হিলিতে এক রাতে গভীর নলকূপের তিনটি ট্রান্সফরমার চুরি

নিজস্ব প্রতিবেদক
গোলাম রব্বানী, উপজেলা প্রতিনিধি হিলি (দিনাজপুর)
প্রকাশিত: শুক্রবার ৭ই এপ্রিল ২০২৩ ০৫:৩৯ অপরাহ্ন
হিলিতে এক রাতে গভীর নলকূপের তিনটি ট্রান্সফরমার চুরি

দিনাজপুরের সীমান্তবর্তী হাকিমপুর হিলি উপজেলার আলিহাট ইউনিয়নের কোকতাড়া গ্রামের কোকতাড়া কৃষক সমবায় সমিতির গভীর নলকূপের এক রাতে তিনটি বৈদ্যুতিক ট্রান্সফরমার চুরির ঘটনা ঘটেছে। আদালতে মামলা চলার কারণে ট্রান্সফরমার গুলোতে বৈদ্যুতিক সংযোগ না থাকায় ডিজেল চালিত মেশিন দিয়ে বোরো মৌসুমে জমিতে সেচ কার্যক্রম পরিচালনা করে আসছেন সমিতির সদস্যরা। ফলে সেচ কার্যক্রমে কোন ব্যাঘাত ঘটেনি। আব্দুল কাদের লিখিত অভিযোগ দায়ের করলেও সমিতির লোকজনের লিখিত অভিযোগ দায়ের এর প্রস্তুতি চলছে।


বিষয়টি নিশ্চিত করেন হাকিমপুর হিলি পল্লী বিদ্যুৎ সমিতি-২ এর সহকারী জেনারেল ম্যানেজার (হিলি জোনাল অফিস) বিশ্বজিত সরকার। 


শুক্রবার (০৭ এপ্রিল) সকালে সরজমিনে গিয়ে দেখা গেছে কোকতাড়া সমবায় সমিতির গভীর নলকূপটি ১৯৮২ সালে গনপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকারের অনুমোদিত। যাহার নিবন্ধন নং-২৫৩৫।


কথা হয় সমবায় সমিতির এডহোক কমিটির সভাপতি আবু বক্কর সিদ্দিক এর সাথে তিনি জানান, গভীর নলকূপটি প্রথম থেকে সমিতি পরিচালনা করতো। সেখান থেকে সাধারণ কৃষকরা জমিতে অল্প খরচে সেচ দিতেন। হঠাৎ ২০১৮ সালে এসে একই গ্রামের জনৈক আব্দুল কাদের দাবি করে গভীর নলকূপটি আমি সমিতির পরিচালনা কমিটির নিকট থেকে ক্রয় করে নিয়েছি। সমিতির লোক এ কথা মেনে নিতে অস্বীকৃতি জানালে আব্দুল কাদের বাদি হয়ে আদালতে মামলা দায়ের করেন। পরে সমিতির লোকজন আমারও তার নামে আদালতে মামলা দায়ের করি। তখন থেকে আমরা সমিতির লোকজন ডিজেল ইঞ্জিন দিয়ে গভীর নলকূপটি পরিচালনা করে আসছি। 


কোকতাড়া গ্রামের কৃষক তয়েজ উদ্দিন, মিছির আলী বলেন, আগে আমরা সমিতির ডিপ দিয়ে অল্প টাকায় জমিতে পানি সেচ দিতাম। গত ৪-৫ বছর থেকে আদালতে মামলা চলার কারণে এখন ডিজেল ইঞ্জিন চালিত মেশিন দিয়ে গভীর নলকূপটি চলে। এতে আমাদের এখন বাড়তি খরচ পোহাতে হচ্ছে। তবে যেহেতু ট্রান্সফরমার গুলোতে বৈদ্যুতিক সংযোগ ছিলোনা এবং মেশিন দিয়ে গভীর নলকূপটি চলে তাই চলতি বোরো মৌসুমে জমিতে পানি সেচ দিতে সমস্যা নাই বলে জানান তারা।


হাকিমপুর থানার ভারপাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আবু সায়েম মিয়া বলেন, ট্রান্সফরমার চুরির ঘটনায় কোকতাড়া গ্রামের আব্দুল কাদের লিখিত অভিযোগ দিয়েছেন। অভিযোগের ভিত্তিতে এস আই শামীম ও সঙ্গীয় ফোর্স ঘটনা স্হলে গিয়ে স্থানীয় লোকজনের সহায়তায় চুরি যাওয়া ট্রান্সফরমার অবশিষ্ট যন্ত্রাংশগুলো থানা হেফাজতে নিয়ে আসে।


তিনি আরও বলেন, সমিতির লোকজন মোবাইল ফোনে চুরি যাওয়া বিষয়টি অবগত করেছেন এবং তারাও লিখিত অভিযোগ দায়ের এর কথা বলেছেন। 


হিলি পল্লীবিদ্যুৎ সমিতি-২ এর হিলি জোনাল অফিসের সহকারী জেনারেল ম্যানেজার (এজিএম) বিশ্বজিত সরকার বলেন, গভীর নলকূপের ট্রান্সফরমার চুরি হওয়া বিষয়টি আমি সমবায় সমিতির লোক মারুফত জানতে পেরেছি। ট্রান্সফরমার গুলো অফিসিয়াল ভাবে আব্দুল কাদের এর নামে ছিলো। আদালতে কোকতাড়া কৃষক সমবায় সমিতি বনাম আব্দুল কাদের এর মামলা চলমান থাকায় বিদ্যুৎ সংযোগ দিতে পারি নাই এবং ট্রান্সফরমার খুলে নিয়ে আসতে পারি নাই। তবে আজ আমাদের সমিতির দুই জন লোক গিয়ে চুরি যাওয়া ট্রান্সফরমার এর বৈদ্যুতিক মিটারটি খুলে নিয়ে আসে। সমিতির লোকজনকে থানায় অভিযোগ করার জন্য পরামর্শ দিয়েছি।


ট্রান্সফরমার চুরি ঘটনায় বিদ্যুৎ বিভাগ দিশেহারা।আর ট্রান্সফরমার চুরি বন্ধে সচেতনার জন্য এলাকায় মাইকিং ও কৃষকের মোবাইলে সর্তকতামূলক ক্ষুদে বার্তা পাঠানো হচ্ছে বলে জানান তিনি।