বন্ধ হয়ে যাচ্ছে ঢাবি’র করোনাভাইরাসের নমুনা পরীক্ষার কার্যক্রম
আর্থিক সংকট, নিরাপত্তাহীনতাসহ কিছু কারনে আজ থেকে বন্ধ হয়ে যাচ্ছে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে নতুন করোনাভাইরাসের নমুনা পরীক্ষার কার্যক্রম। সংশ্লিষ্টরা বলছেন, ল্যাব পরিচালনায় আর্থিক সংকট, নিরাপত্তাহীনতা, বিশ্ববিদ্যালয়ের দাপ্তরিক কাজ শুরু হওয়া, গবেষণাগারের যন্ত্রপাতি একাডেমিক কাজে ব্যবহারসহ কয়েকটি কারণে এ কার্যক্রম বন্ধ করে দেয়া হচ্ছে।
স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের অনুমতিতে গত ৫ই মে থেকে বিশ্ববিদ্যালয়ের সেন্টার ফর অ্যাডভান্সড রিসার্চ ইন সায়েন্সেস (সিএআরএস) ভবনের ল্যাবে করোনাভাইরাসের নমুনা পরীক্ষা শুরু করে বিশ্ববিদ্যালয়ের করোনাভাইরাস রেসপন্স টেকনিক্যাল কমিটি।গবেষণাগারে দু’টি পিসিআর মেশিনে প্রতিদিন প্রায় চারশ নমুনা পরীক্ষা করা হতো।
স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের দেয়া কিট, পার্সোনাল প্রটেক্টিভ ইকুইপমেন্ট (পিপিই) এবং বিশ্ববিদ্যালয়ের আর্থিক খরচে চলতো এই কার্যক্রম। কিন্তু রোববার থেকে সীমিত পরিসরে বিশ্ববিদ্যালয়ের দাপ্তরিক কাজ শুরু হওয়ায় নমুনা পরীক্ষা কার্যক্রম চালিয়ে যাওয়া সম্ভব নয় বলে জানিয়েছে বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ।
বিশ্ববিদ্যালয়ের ভিসি মো. আখতারুজ্জামান জানান, গত ২৭শে মে স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়কে বিষয়টি জানানো হয়েছে। তিনি বলেন, আমরা একটি প্রক্রিয়ার মধ্য দিয়েই এটি বন্ধ করে দিচ্ছি। আর্থিক কারণে নয়, আমাদের আগে থেকেই কথা ছিল ৩১শে মে পর্যন্ত আমরা এটা চালিয়ে যাব।
তিনি আরও বলেন, আমাদের তো এটা হাসপাতাল নয়, এটা বিশ্ববিদ্যালয়। আমাদের শিক্ষক-শিক্ষার্থীদের গবেষণায় সময় দিতে হবে।ল্যাবের আনুষঙ্গিক যন্ত্রপাতি আমাদের বিভিন্ন ডিপার্টমেন্ট থেকে নিয়ে আসা হয়েছে।
এগুলো এখন সেখানে গবেষণার কাজে প্রয়োজন হচ্ছে। সেগুলো এখন জীবাণুমুক্ত করে আবার সেখানে স্থাপন করতে হবে। মূলত এজন্য করোনাভাইরাসের নমুনা পরীক্ষার কাজটা আর করা হচ্ছে না।
সংশ্লিষ্টরা জানিয়েছেন, ল্যাবটিতে করোনাভাইরাসের নমুনা পরীক্ষায় বিশ্ববিদ্যালয়ের ১০-১২ জন শিক্ষক ও ১৫-২০ জন শিক্ষার্থী কাজ করছিলেন। শিক্ষকরা স্বেচ্ছায় কাজ করলেও প্রতি মাসে ১০ থেকে ১৫ লাখ টাকা খরচ হচ্ছে।
খরচের বিষয়টি স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়কে অবগত করা হলেও কোনো সহযোগিতা পাওয়া যায়নি বলে জানান ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় করোনাভাইরাস রেসপন্স টেকনিক্যাল কমিটির আহ্বায়ক শরীফ আখতারুজ্জামান।
এ বিষয়ে স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের অতিরিক্ত মহাপরিচালক (প্রশাসন) নাসিমা সুলতানা বলেন, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষকরা স্বেচ্ছায় এ দ্বায়িত্ব নিয়েছেন। আর্থিক সহায়তার কোনো কথা ছিল না। যেসব বিশ্ববিদ্যালয় বর্তমানে করোনাভাইরাস টেস্ট করছে, তাদের কারও জন্যই সরকারের পক্ষ কোনো বরাদ্দ নেই। আমরা তাদেরকে শুধু পিপিই, কিট ও স্যাম্পল সরবরাহ করেছি। এখন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় আর টেস্ট না করাতে চাইলে, এটা তাদের নিজস্ব ব্যাপার।
প্রায় এক মাস পর স্বাস্থ্য অধিদপ্তর থেকে অনুমোদন পেয়ে ৫ মে থেকে নমুনা পরীক্ষা শুরু হয়। এরই মধ্যে জীববিজ্ঞান অনুষদের একদল গবেষক বিশ্ববিদ্যালয়ের উচ্চতর বিজ্ঞান গবেষণা কেন্দ্রে স্থাপিত কোভিড-১৯ গবেষণাগার থেকে নমুনা সংগ্রহ করে পাঁচটি ভাইরাসের জিনোম সিকোয়েন্সিং করেছেন বলে দাবি করেন। প্রয়োজনীয় অর্থসংস্থান সাপেক্ষে ধাপে ধাপে আরও ১০০টি ভাইরাসের জিনোম সিকোয়েন্সিং করা হবে বলেও জানান তারা।
আপনার মতামত লিখুন :
বি: দ্র: প্রিয় পাঠক সমালোচনা আপনার অধিকার । তবে ভাষাটাও মার্জিত হতে হবে। সাথে থাকার জন্য ধন্যবাদ ।