুণগত বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি শিক্ষার সাথে ল্যাবরেটরির ভূমিকা খুবই গুরুত্বপূর্ণ। কারণ পাঠ্যপুস্তকের পাশাপাশি গবেষণা ও হাতে-কলমে শিক্ষার মাধ্যমে প্রকৃত শিক্ষা অর্জিত হয়। এ জন্য গবেষণা ও ল্যাবরেটরি কর্মের উপর অধিক মনোনিবেশ করা জরুরি।
রাষ্ট্রপতি আরো বলেন, ‘চতুর্থ শিল্প বিপ্লবকে মাথায় রেখে ন্যানো টেকনোলোজি, রােবোটিক্স, ব্লক চেইন ম্যানেজমেন্ট, আর্টিফিশিয়াল ইন্টেলিজেন্সের মতো বিষয়গুলোকে সর্বাধিক গুরুত্ব দিতে হবে। শিক্ষা যাতে দেশের কল্যাণে, মানবতার কল্যাণে, ব্যবহৃত হয় সেদিকে সজাগ দৃষ্টি দিতে হবে। এই ব্যাপারে সংশ্লিষ্ট সকলে উদ্যোগী হবেন বলে আমার বিশ্বাস।’
‘বাংলাদেশ ২০৪১ সালের মধ্যে উন্নত সমৃদ্ধ দেশে পরিণত হওয়ার যে মহাপরিকল্পনা হাতে নিয়েছে তা বাস্তবায়নে প্রধান কারিগর হচ্ছে প্রকৌশলীরা। সুতরাং প্রকৌশলীদের স্ব স্ব দক্ষতা অর্জন করে জাতীয় উন্নয়নে অবদান রাখতে হবে।’
সনদপ্রাপ্ত প্রকৌশলীদের সম্বোধন করে তিনি বলেন, ‘তোমরাই আজকের অনুষ্ঠানের মধ্যমণি। তোমরা যে বিপুল স্বপ্ন নিয়ে এই বিশ্ববিদ্যালয় ভর্তি হয়েছিলে আজ তা পাখা মেলতে শুরু করেছে। তোমাদের স্বপ্নের পাখা আজ দিগন্ত বিস্তৃত। অর্জিত জ্ঞানের পাখায় ভর করে তোমরা দেশ গড়ার কাজে ব্রতী হবে, দেশবাসী তা প্রত্যাশা করে। এই দেশ তোমাদের দিকেই তাকিয়ে আছে। মনে রাখতে হবে, এ দেশ, এদেশের জনগণ তোমাদের এতোদিন দিয়ে এসেছে। তাদের করের অর্থেই তোমরা আজ গ্র্যাজুয়েট ও জাতির কাছে ঋণী। তোমাদের মেধা, কর্ম ও মনন দিয়ে সে খণ শোধ করতে হবে।’
সমাবর্তনে রাজশাহী প্রকৌশল ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় এর উপাচার্য প্রফেসর মো. রফিকুল ইসলাম শেখ, সমাবর্তন বক্তা প্রফেসর ড. সাইফুর রহমান, অনুষদের সম্মানিত ডীন ও বিভাগীয় প্রধানগণ, শিক্ষকবৃন্দ, আমন্ত্রিত অতিথি, কর্মকর্তা ও কর্মচারী, গণমাধ্যমের প্রতিনিধিবৃন্দ এবং ডিগ্রি অর্জনকারী প্রিয় গ্রাজুয়েটবৃন্দ উপস্থিত ছিলেন।
ইনিউজ ৭১/টি.টি. রাকিব
আপনার মতামত লিখুন :
বি: দ্র: প্রিয় পাঠক সমালোচনা আপনার অধিকার । তবে ভাষাটাও মার্জিত হতে হবে। সাথে থাকার জন্য ধন্যবাদ ।