বিরল সীমান্তে বিএসএফের কাছে ফেরত কৃষক, পতাকা বৈঠকে সমঝোতা !

নিজস্ব প্রতিবেদক
গোলাম রব্বানী, নিজস্ব প্রতিনিধি (দিনাজপুর)
প্রকাশিত: শুক্রবার ২৪শে জানুয়ারী ২০২৫ ১০:৫৪ অপরাহ্ন
বিরল সীমান্তে বিএসএফের কাছে ফেরত কৃষক, পতাকা বৈঠকে সমঝোতা !

দিনাজপুরের বিরল উপজেলার ৮নং ধর্মপুর ইউনিয়নের এনায়েতপুর সীমান্ত থেকে নিজ জমিতে কাজ করার সময় বিএসএফ কর্তৃক আটক হওয়া কৃষক আল আমিন (২৫)কে পতাকা বৈঠকের মাধ্যমে বাংলাদেশে ফিরিয়ে দেয়া হয়েছে। একই সময়ে ভারতীয় সীমান্তরক্ষী বাহিনী বিএসএফের পক্ষ থেকেও একজন ভারতীয় কৃষককে বাংলাদেশী সীমান্তরক্ষী বাহিনী বিজিবির কাছে হস্তান্তর করা হয়।


২৪ জানুয়ারি, শুক্রবার বিকেল ৪টায় সীমান্তের শূন্য রেখায় ৩২৩ নম্বর পিলারের কাছের একটি এলাকায় বাংলাদেশ এবং ভারতীয় সীমান্তরক্ষী বাহিনীর মধ্যে পতাকা বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়। এর মাধ্যমে আল আমিনকে বিএসএফ ফেরত দেয় এবং ভারতের নাগরিক নারায়ণ চন্দ্র রায়কেও বিজিবির কাছে হস্তান্তর করা হয়। 


স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, আল আমিন তার নিজ জমিতে কাজ করার সময় বিএসএফ সদস্যরা তাকে আটক করে নিয়ে যায়। তখন তার পরিবার বিষয়টি জানিয়ে বিজিবির সহায়তা চায়। এর পরিপ্রেক্ষিতে বিজিবি আল আমিনকে ফিরে পাওয়ার জন্য বিএসএফের সঙ্গে যোগাযোগ করে এবং এই পতাকা বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়।


পতাকা বৈঠকটি অনুষ্ঠিত হয় বাংলাদেশ পক্ষ থেকে দিনাজপুর ৪২ বিজিবি ব্যাটালিয়নের অধিনায়ক লেফটেন্যান্ট কর্নেল আহসান-উল ইসলাম এবং ভারতীয় বিএসএফের অধিনায়ক বিপেন কুমারের নেতৃত্বে। এ সময় দুপক্ষই একে অপরের সীমান্ত নিরাপত্তা নিয়ে মতবিনিময় করে এবং পরবর্তীতে তারা আল আমিন এবং নারায়ণ চন্দ্র রায়কে একে অপরের হাতে হস্তান্তর করে। 


এদিকে, স্থানীয়রা জানান যে, আল আমিন সীমান্তের শূন্য রেখার কাছে তার জমিতে কাজ করছিলেন এবং বিএসএফ সদস্যরা তাকে আটক করে নিয়ে যায়। তার পরিবার বিষয়টি জানিয়ে বিজিবির কাছে অনুরোধ জানায়, যার পর বিজিবি একটি পদক্ষেপ গ্রহণ করে এবং ভারতীয় কর্তৃপক্ষের সঙ্গে যোগাযোগ স্থাপন করে। 


এদিকে, ভারতীয় নাগরিক নারায়ণ চন্দ্র রায়ের বিরুদ্ধে কোনো অভিযোগ ছিল না। তবে তাকে বিএসএফের হাতে হস্তান্তর করার পর তার বিরুদ্ধে ভারতীয় কর্মকর্তারা কোনো বিশেষ অভিযোগ উত্থাপন করেনি। 


লেফটেন্যান্ট কর্নেল আহসান-উল ইসলাম জানান, এই ঘটনায় বাংলাদেশের অভ্যন্তরে প্রবেশ করা বিএসএফ সদস্যদের বিরুদ্ধে বাংলাদেশ তাদের প্রতিবাদ জানায় এবং সীমান্তে শান্তি বজায় রাখার জন্য দৃঢ় অবস্থান নেওয়া হয়। 


তিনি আরো জানান, "আল আমিনের বিষয়টি একেবারেই ভুল বোঝাবুঝি ছিল। বিএসএফ তাকে সন্দেহ করে আটক করেছিল, কিন্তু পরে জানা যায় যে তিনি শুধুমাত্র একজন সাধারণ কৃষক।" 


বাংলাদেশের সীমান্ত এলাকায় এই ধরনের ভুল বোঝাবুঝি আগে ঘটলেও, দুই দেশের সীমান্তরক্ষী বাহিনীর মধ্যে একাধিক পতাকা বৈঠক ও আলোচনা হয়ে থাকে, যার ফলে এসব সমস্যা সমাধান করা সম্ভব হয়।


এ ব্যাপারে স্থানীয়রা বলেন, সীমান্তে এই ধরনের ঘটনা চলতেই থাকে, তবে বিগত সময়ে দুই দেশের বাহিনীর মধ্যে আরো একাধিক সমঝোতা হয়েছে, যা সীমান্তের পরিস্থিতি উন্নত করেছে। 


পতাকা বৈঠকের পর বিজিবি এবং বিএসএফ একে অপরকে সহযোগিতা করতে প্রস্তুত থাকার কথা জানায়, যাতে সীমান্তের নিয়ম-কানুন মেনে চলা যায় এবং উভয় দেশের জনগণের মধ্যে শান্তি বজায় থাকে।