বাবা আর কতদিন

নিজস্ব প্রতিবেদক
এম. কে. রানা - বার্তা প্রধান ইনিউজ৭১
প্রকাশিত: শুক্রবার ২৪শে এপ্রিল ২০২০ ১১:৫৩ অপরাহ্ন
বাবা আর কতদিন

‘বাবা আর কতদিন তুমি বাড়িতে আসবে না? মায়ের প্রশ্নের উত্তরে ছেলে বলছে, ‘মা আল্লাহকে ডাকো আমি যেন তোমাদের মাঝে ফিরে আসতে পারি।’ মা আবার বলছে, ‘সব সময় রুমের মধ্যে থেকো, বাহিরে বের হবে না’। এবার ছেলে বললো ‘মা দেশ মাতৃকার টানে আমি যে আবদ্ধ, তাই দেশের মানুষের কল্যাণের জন্যই আমাকে বের হতে হয়’। মা আবার বললেন, ‘সাবধানে থেকো, নিয়ম মেনে চলো’। মুঠোফোনে এক মা তার সন্তানকে (পুলিশ সদস্য) এভাবেই কথাগুলো বলছিলেন। 

তাদের একথাগুলো শুনে মনে হচ্ছিল সেই ৭১’এর মুক্তিযুদ্ধে অংশগ্রহণকারী বীর সন্তানদের কথা। দীর্ঘ ৯ মাস যুদ্ধ চলাকালীন মায়ের প্রিয় মুখটি শুধু কল্পনাতেই একেছিলেন এ দেশের বীর সন্তানরা। কেউবা মায়ের কোলে ফিরে এসেছেন, কেউবা আবার মায়ের প্রিয় মুখটি মনের গহিনে কল্পনা করতে করতেই প্রাণ হারিয়েছেন। বর্তমান বিশ্বে মহামারী আকার ধারণ করা করোনা ভাইরাসে এ দেশকে, দেশের মানুষকে রক্ষায় জীবনের ঝুঁকি নিয়ে মাঠে রয়েছে বাংলার বীর সন্তানেরা (চিকিৎসক, নার্স, স্বাস্থ্যকর্মী, বাংলাদেশ পুলিশ, গণমাধ্যম কর্মী, সেনা, নৌ, বিমান বাহিনীর সদস্য, বিদ্যুত বিভাগের সদস্যসহ বিভিন্ন সরকারি বেসরকারি সংস্থার সদস্যরা)। 

অদৃশ্য শত্রু করোনা ভাইরাসে বাংলাদেশে মৃতের সংখ্যা একশ’ ছাড়িয়েছে। আর আক্রান্তের সংখ্যা সাড়ে ৪ হাজার ছাড়িয়েছে। তবে এ সংখ্যাটি যাতে আর দীর্ঘ না হয় সেজন্য একযোগে কাজ করে যাচ্ছেন দেশপ্রেমিক বীর সন্তানরা। ইতিমধ্যে করোনায় আক্রান্ত হয়ে একজন চিকিৎসকের মৃত্যু হয়েছে। আর আক্রান্ত হয়েছেন অনেক চিকিৎসক, নার্স, স্বাস্থ্যকর্মী, সেনা সদস্য, পুলিশ, গণমাধ্যম কর্মী, বিদ্যুৎ কর্মীসহ অনেকে। নানা প্রতিকূলতার মাঝেও তারা তাদের দায়িত্ব থেকে পিছপা হননি। কিন্তু দেশের জনগণকে রক্ষায় যারা দিনরাত পরিশ্রম করে যাচ্ছেন তাদের পরিশ্রমকে থোরাই কেয়ার করছেন আমাদের দেশের কিছু মানুষ। 

সরকার ঘোষিত লকডাউন উপেক্ষা করেই তারা অকারণে ঘোরাঘুরি, এক স্থান থেকে অন্য স্থানে যাচ্ছেন। সব চেয়ে বড় কথা এদেশের অনেক মানুষ এখনো নিজের মধ্যে করোনা ভাইরাসের লক্ষণ দেখা দিলেও তা গোপন করে ভাইরাসটি ছড়িয়ে দিচ্ছেন। করোনা ভয়াবহতা তাদের কানে পৌছায় না। এদেরকে এখনই রুখতে হবে। হতে হবে কঠোর। যেমনটি হয়েছিলেন এদেশের বীর সন্তানরা মুক্তিযুদ্ধের সময়। দেশের ক্ষতিসাধণে যে বা যারাই জড়িত হোক পিছপা হলে চলবে না। দেশের কল্যাণে সেই সকল যোদ্ধাদের পাশে আছে কোটি কোটি দেশ প্রেমিক জনগণ।

চিকিৎসক, নার্স, স্বাস্থ্যকর্মী, বাংলাদেশ পুলিশ, গণমাধ্যম কর্মী, সেনা, নৌ, বিমান বাহিনীর সদস্য, বিদ্যুত বিভাগসহ বিভিন্ন সরকারি বেসরকারি সংস্থা ও ব্যক্তি পর্যায়ে করোনা মোকাবেলায় কাজ করে যাচ্ছেন। কারো ভুমিকা ছোট করে দেখার উপায় নেই। তবে মায়েরা তাদের বীর সন্তানদের মঙ্গল কামনায় সর্বদা সৃষ্টিকর্তাকে ডেকে চলেছেন। আসছে রমজানে সৃষ্টিকর্তাও তাদের ডাকে সাড়া দিবেন এ প্রত্যাশায়। মহান সৃষ্টিকর্তা আমাদের রক্ষা করুন। আমিন।