উচ্চশিক্ষিত হয়ে প্রতিষ্ঠিত হবার অদম্য ইচ্ছা ছিল। কিন্তু অভাবের কারণে অষ্টম শ্রেণির পর আর স্কুলে যাওয়া হয়নি ইমামুল ইসলামের। তবে তিনি হাল ছাড়েননি। আর তাই তো সমাজের সকল বাধা বিপত্তি অতিক্রম করে ছেলে আবু রায়হানের সঙ্গে এবার এসএসসি পরীক্ষায় বসেছেন তিনি। তাদের বাড়ি নাটোরের বাগাতিপাড়া উপজেলার পাঁকা ইউনিয়নের চকতকিনগর গ্রামে।
কারিগরি শিক্ষা বোর্ডের অধীনে বাগাতিপাড়া টেকনিক্যাল অ্যান্ড বিজনেস ম্যানেজমেন্ট ইনস্টিটিউট থেকে প্রতিষ্ঠানটির নিজস্ব কেন্দ্রে পরীক্ষায় অংশ নিয়েছেন তারা।
জানা গেছে, লেখাপড়ার ইচ্ছা থাকার পরেও সংসারের অভাবের কারণে অষ্টম শ্রেণি পাশ করার পরে আর স্কুলে যাওয়া হয়নি ইমামুলের। ২৪ বছর আগে জীবিকার তাগিদে ঢাকায় পাড়ি জমান তিনি। সেখানে গার্মেন্টসে কাজ করেন প্রায় ১৮ বছর।
পরে ২০১৬ সালে বাড়িতে এসে আম বাগানের ব্যবসা ও বাড়ির পাশে মুদি দোকান দেন তিনি। কিন্তু বুকে চাপা থাকা লেখাপড়ার সেই ইচ্ছা তাকে মাঝে মধ্যেই পীড়া দেয়। অবশেষে সেই ইচ্ছে পূরণে ২০২০ সালে ছেলের সঙ্গে বাগাতিপাড়া টেকনিক্যাল অ্যান্ড বিজনেস ম্যানেজমেন্ট ইনস্টিটিউটের ভোকেশনাল শাখার নবম শ্রেণিতে ড্রেস মেকিং ট্রেডে ভর্তি হন তিনি। আর ছেলে রায়হান ভর্তি হয় ইলেকট্রিক্যাল ট্রেডে।
ইমামুল ইসলাম বলেন, অভাবের সংসারে পড়ার কথা ভাবারই সময় হয়নি। অবশেষে ছেলের সঙ্গে নবম শ্রেণিতে ভর্তি হয়ে নতুন করে লেখাপড়া শুরু করি।
বাগাতিপাড়া টেকনিক্যাল অ্যান্ড বিজনেস ম্যানেজমেন্ট ইনস্টিটিউটের ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ ও ওই কেন্দ্রের কেন্দ্র সচিব সামসুন্নাহার বলেন, শিক্ষার আসলে কোন বয়স নেই। তিনি এই বয়সে সেটা বুঝতে পেরে লেখাপড়া শুরু করায় তাকে ধন্যবাদ। বাবা-ছেলের সাফল্য কামনা করছি।
আপনার মতামত লিখুন :
বি: দ্র: প্রিয় পাঠক সমালোচনা আপনার অধিকার । তবে ভাষাটাও মার্জিত হতে হবে। সাথে থাকার জন্য ধন্যবাদ ।