প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূসের কাছে বিচারবিভাগ ও জনপ্রশাসন সংস্কার কমিশনের প্রতিবেদন আনুষ্ঠানিকভাবে হস্তান্তর করা হয়েছে। বুধবার দুপুর ১টার দিকে রাজধানীর রাষ্ট্রীয় অতিথি ভবন যমুনায় এই প্রতিবেদন প্রদান করা হয়। বিচারবিভাগ সংস্কার কমিশনের প্রধান সাবেক বিচারপতি শাহ আবু নাঈম মমিনুর রহমান ও জনপ্রশাসন সংস্কার কমিশনের প্রধান আব্দুল মুয়ীদ চৌধুরী প্রধান উপদেষ্টার কাছে তাদের পৃথক প্রতিবেদনের কপি তুলে দেন।
সংস্কার কমিশনের প্রতিবেদনে কী সুপারিশ রয়েছে, তা বিস্তারিত জানা যায়নি। তবে জনপ্রশাসন সংস্কার নিয়ে ১০০টিরও বেশি সুপারিশ থাকতে পারে বলে আগেই জানা গিয়েছিল। এর আগে নির্বাচন কমিশন, দুর্নীতি দমন কমিশন, পুলিশ এবং সংবিধান সংস্কার সংক্রান্ত কমিশনগুলোর প্রতিবেদনও প্রধান উপদেষ্টার কাছে জমা পড়েছে।
জনপ্রশাসন সংস্কার কমিশনের প্রধান আব্দুল মুয়ীদ চৌধুরী গতকাল সচিবালয়ে সাংবাদিকদের জানান, প্রতিবেদনটি আগেই জমা দেওয়ার কথা ছিল, তবে মাঠপর্যায়ে কাজের কারণে কিছুটা বিলম্ব হয়েছে। তিনি বলেন, কমিশন বিভিন্ন জেলা-উপজেলায় গিয়ে কর্মকর্তাদের মতামত নিয়েছে, অনলাইনের মাধ্যমেও মতামত সংগ্রহ করা হয়েছে।
জনপ্রশাসন সংস্কারের জন্য ৩ অক্টোবর ৮ সদস্যের কমিশন গঠন করা হয়েছিল, পরে সদস্য সংখ্যা বাড়িয়ে ১১ জন করা হয়। কমিশনকে তিন মাসের মধ্যে প্রতিবেদন জমা দেওয়ার নির্দেশনা ছিল, তবে সময় বাড়িয়ে ১৫ ফেব্রুয়ারি করা হয়। তবে নির্ধারিত সময়ের আগেই প্রতিবেদন জমা দেওয়া হলো।
অন্যদিকে, বিচারবিভাগকে স্বাধীন, নিরপেক্ষ ও কার্যকর করতে প্রয়োজনীয় সংস্কারের সুপারিশ আনতে ৩ অক্টোবর বিচার বিভাগ সংস্কার কমিশন গঠন করা হয়। অন্তর্বর্তী সরকারের অনুমোদনক্রমে কমিশনটি বিচার ব্যবস্থার বিভিন্ন দিক খতিয়ে দেখে তাদের সুপারিশ তৈরি করেছে।
এদিকে বিশ্লেষকরা মনে করছেন, জনপ্রশাসন ও বিচার বিভাগ সংস্কারের সুপারিশ বাস্তবায়ন করা হলে প্রশাসনিক জটিলতা কমবে এবং বিচার প্রক্রিয়ার গতিশীলতা বাড়বে। তবে এসব সুপারিশ বাস্তবায়ন কতটা দ্রুত সম্ভব হবে, তা নিয়ে প্রশ্ন রয়ে গেছে।
প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস এই প্রতিবেদন গ্রহণের পর সংশ্লিষ্ট মহলের সঙ্গে পর্যালোচনা করবেন বলে জানা গেছে। এর আগে জমা পড়া অন্যান্য কমিশনের প্রতিবেদনের মতো এই দুই প্রতিবেদনও গুরুত্ব সহকারে বিবেচনা করা হবে বলে সরকারের একাধিক সূত্র নিশ্চিত করেছে।
এই সংস্কার প্রক্রিয়া কতটা কার্যকর হবে এবং সুপারিশগুলো বাস্তবায়নের জন্য সরকার কী পদক্ষেপ নেবে, তা নিয়ে এখন সবার নজর রয়েছে। আগামী দিনে সরকারের সিদ্ধান্তের ওপর নির্ভর করবে প্রশাসন ও বিচারব্যবস্থার কাঠামো কতটা পরিবর্তন হবে।
আপনার মতামত লিখুন :
বি: দ্র: প্রিয় পাঠক সমালোচনা আপনার অধিকার । তবে ভাষাটাও মার্জিত হতে হবে। সাথে থাকার জন্য ধন্যবাদ ।