মণিপুরে চলমান রাজনৈতিক অস্থিরতা এবার এক নতুন মাত্রা গ্রহণ করেছে। শনিবার রাতে বিক্ষুব্ধ জনতা মণিপুরের মুখ্যমন্ত্রী এন বিরেন সিংয়ের বাসভবনে হামলা চালায়। বিক্ষোভকারীরা দরজা ভেঙে বাসভবনে ঢুকে পড়ার চেষ্টা করলে পুলিশ পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে কাঁদানে গ্যাস ব্যবহার করে। মুখ্যমন্ত্রী ছাড়াও, রাজ্যটির দুই মন্ত্রী ও তিন বিধায়কের বাড়িতেও হামলা চালানো হয়।
এই হামলার পেছনে মূল কারণ হচ্ছে গত শুক্রবার রাতের একটি ঘটনায় নিহত তিনজনের মরদেহ উদ্ধারের পর বিক্ষোভের উত্তাপ। নিহত ব্যক্তিরা কুকি বিদ্রোহীদের হাতে অপহৃত হয়েছিলেন। তাদের মধ্যে দুজন শিশু এবং একজন নারী ছিল। ধারণা করা হচ্ছে, তাদের অনেক আগেই হত্যা করা হয়েছে, কারণ মরদেহগুলো ফুলে ফেঁপে গিয়ে দুর্গন্ধ ছড়াচ্ছিল।
শনিবার সকালে, নিহতদের মরদেহ উদ্ধার করার পর মেইত গোষ্ঠীর সাধারণ মানুষ বিচারের দাবিতে সড়কে নেমে আসে। এর ফলস্বরূপ, উত্তেজিত জনতা দুই মন্ত্রী ও তিন বিধায়কের বাড়িতে আগুন দেয় এবং ব্যাপক ভাঙচুর চালায়। উল্লেখযোগ্যভাবে, স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ মন্ত্রী সাপাম রঞ্জন সিংয়ের বাড়িতেও আগুন ধরিয়ে দেয় বিক্ষোভকারীরা।
রাজ্যের পরিস্থিতি আরও জটিল হয়ে ওঠে, যখন বিক্ষোভকারীরা বিজেপির বিধায়ক আরকে ইমোর বাড়ির সামনে জড়ো হয়ে স্লোগান দেয়। আরকে ইমো, যিনি মুখ্যমন্ত্রীর মেয়ের জামাই, তার বাড়িতেও হামলা হয়। একই সময়ে, স্বতন্ত্র বিধায়ক সাপাম নিশিকান্ত সিংয়ের মালিকানাধীন একটি পত্রিকায় ভাঙচুর চালানো হয়।
এই হামলার পর, ইম্ফালের পশ্চিম প্রশাসন অস্থিরতা নিয়ন্ত্রণে রাখার জন্য জিরিবাম বিভাগে অনির্দিষ্টকালের জন্য বিধিনিষেধ আরোপ করেছে।
মণিপুরে কুকি এবং মেইত উপজাতির মধ্যে সংঘাত এক বছর আগে শুরু হয়েছিল এবং সাম্প্রতিক কয়েক মাস পরিস্থিতি কিছুটা শান্ত হলেও, কোটা সংক্রান্ত দাবি এবং আদিবাসীদের অধিকার নিয়ে পুনরায় উত্তেজনা বৃদ্ধি পেয়েছে। বিশেষ করে, কুকি বিদ্রোহীদের সঙ্গে বন্দুকযুদ্ধে নিহত ১০ বিদ্রোহীর ঘটনার পর পরিস্থিতি আরও উত্তপ্ত হয়ে উঠেছে।
রাজ্যের পরিস্থিতি এখন স্থিতিশীল নয় এবং তীব্র বিক্ষোভের মধ্যে সাধারণ জনগণের নিরাপত্তা নিয়ে উদ্বেগ দেখা দিয়েছে।
আপনার মতামত লিখুন :
বি: দ্র: প্রিয় পাঠক সমালোচনা আপনার অধিকার । তবে ভাষাটাও মার্জিত হতে হবে। সাথে থাকার জন্য ধন্যবাদ ।