লক্ষ্য ২৪৮ রানের। ১০৭ রানে ৩ উইকেট হারিয়ে কিছুটা বিপদে পড়েছিল বাংলাদেশ। সেখান থেকে দলকে টেনে তোলার দায়িত্ব নেন মুশফিকুর রহীম আর মোহাম্মদ মিঠুন। চতুর্থ উইকেটে এই যুগল অবিচ্ছিন্ন আছেন ৭২ রানে। এই রিপোর্ট লেখা পর্যন্ত ৩৫ ওভার শেষে বাংলাদেশের সংগ্রহ ৩ উইকেটে ১৭৯ রান। মুশফিক ৩৭ আর মিঠুন অপরাজিত আছেন ৩৫ রানে। ৯০ বলে টাইগারদের দরকার ৬৯ রান। রান তাড়ায় নেমে দুই ওপেনার তামিম ইকবাল আর সৌম্য সরকার উদ্বোধনী জুটিতে তুলে দেন ৫৪ রান। নবম ওভারে অ্যাশলে নার্সকে মারতে গিয়ে উইকেট ছেড়ে বেরিয়ে এসেছিলেন তামিম। ঘূর্ণি বুঝতে না পেরে ২১ রানে হয়ে যান বোল্ড।
দ্বিতীয় উইকেটে সাকিবকে নিয়ে ৫২ রানের আরেকটি জুটি সৌম্যর। এরপরই জোড়া আঘাত, বোলার সেই নার্স। তিন বলের ব্যবধানে সেট দুই ব্যাটসম্যানকে সাজঘরের পথ দেখান ক্যারিবীয় স্পিনার। সাকিবও তামিমের মতো বেরিয়ে এসে খেলতে চেয়েছিলেন, শর্ট কভারে ধরা পড়েন রস্টন চেজের হাতে। ৩৬ বলে ৩ বাউন্ডারিতে ২৯ রান করেন বিশ্বসেরা অলরাউন্ডার। এক বল পর শর্ট মিডউইকেটে সুনিল এমব্রিসের ক্যাচ হন হাফসেঞ্চুরিয়ান সৌম্য। ৬৭ বলে ৪ চার আর ২ ছক্কায় তখন ৫৪ রানে বাঁহাতি এই ওপেনার।
এর আগে নিয়ন্ত্রিত বোলিংয়ে ওয়েস্ট ইন্ডিজকে হাত খুলে খেলতে দেননি বাংলাদেশের বোলাররা। শাই হোপ আর জেসন হোল্ডার হাল না ধরলে বড় বিপদেই পড়তো ক্যারিবীয়রা। শেষ পর্যন্ত তারা তুলতে পেরেছে ৯ উইকেটে ২৪৭ রান। টস জিতে ব্যাটিংয়ে নেমে ঝড়ো সূচনা করেছিল ওয়েস্ট ইন্ডিজ। বিশেষ করে ওপেনার সুনিল এমব্রিস ছিলেন বেশি ভয়ংকর। অবশেষে ভয়ংকর হয়ে উঠা এই ওপেনারকে সাজঘরের পথ দেখিয়ে উদ্বোধনী জুটিটি ভাঙেন মাশরাফি বিন মর্তুজা। উদ্বোধনী জুটিতে এমব্রিস আর শাই হোপ তুলেন ৩৫ বলে ৩৭ রান। এমব্রিস ১৮ বলেই ৪ বাউন্ডারিতে করে ফেলেছিলেন ২৩ রান। ষষ্ঠ ওভারে এসে মাশরাফি তাকে সৌম্য সরকারের ক্যাচ বানিয়েছেন। ডানদিকে ঝাঁপিয়ে পড়ে দারুণ এক ক্যাচ নেন স্লিপে দাঁড়ানো সৌম্য। এরপর ড্যারেন ব্রাভোকে এলবিডব্লিউয়ের ফাঁদে ফেলেন মেহেদী হাসান মিরাজ। ১৩ বলে মাত্র ৬ রান করেন এই ব্যাটসম্যান। তৃতীয় উইকেটে রস্টন চেজকে নিয়ে আবারও প্রতিরোধের চেষ্টা হোপের।
৩৩ রানের এই জুটিটি ভাঙেন মোস্তাফিজুর রহমান। মিড উইকেটে ক্যাচটা প্রায় ছুটে যাচ্ছিল। দ্বিতীয়বারের চেষ্টায় মাহমুদউল্লাহ সেটি তালুবন্দী করেন। ১৯ রান করেন চেজ। ক্যারিবীয় ইনিংসে চতুর্থ আঘাতটিও হানেন মোস্তাফিজই। জোনাথান কার্টারকে ৩ রানে এলবিডব্লিউ করেন বাঁহাতি কাটার মাস্টার। ৯৯ রানে ৪ উইকেট হারায় ওয়েস্ট ইন্ডিজ। মাঝে বাংলাদেশি বোলারদের বিপক্ষে রান তুলতে রীতিমত ঘাম ঝরছে ওয়েস্ট ইন্ডিজের। টানা ১০৩ বল বাউন্ডারির দেখা পায়নি ক্যারিবীয়রা। সৌম্য সরকারের করা ইনিংসের ৩০তম ওভারে এসে সেই খরা কাটান জেসন হোল্ডার। ওভারের চতুর্থ বলে একটি চার মারেন ক্যারিবীয় অধিনায়ক, পরের বলে মেরে দেন আরেকটা।
হোল্ডার আর হোপ মিলেই ক্যারিবীয়দের বড় লজ্জা থেকে বাঁচান। পঞ্চম উইকেটে তারা গড়েন ১০০ রানের জুটি। আরেকটি সেঞ্চুরির পথেই যাচ্ছিলেন হোপ। অবশেষে তাকে উইকেটের পেছনে ক্যাচ বানান মাশরাফি। ১০৮ বলে ৬ বাউন্ডারি আর ১ ছক্কায় ৮৭ রান করেন এই ওপেনার। সঙ্গী হারিয়ে হোল্ডারও বেশিক্ষণ টিকতে পারেননি। একইভাবে মাশরাফির বলে উইকেটরক্ষক মুশফিকুর রহীমের কাছে ক্যাচ হন ৭৬ বলে ৬২ রানে থাকার সময়। এরপর ফ্যাবিয়েন অ্যালেনকে (৭) এলবিডব্লিউ করেন সাকিব। অ্যাশলে নার্স (১৪) আর রেমন রেইফারকে (৭) দুর্দান্ত দুই ডেলিভারিতে ফেরান মোস্তাফিজ। সবমিলিয়ে ৯ ওভারে ৪৩ রান খরচায় কাটার মাস্টার নেন ৪টি উইকেট। ১০ ওভারে ৬০ রান দিয়ে ৩ উইকেট নেন মাশরাফি। একটি করে উইকেট সাকিব আল হাসান আর মেহেদী হাসান মিরাজের।
ইনিউজ ৭১/টি.টি. রাকিব
আপনার মতামত লিখুন :
বি: দ্র: প্রিয় পাঠক সমালোচনা আপনার অধিকার । তবে ভাষাটাও মার্জিত হতে হবে। সাথে থাকার জন্য ধন্যবাদ ।