প্রকাশ: ২ জুন ২০২৫, ১৮:৩৪
নাম পরিবর্তন নিয়ে শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের সিদ্ধান্তে উত্তাল হয়েছে সমাজ ও রাজনীতি। স্বাধীন বাংলাদেশের প্রথম প্রধানমন্ত্রী তাজউদ্দীন আহমদের নামে প্রতিষ্ঠিত ‘সরকারি শহীদ তাজউদ্দীন আহমদ ডিগ্রি কলেজ’ থেকে ‘কাপাসিয়া সরকারি ডিগ্রি কলেজ’ নামকরণ করা হয়েছে। এই সিদ্ধান্তের পর তাজউদ্দীন আহমদের পরিবার এবং অনেক সচেতন নাগরিক কঠোর আপত্তি জানিয়েছেন।
তাজউদ্দীন আহমদের ছেলে এবং সাবেক স্বরাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী সোহেল তাজ বিষয়টি নিয়ে সরব হয়েছেন। সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে তিনি নিজের অবিশ্বাস এবং অসন্তোষ প্রকাশ করেছেন। এছাড়াও, অন্তর্বর্তী সরকারের সংস্কৃতি উপদেষ্টা মোস্তফা সরয়ার ফারুকী বিষয়টি নিয়ে ফেসবুকে একটি পোস্ট করেছেন যেখানে তিনি মন্ত্রণালয়ের পক্ষ থেকে ইতিমধ্যেই নাম পরিবর্তন না করার নির্দেশনা দেয়ার তথ্য দিয়েছেন। তবে বিষয়টি প্রক্রিয়াধীন রয়েছে বলে জানান তিনি।
মোস্তফা সরয়ার ফারুকী পোস্টে মুক্তিযুদ্ধের গুরুত্ব এবং জাতির নায়কদের প্রতি শ্রদ্ধার কথা উল্লেখ করেন। তিনি বলেন, মুক্তিযুদ্ধ এবং জুলাইয়ের ঘটনা কখনই বিপরীতধর্মী নয়। যেটি আমাদের গণতান্ত্রিক, জুলুমমুক্ত এবং সার্বভৌম বাংলাদেশের স্বপ্ন দেখিয়েছিলো। তিনি আরো যোগ করেন, মুক্তিযুদ্ধের স্বপ্ন এখনো বাস্তবায়িত হয়নি বলে দেশে কিছু অপ্রিয় ঘটনা ঘটে।
এ প্রসঙ্গে তিনি বলেন, যারা মুক্তিযুদ্ধের ইতিহাসকে ঢাকতে চায় এবং জুলাইয়ের ঘটনাকে নিন্দিত করার চেষ্টা করে, তারা মূলত দেশের ইতিহাস থেকে বিচ্যুত হয়ে গেছে। গুম, বিদ্রোহ, লুটপাটের মতো কুশীলবদের অপকর্ম জাতির ঐতিহ্যকে কলঙ্কিত করতে পারে না।
নাম পরিবর্তন নিয়ে চলমান বিতর্ক দেশজুড়ে আলোচনার কেন্দ্রবিন্দুতে রয়েছে। অনেকেই মনে করেন, তাজউদ্দীন আহমদের নাম রেখে কলেজের মর্যাদা ও ইতিহাস সংরক্ষণ করা উচিত। শিক্ষা মন্ত্রণালয় এবং সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের কাছে এই বিষয়ের যথাযথ ও দ্রুত নিষ্পত্তির প্রত্যাশা প্রকাশ করছে জনসমাজ।
এছাড়া, সমাজের বিভিন্ন স্তর থেকে এই সিদ্ধান্ত পুনর্বিবেচনার দাবি উঠেছে যাতে বাংলাদেশের মহান মুক্তিযুদ্ধের নায়ক ও ইতিহাসের প্রতি যথাযথ সম্মান জানানো যায়। শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের নামের মাধ্যমে ইতিহাস ও সংস্কৃতির সংরক্ষণ হওয়াটা অত্যন্ত জরুরি বলে মনে করছেন সকলে।