বরিশাল শের ই বাংলা মেডিক্যাল কলেজ (শেবাচিম) হাসপাতালের লেবার ওয়ার্ড থেকে নবজাতক শিশু চুরি করে নিয়ে পালিয়ে যাওয়ার সময় এক নারীকে আটক করে পুলিশে দিয়েছে স্থানীয়রা। সেইসাথে নবজাতক শিশুটিকে উদ্ধার করে কোতোয়ালি মডেল থানা পুলিশের সহায়তায় তার মায়ের কোলে ফিরিয়ে দেয়া হয়েছে।
শেবাচিম হাসপাতাল সূত্রে জানাগেছে, সন্তান প্রসবের জন্য দুদিন আগে বরিশাল শের ই বাংলা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের লেবার ওয়ার্ডে ভর্তি হন নগরীর কাউনিয়া বিসিক রোড এলাকার বাসিন্দা হেলাল বেপারীর স্ত্রী কাকলী বেগম। মঙ্গলবার (১৭ জানুয়ারি) দুপুরের দিকে সিজারের মাধ্যমে এক পুত্র সন্তান ভূমিষ্ট হয় কাকলী বেগমের। যার নামও রাখা হয় মাহাদি।
কাকলী বেগম জানান, বুধবার (১৮ নভেম্বর) ১১ টা থেকে ১২ টার মধ্যে কোন এক সময় শিশুটিকে হাসপাতালের ওয়ার্ডের ভেতর তার বিছানায় রেখে ননদ রুনু বেগমকে নিয়ে টয়লেটে যান। কিছুক্ষণ পর ফিরে এসে বিছানায় আর শিশু সন্তানটিকে দেখতে পাননি। সাথে সাথে ওয়ার্ডের ভেতর মাহাদিকে খোঁজাখুঁজি শুরু করি কিন্তু পাইনি। এরপর বিষয়টি ওয়ার্ডের দায়িত্বরত চিকিৎসক, নার্স, স্টাফ ও আমাদের স্বজনদের জানাই। ঘন্টা পার হয়ে গেলেও আর সন্তানের খোঁজ পাইনি।
এদিকে শিশুটি নিঁখোজ হওয়ার অল্প সময়ের ব্যবধানে নগরের আমানতগঞ্জ পানির ট্যাংকি এলাকায় সন্দেহের বসে এক শিশুসহ এক নারীকে আটক করে স্থানীয়রা। উদ্ধারকাজে সহায়তা প্রদানকারী বরিশাল সিটি করপোরেশনের ১৭ নম্বর ওয়ার্ডের সচিব মোঃ শাহাদাৎ হোসেন মাসুম বলেন, ঘটনার সময় আমি বাসার দিকে যাচ্ছিলাম। বাসার গলির ভেতর প্রবেশ করতেই এক নারীকে ওড়না দিয়ে কিছু ঢাকার চেষ্টা করতে দেখি। তখন তাকে সন্দেহের বসে কি করছেন জানতে চাইলে ওড়নার কাপরের ভেতর থেকে শিশুর কান্নার শব্দ পাই। এরপর ওই শিশুটি পেয়েছে কোথায় এমন প্রশ্ন করলে নারী জানান, এটি তার সন্তান। এরপর আরও কিছু প্রশ্ন করলে তিনি বলেন, হাসপাতাল থেকে তাকে কারা যেন বাচ্চাটিকে দিয়েছেন। সাথে সাথে আমি ডাক-চিৎকার দিলে আশপাশের লোকজন জড়ো হয়ে যায়। ওইসময় ওই নারী শিশুটিকে রেখে পালিয়ে যেতে চাইলে সবাই মিলে তাকে ধরে ফেলি এবং ৯৯৯ ও স্থানীয় পুলিশ ফাঁড়িকে ফোন দেই। খবর পেয়ে তাৎক্ষনিক আমানতগঞ্জ ফাঁড়ি থেকে পুলিশ এসে শিশুটিসহ ওই নারীকে তাদের হেফাজতে নেয়।
এ বিষয়ে অতিরিক্ত উপপুলিশ কমিশনার (দক্ষিণ) মোঃ ফজলুল করিম বলেন, আমানতগঞ্জ পানির ট্যাংকি এলাকা থেকে মাসুম নামক এক ব্যক্তির সহায়তায় শিশুটিকে উদ্ধার করে পুলিশ সদস্যরা। তখন ওই শিশুটিকে চুরি করে নিয়ে যাওয়া নারী শাহিনুর বেগমকেও আটক করা হয়। পরবর্তীতে দ্রুত সময়ের মধ্যে উপপুলিশ কমিশনার (দক্ষিণ) মোঃ আলী আশরাফ ভূঞা, বিপিএম (বার) এর উপস্থিতিতে শেবাচিম হাসপাতালে গিয়ে শিশুটিকে তার মায়ের কোলে ফিরিয়ে দেয়া হয়।
আর আটক বরিশাল সদর উপজেলার চরহোগল গ্রামের আনিচ মিয়ার স্ত্রী শাহিনুর বেগমের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা প্রক্রিয়াধীণ রয়েছে বলে জানান তিনি।
আপনার মতামত লিখুন :
বি: দ্র: প্রিয় পাঠক সমালোচনা আপনার অধিকার । তবে ভাষাটাও মার্জিত হতে হবে। সাথে থাকার জন্য ধন্যবাদ ।