বাংলাদেশে সংখ্যালঘুদের নিরাপত্তা নিয়ে ভারতীয় সংসদে তীব্র আলোচনা, হামলার অভিযোগ

নিজস্ব প্রতিবেদক
সৌম্যা সাহা , কলকাতা প্রতিনিধি ভারত
প্রকাশিত: বৃহঃস্পতিবার ২৮শে নভেম্বর ২০২৪ ০৬:১০ অপরাহ্ন
বাংলাদেশে সংখ্যালঘুদের নিরাপত্তা নিয়ে ভারতীয় সংসদে তীব্র আলোচনা, হামলার অভিযোগ

ভারতের সংসদে বৃহস্পতিবার (২৮ নভেম্বর) বাংলাদেশে সংখ্যালঘু হিন্দু সম্প্রদায়ের বিরুদ্ধে হামলা ও মন্দির-প্রতীমা ভাঙচুরের অভিযোগ নিয়ে আলোচনা হয়েছে। ভারতীয় সংসদ সদস্যরা বাংলাদেশে হিন্দুদের ওপর হামলার ঘটনা এবং মন্দিরে আক্রমণের ব্যাপারে উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন। এই ঘটনায় ভারতের পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী কীর্তি বর্ধন সিং সংসদে বক্তব্য দেন এবং দাবি করেন যে, সম্প্রতি বাংলাদেশে হিন্দুদের মন্দির ও প্রতীমা ভাঙচুরের ঘটনা বৃদ্ধি পেয়েছে।


বিরোধী দলীয় সংসদ সদস্যরা বাংলাদেশের সাম্প্রতিক পরিস্থিতি ও সংখ্যালঘু হিন্দুদের নিরাপত্তা নিয়ে প্রশ্ন তোলেন। বিশেষ করে, তাঁতিবাজারে পূজামণ্ডপে হামলা এবং সাতক্ষীরার কালী মন্দির থেকে দুর্গাপূজার সময় সোনার মুকুট চুরির ঘটনার প্রসঙ্গ তোলেন। এ বিষয়ে ভারত সরকার বাংলাদেশ সরকারের প্রতি উদ্বেগ প্রকাশ করেছে এবং সংখ্যালঘুদের প্রার্থনাস্থলগুলোর নিরাপত্তা নিশ্চিত করার জন্য আহ্বান জানিয়েছে।


এই আলোচনা ভারতীয় পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের পক্ষ থেকে একটি গুরুত্বপূর্ণ পদক্ষেপ হিসেবে দেখা হচ্ছে, যেখানে দেশটির সরকার বাংলাদেশকে সংখ্যালঘুদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করার জন্য অনুরোধ জানিয়েছে। কীর্তি বর্ধন সিং আরও বলেন, "ভারত সরকার বাংলাদেশের প্রতি তাদের উদ্বেগ জানিয়ে দিয়েছে এবং বাংলাদেশে সংখ্যালঘুদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করার আহ্বান জানিয়েছে।"


এদিকে, ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি এবং পররাষ্ট্রমন্ত্রী এস জয়শঙ্কর সনাতনী জাগরণ মঞ্চের মুখপাত্র চিন্ময় কৃষ্ণ দাসের গ্রেপ্তার ও পরবর্তী ঘটনাবলী নিয়ে বৈঠক করেছেন। তারা বাংলাদেশের সংখ্যালঘুদের ওপর হামলা এবং পরিস্থিতি নিয়েও আলোচনা করেছেন।


ওদিকে, পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বাংলাদেশের বিষয় নিয়ে তার অবস্থান স্পষ্ট করেছেন। তিনি বলেছেন, "বাংলাদেশ একটি স্বাধীন দেশ এবং এর ব্যাপারে ভারত সরকারের দৃষ্টিভঙ্গি অনুযায়ী কাজ করা হবে।" তিনি আরও বলেন, "এটি কেন্দ্রীয় সরকারের বিষয়, এবং রাজ্য সরকার কেন্দ্রের সিদ্ধান্ত মেনে চলবে।"


মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বাংলাদেশে হিন্দুদের ওপর হামলার বিষয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করলেও, বিদেশি বিষয় হিসেবে এটি নিয়ে ভারত সরকারের নীতি অনুসরণের পক্ষেই তিনি অবস্থান নিয়েছেন।


ভারতীয় সংসদে এই বিষয়ে আলোচনার পাশাপাশি, বাংলাদেশে সংখ্যালঘুদের নিরাপত্তা এবং তাদের ধর্মীয় স্বাধীনতা নিয়ে আন্তর্জাতিক মহলে উদ্বেগ বাড়ছে। তবে বাংলাদেশের পক্ষ থেকে এ বিষয়ে স্পষ্ট কোনো মন্তব্য করা হয়নি, এবং পরিস্থিতি নিয়ে সরকারের পক্ষ থেকে কোনো আনুষ্ঠানিক প্রতিক্রিয়া পাওয়া যায়নি।