ঢাকা, ৮ সেপ্টেম্বর ২০২৪: সম্প্রতি ঢাকার শীর্ষ সন্ত্রাসীরা একে একে জামিনে মুক্তি পাচ্ছেন, যা নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন অপরাধ বিশ্লেষকরা। তাদের মতে, এই পরিস্থিতি আইনশৃঙ্খলা রক্ষায় বড় ধরনের চ্যালেঞ্জ তৈরি করতে পারে এবং দেশের সামগ্রিক নিরাপত্তা ব্যবস্থার অবনতি ঘটতে পারে।
২০০১ সালের ডিসেম্বরে সরকার ২৩ শীর্ষ সন্ত্রাসীর একটি তালিকা তৈরি করে, যার মধ্যে উল্লেখযোগ্য নাম ছিল আব্বাস উদ্দিন ওরফে কিলার আব্বাস। এই সন্ত্রাসী গত ১৩ আগস্ট কাশিমপুর হাই সিকিউরিটি কারাগার থেকে মুক্তি পান। আব্বাস উদ্দিনের বিরুদ্ধে অর্ধডজন হত্যাসহ বেশ কিছু মামলা রয়েছে।
শুধু কিলার আব্বাসই নয়, তার দু’দিন আগে চট্টগ্রামের শীর্ষ সন্ত্রাসী নাছির উদ্দিন ওরফে শিবির নাসিরও মুক্তি পান। তার বিরুদ্ধে ৩৬টি মামলা রয়েছে। এছাড়াও চলতি মাসের শুরুর দিকে একই কারাগার থেকে ৯টি হত্যাসহ ২২টি মামলার আসামি আসলাম হোসেন ওরফে সুইডেন আসলাম জামিনে মুক্তি পেয়েছেন।
এছাড়া আরও কয়েকজন শীর্ষ সন্ত্রাসী, যেমন সানজিদুল ইমন, নাইম আহমেদ টিটন, ফ্রিডম রাসু, পিচ্চি হেলালও জামিন নিয়ে কারামুক্ত হয়েছেন। তবে, তাদের মধ্যে কিছু সন্ত্রাসী জামিন নিয়ে লাপাত্তা হয়ে গেছেন। এদের মধ্যে অনেকের বিরুদ্ধে ইন্টারপোলের রেড নোটিশ রয়েছে।
কারা কর্তৃপক্ষের মতে, এসব সন্ত্রাসী আইনি প্রক্রিয়া মেনে জামিনে মুক্তি পেয়েছেন। কাশিমপুর হাই সিকিউরিটি কারাগারের জেলার লুৎফর রহমান জানান, “জামিন ছাড়া কেউ যেতে পারবে না। যারা গেছেন, তারা সঠিক প্রক্রিয়ার মধ্য দিয়েই গেছেন।”
তবে, অপরাধ বিশ্লেষকরা মনে করেন, রাজনৈতিক পরিবর্তনের পর আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী সংস্থাগুলোর নিষ্ক্রিয়তা ও শীর্ষ সন্ত্রাসীদের মুক্তি দেশের পরিস্থিতি জটিল করে তুলতে পারে। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অপরাধ বিশ্লেষক ড. হাফিজুর রহমান কার্জন বলেন, “আমরা অনেক ঘটনায় দেখেছি, উচ্চ আদালত থেকে এসব সন্ত্রাসীরা জামিন নিয়ে বেরিয়ে এসে আবারও হত্যা করেছে। এর ফলে দেশের সামগ্রিক আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি অবনতির শঙ্কা রয়েছে।”
তিনি আরও বলেন, “শীর্ষ সন্ত্রাসীদের জামিনের বিষয়ে রাষ্ট্রপক্ষেরও দায় রয়েছে।” তবে, পুলিশ ও র্যাবের উর্ধ্বতন কেউ এ বিষয়ে মন্তব্য করতে রাজি হননি।
এই পরিস্থিতিতে, আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী সংস্থাগুলোর কার্যকর ভূমিকা নেওয়ার তাগিদ দিয়েছেন বিশ্লেষকরা, যাতে শীর্ষ সন্ত্রাসীদের মুক্তির পর সৃষ্ট আইনশৃঙ্খলার পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে রাখা যায়।
আপনার মতামত লিখুন :
বি: দ্র: প্রিয় পাঠক সমালোচনা আপনার অধিকার । তবে ভাষাটাও মার্জিত হতে হবে। সাথে থাকার জন্য ধন্যবাদ ।