সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে গুম ও হত্যার নির্দেশ দেওয়ার অভিযোগ উঠেছে আন্তর্জাতিক মানবাধিকার সংস্থা হিউম্যান রাইটস ওয়াচের (এইচআরডব্লিউ) একটি প্রতিবেদনে। সংস্থাটি দাবি করেছে, শেখ হাসিনা সরাসরি গুম ও হত্যাকাণ্ডের নির্দেশ দিয়েছেন। তার পদত্যাগের পর গোপনে গড়ে তোলা বন্দিশালা আয়নাঘরের অনেক বন্দি মুক্তি পেয়েছেন। এ তালিকায় রয়েছেন জামায়াতের সাবেক নেতা অধ্যাপক গোলাম আযমের ছেলে ব্রিগেডিয়ার জেনারেল (অবসরপ্রাপ্ত) আবদুল্লাহ আমান আযমী। গোপন কারাগারে আটকে রেখে তাকে হত্যার পরামর্শ দিয়েছিলেন শেখ হাসিনা।
সোমবার (২৭ জানুয়ারি) হিউম্যান রাইটস ওয়াচ প্রকাশিত ‘আফটার দ্য মুনসুন রেভ্যুলুশন-এ রোডম্যাপ টু লাস্টিং সিকিউরিটি সেক্টর রিফর্ম ইন বাংলাদেশ’ শীর্ষক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানানো হয়েছে। প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, আয়নাঘরে আযমীর বন্দি থাকা ও তার শারীরিক অসুস্থতার বিষয়ে শেখ হাসিনা সরাসরি অবগত ছিলেন। তিনি (আযমী) আর্মিতে সহকর্মী সামরিক হওয়ায় তার মুক্তির বিষয়ে বারবার শেখ হাসিনার কাছে অনুমতি চেয়েছিলেন এক সেনা কর্মকর্তা। কিন্তু শেখ হাসিনা প্রতিবারই তা প্রত্যাখ্যান করেন। এমনকি এক পর্যায়ে তিনি (শেখ হাসিনা) আযমীকে হত্যার পরামর্শ দেন। শেখ হাসিনার এমন বক্তব্যের পরিপ্রেক্ষিতে ওই কর্মকর্তা জানান, আমি তেমনটি করিনি। বরং এরপরে আমি তার মুক্তির বিষয়ে কথা বলা বন্ধ করে দেই।
প্রতিবেদনে মানবাধিকার লঙ্ঘনের দায়ে র্যাব বিলুপ্তির দাবি এবং পুলিশসহ নিরাপত্তাভিত্তিক সব প্রতিষ্ঠানে সংস্কারের সুপারিশ করা হয়েছে। শেখ হাসিনার সময়ে এসব প্রতিষ্ঠানকে দলীয়করণ করা হয়েছে উল্লেখ করে এর পাশাপাশি বিচার বিভাগের সংস্কারের কথাও বলা হয়েছে। প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, নিরাপত্তা রক্ষাকারী বাহিনী গত ১৫ বছর ধরে শেখ হাসিনার নিষ্পেষণমূলক হাতিয়ারের মূল উপাদান হিসেবে ব্যবহৃত হয়েছে। তারা পর্যায়ক্রমে বিরোধীদলীয় নেতা, সাংবাদিক, সমালোচক ও মানবাধিকার কর্মীদের টার্গেট করেছে। এজন্য মিথ্যা মামলা, নির্যাতন, বিচারবহির্ভূত হত্যাকাণ্ড, খেয়ালখুশিমতো গ্রেপ্তার এবং জোরপূর্বক গুম করা হয়েছে।
নিরাপত্তা রক্ষাকারীদের নির্যাতন বা ক্ষমতার অপব্যবহার অংশে গুম তদন্তে অন্তর্বর্তী সরকারের কমিশন গঠনের বিষয়টি তুলে ধরা হয়েছে। কমিশনের প্রাথমিক রিপোর্টে বলা হয়েছে, শেখ হাসিনার শাসনামলে কমপক্ষে ৩ হাজার ৫০০ মানুষকে গুম করা হয়েছে। এজন্য কেন্দ্রীয় কমান্ড কাঠামো ছিল। যার দেখাশোনা করতেন শেখ হাসিনা নিজে ও তার শীর্ষ কর্মকর্তারা। এ তালিকায় অন্যতম ব্যক্তিরা হলেন- মেজর জেনারেল তারিক আহমেদ সিদ্দিক, মেজর জেনারেল জিয়াউল আহসান, পুলিশের সিনিয়র কর্মকর্তা মনিরুল ইসলাম এবং মোহাম্মদ হারুন অর রশিদ। গুমের সঙ্গে জড়িত থাকা কর্মকর্তারা এইচআরডব্লিউকে বলেন, শেখ হাসিনা ও তার সরকারের সিনিয়র সদস্যরা আটকের বিষয়ে জানতেন। তবে বিষয়টি প্রকাশ করা হতো না। কিছু কিছু ক্ষেত্রে শেখ হাসিনা সরাসরি গুম ও হত্যাকাণ্ডের নির্দেশ দিয়েছেন।
নির্যাতন, জোরপূর্বক গুম এবং হত্যাকাণ্ড অংশে প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, শেখ হাসিনা দেশ ছেড়ে পালানোর পরেই, জোরপূর্বক গুমের শিকার তিনজন- মাইকেল চাকমা, মীর আহমেদ বিন কাসেম (আরমান) এবং আবদুল্লাহিল আমান আজমী মুক্তি পান। তিনজনের ক্ষেত্রেই কর্তৃপক্ষ বছরের পর বছর ধরে তাদের আটক রাখার কথা অস্বীকার করে আসছিল। কিন্তু মুক্তির পর তারা সবাই সাংবাদিকদের নির্জন কারাগারে রাখার কথা জানিয়েছেন। এমনকি সেখানে অন্য বন্দিদের কথা শুনতে পেয়েছেন বলেও জানিয়েছেন তারা।
২০১৬ সালের আগস্টে আযমী ও আরমানের সাথে হুম্মাম কাদের চৌধুরীকে আটক করা হয়। তারা তিনজনই বিরোধী দলের নেতার ছেলে, যাদের পিতার বিরুদ্ধে বাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধের সময় পাকিস্তান সেনাবাহিনীর সহযোগী হিসেবে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে বিচার ও দোষী সাব্যস্ত করা হয়েছিল। সালাউদ্দিন কাদের চৌধুরীর ছেলে হুম্মামকে ২০১৭ সালের মার্চ মাসে এই শর্তে মুক্তি দেওয়া হয় যে, তিনি তার বেআইনি আটকের বিষয়ে চুপ থাকবেন। হাসিনা সরকারের পতনের পর তিনি কেবল হিউম্যান রাইটস ওয়াচের সাথে দেখা করতে রাজি হন। তিনি জানান, আমি যে ভবনে ছিলাম সেখানে আরও অনেক কক্ষ ছিল। এসব বন্দিদের দ্বারা পূর্ণ ছিল। সেখানে অন্যান্য লোকও ছিল।
প্রতিবেদনে জামায়াত নেতা মীর কাসেম আলীর ছেলে মীর আহমদ বিন কাসেমের (আরমান) কথাও উল্লেখ করা হয়েছে। আরমান তার পিতার আইনজীবী দলের নেতৃত্ব দিচ্ছিলেন। ২০১৬ সালের ৯ আগস্ট তাকে সাত-আটজন কর্মকর্তা, স্ত্রী, বোন এবং সন্তানদের সামনে থেকে তুলে নিয়ে যায়। এ সময় আইনজীবী হিসেবে তিনি নিজের গ্রেপ্তারি পরোয়ানা দেখতে চান। কিন্তু কর্মকর্তারা তা প্রত্যাখ্যান করেন এবং বাড়ি থেকে টেনে বের করে একটি ভ্যানে তুলে চোখ বেঁধে দেন। তিনি এসবের প্রতিবাদ করলে দয়া করে আমাদের আপনার সাথে নিষ্ঠুর আচরণ করতে বাধ্য করবেন না বলে জানিয়ে দেন এক কর্মকর্তা।
আরমানের ঘটনার সঙ্গে জড়িত এক কর্মকর্তা তাকে আটকের বিষয়ে দুঃখ প্রকাশ করে বলেন, তিনি আশঙ্কা করেন যে আদেশ অমান্য করলে তাকে মৃত্যুদণ্ড দেওয়া হবে। গুমের সঙ্গে জড়িত আরেক শীর্ষ কর্মকর্তা আরমানের বিষয়ে বলেন, এ ধরনের সিদ্ধান্ত রাজনৈতিক এবং সর্বোচ্চ পর্যায়ে নেওয়া হয়। ওই কর্মকর্তা জানান, যখন তিনি তার ইউনিটে যোগদান করেছিলেন, তখন তাকে বলা হয়েছিল যে, আরমান, আযমী এবং হুমাম কাদের চৌধুরী বিরোধী দলের প্রথম সারির তিন নেতার সন্তান। তাদের মুক্তি দেওয়ার যে কোনো সিদ্ধান্ত শেখ হাসিনাকেই নিতে হবে।
প্রতিবেদনে আরও বলা হয়েছে, শেখ হাসিনার শাসনামলে নিরাপত্তা বাহিনীর মাধ্যমে বিরোধীদলীয় নেতাকর্মী, সাংবাদিক, মানবাধিকার কর্মী এবং সমালোচকদের টার্গেট করা হয়েছে। তাদের বিরুদ্ধে মিথ্যা মামলা দায়ের করা হয়েছে, নির্যাতন করা হয়েছে এবং বিচারবহির্ভূত হত্যাকাণ্ড চালানো হয়েছে। এছাড়াও, জোরপূর্বক গুমের মাধ্যমে অসংখ্য মানুষকে আটক রাখা হয়েছে। প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়েছে, শেখ হাসিনার সরকারের সময়ে নিরাপত্তা বাহিনীর মাধ্যমে মানবাধিকার লঙ্ঘনের ঘটনা ব্যাপকভাবে বৃদ্ধি পেয়েছে।
হিউম্যান রাইটস ওয়াচের প্রতিবেদনে শেখ হাসিনার সরকারের সময়ে নিরাপত্তা বাহিনীর মাধ্যমে মানবাধিকার লঙ্ঘনের ঘটনা ব্যাপকভাবে বৃদ্ধি পাওয়ার কথা উল্লেখ করা হয়েছে। প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, শেখ হাসিনার শাসনামলে নিরাপত্তা বাহিনীর মাধ্যমে বিরোধীদলীয় নেতাকর্মী, সাংবাদিক, মানবাধিকার কর্মী এবং সমালোচকদের টার্গেট করা হয়েছে। তাদের বিরুদ্ধে মিথ্যা মামলা দায়ের করা হয়েছে, নির্যাতন করা হয়েছে এবং বিচারবহির্ভূত হত্যাকাণ্ড চালানো হয়েছে। এছাড়াও, জোরপূর্বক গুমের মাধ্যমে অসংখ্য মানুষকে আটক রাখা হয়েছে।
প্রতিবেদনে আরও বলা হয়েছে, শেখ হাসিনার শাসনামলে নিরাপত্তা বাহিনীর মাধ্যমে বিরোধীদলীয় নেতাকর্মী, সাংবাদিক, মানবাধিকার কর্মী এবং সমালোচকদের টার্গেট করা হয়েছে। তাদের বিরুদ্ধে মিথ্যা মামলা দায়ের করা হয়েছে, নির্যাতন করা হয়েছে এবং বিচারবহির্ভূত হত্যাকাণ্ড চালানো হয়েছে। এছাড়াও, জোরপূর্বক গুমের মাধ্যমে অসংখ্য মানুষকে আটক রাখা হয়েছে। প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়েছে, শেখ হাসিনার সরকারের সময়ে নিরাপত্তা বাহিনীর মাধ্যমে মানবাধিকার লঙ্ঘনের ঘটনা ব্যাপকভাবে বৃদ্ধি পেয়েছে।
হিউম্যান রাইটস ওয়াচের প্রতিবেদনে শেখ হাসিনার সরকারের সময়ে নিরাপত্তা বাহিনীর মাধ্যমে মানবাধিকার লঙ্ঘনের ঘটনা ব্যাপকভাবে বৃদ্ধি পাওয়ার কথা উল্লেখ করা হয়েছে। প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, শেখ হাসিনার শাসনামলে নিরাপত্তা বাহিনীর মাধ্যমে বিরোধীদলীয় নেতাকর্মী, সাংবাদিক, মানবাধিকার কর্মী এবং সমালোচকদের টার্গেট করা হয়েছে। তাদের বিরুদ্ধে মিথ্যা মামলা দায়ের করা হয়েছে, নির্যাতন করা হয়েছে এবং বিচারবহির্ভূত হত্যাকাণ্ড চালানো হয়েছে। এছাড়াও, জোরপূর্বক গুমের মাধ্যমে অসংখ্য মানুষকে আটক রাখা হয়েছে।
প্রতিবেদনে আরও বলা হয়েছে, শেখ হাসিনার শাসনামলে নিরাপত্তা বাহিনীর মাধ্যমে বিরোধীদলীয় নেতাকর্মী, সাংবাদিক, মানবাধিকার কর্মী এবং সমালোচকদের টার্গেট করা হয়েছে। তাদের বিরুদ্ধে মিথ্যা মামলা দায়ের করা হয়েছে, নির্যাতন করা হয়েছে এবং বিচারবহির্ভূত হত্যাকাণ্ড চালানো হয়েছে। এছাড়াও, জোরপূর্বক গুমের মাধ্যমে অসংখ্য মানুষকে আটক রাখা হয়েছে। প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়েছে, শেখ হাসিনার সরকারের সময়ে নিরাপত্তা বাহিনীর মাধ্যমে মানবাধিকার লঙ্ঘনের ঘটনা ব্যাপকভাবে বৃদ্ধি পেয়েছে।
আপনার মতামত লিখুন :
বি: দ্র: প্রিয় পাঠক সমালোচনা আপনার অধিকার । তবে ভাষাটাও মার্জিত হতে হবে। সাথে থাকার জন্য ধন্যবাদ ।