গত কয়েকমাস ধরে মাঠের বাইরে হেড কোচ প্রসঙ্গে বেশ বেসামাল অবস্থায়ই রয়েছে শ্রীলঙ্কান ক্রিকেট বোর্ড। বাংলাদেশের দায়িত্ব থেকে পদত্যাগ করে নিজ দেশ শ্রীলঙ্কার হেড কোচ হয়েছিলেন চন্ডিকা হাথুরুসিংহে। কিন্তু গত বছরের বিশ্বকাপের পর থেকেই আর তার সঙ্গে বনিবনা হচ্ছিলো না লঙ্কান বোর্ডের।
যার ফলে গত আগস্টে হাথুরুসিংহেকে প্রধান কোচের পদ থেকে সরিয়ে রুমেশ রত্নায়েকেকে অন্তর্বর্তীকালীন কোচ নিয়োগ দেয় শ্রীলঙ্কা। পরে সদ্য সমাপ্ত বছরের শেষ মাসে মিকি আর্থুরকে পূর্ণ মেয়াদে এ দায়িত্ব সঁপে দেয়া হয়। কিন্তু তখনও সিদ্ধান্ত নেয়া হয়নি হাথুরুর ভবিষ্যতের ব্যাপারে। কারণ চড়া ক্ষতিপূরণ দিতে হবে বিধায় হাথুরুর সঙ্গে চুক্তিও বাতিল করেনি লঙ্কান ক্রিকেট বোর্ড।
সে ঘটনারই জের ধরে এবার নিজ দেশের ক্রিকেট বোর্ডের কাছে বিশাল অঙ্কের ক্ষতিপূরণ দাবি করেছেন চন্ডিকা হাথুরুসিংহে। নিজের খ্যাতি ক্ষতিগ্রস্ত হওয়া এবং অন্যায়ভাবে দায়িত্ব থেকে সরিয়ে দেয়ার অভিযোগ করে লঙ্কান বোর্ডের কাছে ৫০ লাখ ডলার (বাংলাদেশি মুদ্রায় প্রায় ৪২ কোটি ৩৮ লাখ টাকা) দাবি করেছেন হাথুরু।
শুধু তাই নয়, রীতিমতো আন্তর্জাতিক আদালতে মামলা ঠুকে দিয়েছেন শ্রীলঙ্কার এ সাবেক ওপেনার। যার ফলে এ মামলার পরবর্তী কার্যক্রম হবে সুইজারল্যান্ডের জেনেভায়। এরই মধ্যে নিজের বর্তমান বাসস্থান সিডনিতে ফিরে গেছেন হাথুরু। তার আইনজীবীরাই এখন দেখবেন মামলার পরবর্তী বিষয়াদি। শ্রীলঙ্কান দৈনিক সানডে আইল্যান্ড জানিয়েছে এ খবর।
হাথুরুর এ ক্ষতিপূরণ দাবির কথা স্বীকার করে নিয়েছেন লঙ্কান ক্রিকেট বোর্ডের এক কর্মকর্তা। যিনি জানিয়েছেন, এরই মধ্যে বোর্ডের পক্ষ থেকে হাথুরুর ব্যাপারে মধ্যস্থতার সিদ্ধান্ত নেয়া হচ্ছিলো। তার বদলে এখন আইনি লড়াইয়ে যেতে হবে। সেই কর্মকর্তা এও জানিয়েছেন, হাথুরুকে ঠিকই ক্ষতিপূরণ দিতে হবে বোর্ডের। তবে সেটি ৫০ লাখ ডলারের মতো বড় অঙ্কের হবে না।
দুই পক্ষের মধ্যে যখন মধ্যস্থতার ব্যাপারে আলোচনা হচ্ছিলো, তখন হাথুরু দাবি করেছিলেন তাকে পুরো ১৮ মাসের পারিশ্রমিক দিতে হবে। যা কি না প্রায় ১০ লাখ ডলারের কাছাকাছি। কিন্তু লঙ্কান বোর্ড তাকে ছয় মাসের পারিশ্রমিক দিতে রাজি হয়। এ আলোচনায় কোনো সমাধান না আসায় আইনি পদক্ষেপ নিয়েছেন হাথুরু।
২০১৭ সালের জানুয়ারিতে মাসিক ৪০ হাজার ডলার পারিশ্রমিক ও অন্যান্য আনুষঙ্গিক সুবিধাদির চুক্তিতে হাথুরুকে হেড কোচের দায়িত্ব দিয়েছিল শ্রীলঙ্কান ক্রিকেট বোর্ড। সবমিলিয়ে তিনি প্রতি মাসে প্রায় ৬০ লাখ ডলারের কাছাকাছি পারিশ্রমিক পেতেন। তার চুক্তির মেয়াদ ছিলো ২০২০ সালের ডিসেম্বর পর্যন্ত।
কিন্তু ২০১৯ সালের আগস্টেই হাথুরকে হেড কোচের দায়িত্ব থেকে সরিয়ে দেয় শ্রীলঙ্কা। যার ফলে চুক্তির বাকি থাকা ১৮ মাসের পুরো পারিশ্রমিক দাবি করছেন হাথুরু। কিন্তু বোর্ড চাচ্ছে ২০১৯ সালের ডিসেম্বর পর্যন্ত ৬ মাসের পারিশ্রমিক পরিশোধ করতে। এ শর্তে বনিবনা হয়নি বলেই মূলত বিশাল অঙ্কের ক্ষতিপূরণের দাবি করে বসেছেন হাথুরু।
কোচিং স্টাফের সঙ্গে দুর্বল সম্পর্কের ঘটনা এটিই নতুন নয় শ্রীলঙ্কার জন্য। প্রায় ৮ বছর আগে ২০১২ সালে জিওফ মার্শের সঙ্গেও চুক্তি বিষয়ক ঝামেলা গড়ায় আইনি লড়াই পর্যন্ত। যেখানে পরাজিত হওয়ায় চড়া মূল্য দিতে হয়েছিল লঙ্কান বোর্ডকে।
ইনিউজ ৭১/টি.টি. রাকিব
আপনার মতামত লিখুন :
বি: দ্র: প্রিয় পাঠক সমালোচনা আপনার অধিকার । তবে ভাষাটাও মার্জিত হতে হবে। সাথে থাকার জন্য ধন্যবাদ ।