রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় (রাবি) মতিহার হলে কোন সিটে কে আছে, কে কবে সিট ছাড়বে, রুম থেকে উচ্চস্বরে গান-বাজনা করে কাউকে তোয়াক্কা না করা, সিনিয়রদের সঙ্গে অসাদাচারণ করাসহ বিভিন্ন অভিযোগ উঠেছে এক ছাত্রলীগ নেতার বিরুদ্ধে। আর এসব ঘটনায় ছাত্রলীগের ওই নেতার এসব বিতর্কিত কর্মকান্ডে অতিষ্ঠ বিশ্ববিদ্যালয়ের মতিহার হলের শিক্ষার্থীরা। অভিযুক্ত ছাত্রলীগের নেতার নাম মোহন মন্ডল। সে বিশ্ববিদ্যালয়ের সামাজিক বিজ্ঞান অনুষদ ছাত্রলীগের যুগ্ম-সাধারণ সম্পাদক ও শাখা ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক ফয়সাল আহমেদ রুনুর অনুসারী।
মতিহার হলের আবাসিক শিক্ষার্থীদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, মোহন হলের কোন সিটে কে আছে তা দেখভাল করে, কে কবে সিট ছাড়বে এসবও জানতে চায় মোহন মন্ডল। সে তার রুম থেকে উচ্চস্বরে গান-বাজনা করে কাউকে তোয়াক্কা না করে। অভিযোগ আছে নানা সময়ে সিনিয়রদের সঙ্গে অসাদাচারণ করার।
এ নিয়ে মতিহার হলের প্রাধ্যক্ষ অধ্যাপক মুসতাক আহমেদ বলেন, কিছুদিন ধরে মতিহার হল ছাত্রলীগের বিরুদ্ধে অভিযোগ আসছে আমার কাছে। তার ভিতরে মোহন অন্যতম। আমি ওর সঙ্গে বসে বিষয়টি ঠিক করব খুব শিগগিরি।
মতিহার হল সূত্রে জানা গেছে, গত ফেব্রয়ারিতে হলের ১২০ নম্বর কক্ষের আবাসিক শিক্ষার্থী ইউসুফের মাস্টার্স পরীক্ষা শেষ হওয়ায় তিনি হল ত্যাগ করেন। ওই সিটে জনি নামের প্রথম বর্ষের এক শিক্ষার্থীকে তুলে দেন মোহন। পরে ওই শিক্ষার্থীর অবস্থানের খবর পেয়ে হল প্রাধ্যক্ষ ওই শিক্ষার্থীকে হল থেকে বের করে দেন। ঘটনার একপর্যায়ে ১২০ নম্বর কক্ষে তালা লাগিয়ে দেন তারা। পরে এই ঘটনার জেরে পদত্যাগ করে মতিহার হলে তৎকালীন প্রাধ্যক্ষ অধ্যাপক আলী আসগর।
এদিকে, শুক্রবার মতিহার হলের ১৪৭ ও ২৫০ নম্বর কক্ষ থেকে দুটি ফোন চুরির ঘটনায় শিক্ষার্থীরা হল গেইটে অবস্থান নিলে বিক্ষোভকারীদের তাড়িয়ে দেয় হল শাখা ছাত্রলীগের নেতাকর্মীরা। এই ঘটনার সংবাদ সংগ্রহ করতে গেলে ইংরেজি দৈনিক বাংলাদেশ টুডে’র বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিনিধি মুজাহিদ হোসেন ছবি তুলতে গেলে তাকে ধাক্কা দেয়ার অভিযোগও আছে মোহন মন্ডলের বিরুদ্ধে।
এছাড়া ওইদিন রাতে হলের এক আবাসিক শিক্ষার্থীর কিছু বন্ধু হলের ছাদে আড্ডা দিতে এসে উচ্চস্বরে হাসাহাসি করলে মোহনসহ কিছু ছাত্রলীগ কর্মী স্ট্যাম্প নিয়ে তাদেরকে মারতে উদ্যত হয়। একপর্যায়ে তারা চলে যায়। আবাসিক শিক্ষার্থীরা অভিযোগ করে বলে, সে ছাত্রলীগ করে ঠিক আছে কিন্তু সে তো এভাবে এ্যাপ্রোচ করতে পারে না। এটা রাবি ছাত্রলীগের সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদকের নজর দেয়া উচিৎ।
তবে ছাত্রলীগ নেতা মোহন মন্ডল এর সাথে কথা বলতে গেলে তিনি এসব বিষয়গুলি অস্বীকার করে ফোন কেটে দেয়। ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক ফয়সাল আহমেদ রুনু বলেন, মোহনের বিষয়ে এ ধরণের অভিযোগ আমাদের কাছে কেউ করেনি। তার বিরুদ্ধে কোন ধরনের অভিযোগ আসলে আমরা তাৎক্ষণিকভাবে ব্যবস্থা গ্রহণ করব।
এ বিষয়ে কেন্দ্রীয় ছাত্রলীগের সহ-সভাপতি ও রাবি শাখা ছাত্রলীগের সাবেক সহ-সভাপতি খালেদ হাসান নয়ন বলেন, আমি এটা নিয়ে রাবি ছাত্রলীগের সভাপতি সাধারণ সম্পাদকের সাথে কথা বলছি। কেন্দ্রীয় ছাত্রলীগের সভাপতি (ভারপ্রাপ্ত) আল নাহিয়ান খান জয় এ ঘটনায় দুঃখ প্রকাশ করেন। তিনি বলেন রাবি ছাত্রলীগ ইউনিটের সাথে যোগাযোগ করে বিষয়টি জানার চেষ্টা করছি।
ইনিউজ ৭১/টি.টি. রাকিব
আপনার মতামত লিখুন :
বি: দ্র: প্রিয় পাঠক সমালোচনা আপনার অধিকার । তবে ভাষাটাও মার্জিত হতে হবে। সাথে থাকার জন্য ধন্যবাদ ।