পটুয়াখালীর কলাপাড়ায় প্রাথমিক স্তরের শিক্ষা ব্যবস্থায় চলছে রমরমা প্রাইভেট বাণিজ্য। নির্দিষ্ট শ্রেণী শিক্ষকের কাছে প্রাইভেট না পড়লে পরীক্ষার খাতায় মূল্যায়ন নম্বর কমিয়ে দেয়া সহ তার কাছে প্রাইভেট পড়ুয়া শিক্ষার্থীদের হাতে প্রশ্ন ফাঁস করে পৌঁছে দেয়ার অভিযোগ উঠেছে।
সূত্র জানান, উপজেলার সর্বত্র এরকম অভিযোগ থাকলেও বিদ্যালয়ের শ্রেণী শিক্ষকের মানসিক নির্যাতনের কবল থেকে শিশুদের রক্ষায় মুখ খুলছে না অনেক অভিভাবক। তবে ১৭ জুলাই সোমবার দুপুরে মহিপুর সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়ের একাধিক অভিভাবক প্রধান শিক্ষক তৃপ্তি রানী ভৌমিক ও সহকারী শিক্ষক রুহুল আমিনের বিরুদ্ধে এমন অভিযোগ এনে ইউএনও'র কাছে দরখাস্ত দাখিল করেছেন। অতঃপর উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তাকে তদন্ত স্বাপেক্ষে দ্রুত ব্যবস্থা নেয়ার নির্দেশ দেয়া হয়েছে।
অভিযোগ সূত্রে জানাগেছে, মহিপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক মো. রুহুল আমিনের নিকট প্রাইভেট না পড়লে শিক্ষার্থীদের কম মূল্যায়ন করা হয়। পরীক্ষার প্রশ্নপত্র ফাঁস করে তার প্রাইভেট শিক্ষার্থীদের ভিন্ন হলরুমে পরীক্ষা নেয়া হয়। বর্তমানে সৃজনশীল প্রশ্নপত্র হওয়া স্বত্বেও তার প্রাইভেট শিক্ষার্থীদের ফলাফল ৯০% এবং অন্য শিক্ষার্থীদের ৬০% নম্বর দিয়ে উত্তীর্ন করা হয়। সরাকারি বরাদ্দ ও প্রতিষ্ঠানের নিজস্ব সম্পদ থেকে অর্জিত অর্থ কোন কাজ না করে আত্মসাৎ করার উল্লেখ করা হয় অভিযোগে।
অভিযোগ সূত্রে আরও জানা যায়, মহিপুর সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়ের ১৩ একর জমি এবং মৎস্য চাষের জন্য একাধিক ঘের রয়েছে। অথচ মাত্র ৩ একর জমি বর্তমানে প্রতিষ্ঠানটির ভোগ দখলে রয়েছে। বাকি জমি অর্থের বিনিময়ে বিভিন্ন জনকে ভোগ-দখলের অনুমতি দেয়া হয়েছে। এভাবে প্রতিবছর প্রতিষ্ঠানের সম্পত্তি থেকে অর্জিত টাকা, বিভিন্ন সরকারি বরাদ্দের লক্ষ লক্ষ টাকা কাজ না করেই আত্মসাৎ হয়ে যায়।
শিক্ষার্থীদের অভিযোগ, একটু বৃষ্টিতেই বিদ্যালয় মাঠে জলাশয় সৃষ্টি হয়। রাস্তা থেকে বিদ্যালয়ের ২০০ মিটার প্রবেশ পথটি সব সময়ই পানিতে তলিয়ে থাকে। এতে বিদ্যালয়ে যেতে আসতে তাদের ভিজে যেতে হয়।
মহিপুর সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক তৃপ্তি রানী ভৌমিক অভিযোগ অস্বীকার করে বলেন, এসব আমার বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র, এগুলো সব মিথ্যা ও বানোয়াট। সরকারী চাকরীতে একটানা ৩০ বছর ট্রান্সফার না হয়ে একজায়গায় কর্মরত থাকার বিষয়ে দম্ভোক্তি করে বলেন, শিক্ষা অফিস আমাকে রাখলে, আমি কি করবো?
কলাপাড়া ইউএনও মো. জাহাঙ্গীর হোসেন বলেন, অভিযোগের ভিত্তিতে কলাপাড়া উপজেলা শিক্ষা অফিসারকে তদন্ত করে আগামী ৭ দিনের মধ্যে ব্যবস্থা নেয়ার নির্দেশ দেয়া হয়েছে।
আপনার মতামত লিখুন :
বি: দ্র: প্রিয় পাঠক সমালোচনা আপনার অধিকার । তবে ভাষাটাও মার্জিত হতে হবে। সাথে থাকার জন্য ধন্যবাদ ।