নেত্রকোনায় আসামীদের হামলায় এলাকা ছাড়া হত্যা মামলার বাদী

নিজস্ব প্রতিবেদক
এ কে এম আব্দুল্লাহ, জেলা প্রতিনিধি, নেত্রকোনা
প্রকাশিত: শুক্রবার ২৫শে জুন ২০২১ ০৮:৪৫ অপরাহ্ন
নেত্রকোনায় আসামীদের হামলায় এলাকা ছাড়া হত্যা মামলার বাদী

পুলিশের উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের নির্দেশ থাকার পরও প্রায় সাড়ে তিন মাস পর নিজ নিজ বাড়ী ঘরে উঠতে গিয়ে হত্যা মামলার আসামীদের হামলা, মারধর ও প্রাণনাশের হুমকিতে আবারও হত্যা মামলার বাদী ও স্বাক্ষীরা এলাকা ছাড়তে বাধ্য হয়েছে। 




এ মধ্যযোগীয় বর্বরোচিত ঘটনাটি ঘটেছে ২৩ জুন বিকালে নেত্রকোনা জেলার আটপাড়া উপজেলার তেলিগাতী ইউনিয়নের পালগাঁও গ্রামে। 






এ ব্যাপারে প্রতিকার, ন্যায় বিচার ও নিজ নিজ বসত বাড়ীতে পরিবার পরিজন নিয়ে নিরাপদে সুখে শান্তিতে বসবাসের জন্য নেত্রকোনা পুলিশ সুপারের বরাবরে লিখিত আবেদন জানিয়েছেন অসহায় পরিবারের চাঁন মিয়া ফকিরের পুত্র নুরুল হক। 





লিখিত অভিযোগে প্রকাশ, পালগাঁও গ্রামের মৃত হেলাল উদ্দিনের পুত্র স্থানীয় আওয়ামীলীগের নেতা মোজাম্মেল হকের সাথে জমি জমা ও এলাকায় আধিপত্য বিস্তার নিয়ে একই গ্রামের লাল মিয়ার পুত্র এ টি এম শহিদুজ্জামান হেলিমের বিরোধ চলে আসছিল। 



এরই জের ধরে ১ মার্চ হেলিম গংদের হামলায় মোজাম্মেলের মা মুক্তারের নেছা(৭৭) নিহত হয়। এ ব্যাপারে হেলিম গংদের বিরুদ্ধে হত্যা মামলা দায়ের করলে হেলিম গংরা ক্ষিপ্ত হয়ে দেশীয় অস্ত্রেশস্ত্রে সজ্জ্বিত হয়ে মামলার বাদী ও স্বাক্ষীদের বাড়ীঘরে হামলা চালিয়ে অগ্নিসংযোগ ও মালামাল লুট করে নিয়ে যায়। 




এরপর থেকেই মামলার বাদী ও স্বাক্ষীরা বাড়িঘর ফেলে রেখে জীবন বাঁচাতে অন্যত্র পালিয়ে বেড়াচ্ছে। হত্যা মামলার আসামীরা আদালত থেকে জামিন নিয়ে বাড়ীতে এসে হত্যা মামলা তুলে নেয়ার জন্য বাদী ও স্বাক্ষীর পরিবারের লোকজনকে নানা ধরনের ভয়ভীতি ও অব্যাহত প্রাণনাশের হুমকি দিয়ে আসছে। 




তারা হত্যা হত্যা মামলা তুলে নিতে বাধ্য করার জন্য বাদী ও স্বাক্ষীদের জড়িয়ে একে একে ৭টি মিথ্যা মামলা দায়ের করে। 





প্রায় সাড়ে তিন মাস বাড়ী ঘর ছেড়ে অন্যত্র পালিয়ে বেড়ানো অবস্থায় গত ২০ জুন হত্যা মামলার বাদী ও স্বাক্ষীরা জীবনের নিরাপত্তা ও নিজ নিজ বাড়ী ঘরে উঠার জন্য পুলিশ সুপারের বরাবরে লিখিত আবেদন জানায়। 



এরই প্রেক্ষিতে পুলিশ সুপার কেন্দুয়া সার্কেল ও আটপাড়া থানার ওসিকে নিজ নিজ বাড়ীঘরে উঠার জন্য প্রয়োজনীয় পুলিশী সহায়তার নির্দেশ প্রদান করেন। ২৩ জুন দুপুরের দিকে তেলিগাতী ইউনিয়নের দায়িত্বপ্রাপ্ত এস আই নবী নূরের উপস্তিতিতে হত্যা মামলার বাদী ও স্বাক্ষীরা নিজ নিজ বাড়ীঘরে উঠতে যায়। 




কিন্তু পুলিশ দুপুরের খাবারের জন্য তেলিগাতী বাজারে চলে যাওয়ার সাথে সাথে হেলিম গংরা বাদী ও স্বাক্ষীদের বাড়ীঘরে হামলা শুরু করে। এ সময় হামলাকারীরা মোজাম্মেলের ভাতিজা নুরুল হক ও তার ছেলে রাব্বীর উপর হামলা চালিয়ে মারধর শুরু করে।





 হামলাকারীরা নুরুল হকের কাছ থেকে ২ লক্ষ ৩১ হাজার টাকা লুট করে নিয়ে যায়। ছেলে রাব্বীকে বাচাঁতে মা আসমা আক্তার এগিয়ে আসলে হামলাকারীরা তাকেও মারপিট করে জখম করে। 




পরে আহতদেরকে আটপাড়া ও নেত্রকোনা আধুনিক সদর হাসপাতালে প্রয়োজনীয় চিকিৎসা প্রদান করা হয়।