করোনা চিকিৎসায় অনীহা, ১০ চিকিৎসক বরখাস্ত

নিজস্ব প্রতিবেদক
নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রকাশিত: মঙ্গলবার ১৬ই জুন ২০২০ ১১:৩৫ অপরাহ্ন
করোনা চিকিৎসায় অনীহা, ১০ চিকিৎসক বরখাস্ত

চট্টগ্রামে করোনা রোগীদের চিকিৎসা সেবা দিতে অপরাগতা প্রকাশ করায় ১০ চিকিৎসক এবং একজন স্টোরকিপারকে অব্যাহতি দিয়েছে সিটি কর্পোরেশন।

মঙ্গলবার (১৬ জুন) সন্ধ্যায় এসব চিকিৎসক এবং কর্মকর্তাকে বরখাস্তের কথা আনুষ্ঠানিকভাবে জানানো হয়। চট্টগ্রাম সিটি কর্পোরেশনের সচিব তাদের অব্যাহতিপত্রে স্বাক্ষর করেছেন বলে নিশ্চিত করেছেন প্রধান স্বাস্থ্য কর্মকর্তা ডা. সেলিম আকতার চৌধুরী। 

অব্যাহতিপ্রাপ্ত চিকিৎসকরা হলেন- সিদ্ধার্থ শংকর দেবনাথ, ফরিদুল আলম, আবদুল মজিদ সিকদার, বিজয় তালুকদার, সেলিনা আকতার, মোহন দাশ, ইফতেখারুল ইসলাম, সন্দ্বীপন রুদ্র, হিমেল আচার্য এবং ডা. প্রসেনজিৎ মিত্র। এছাড়া বরখাস্তকৃত স্টোরকিপার হলেন মহসিন কবির। 

নগরীর আগ্রাবাদ এক্সেস রোড এলাকায় একটি কমিউনিটি সেন্টারকে আইসোলেশন সেন্টারে রূপ দেয়া চিকিৎসা কেন্দ্রটি ১৩ জুন আনুষ্ঠানিক উদ্বোধন করা হলেও এখনো কোনো রোগী ভর্তি হয়নি। আগামী দু’একদিনের মধ্যে আড়াইশ’ শয্যার এ আইসোলেশন সেন্টারে রোগী ভর্তি করানোর কথা রয়েছে। মূলত মৃদু করোনা উপসর্গ রয়েছে এমন রোগীদের চিকিৎসা দেয়া হবে এখানে। 

সিটি কর্পোরেশনের প্রধান স্বাস্থ্য কর্মকর্তা ডা. সেলিম আক্তার চৌধুরী গণমাধ্যমকে জানিয়েছেন, এসব চিকিৎসককে নবগঠিত আইসোলেশন সেন্টারের দায়িত্ব দেয়া হয়েছিল। এমনকি তাদের ৩ দিনব্যাপী প্রশিক্ষণের পাশাপাশি সুযোগ-সুবিধাও বাড়ানো হয়। কিন্তু আইসোলেশন সেন্টারে রোগী ভর্তি হওয়ার ঠিক আগ মুহূর্তে তারা দায়িত্ব পালনে অপরাগতা প্রকাশ করেন। একই সঙ্গে ওই আইসোলেশনে স্টোরকিপারও যোগ দিতে অপরাগতা জানানোর কারণে ১১ জনকেই বরখাস্তের সিদ্ধান্ত নেয় সিটি কর্পোরেশন।

চিকিৎসকদের করোনা রোগীদের চিকিৎসা দিতে অনীহার বিষয়টি সম্পর্কে ডা. সেলিম আক্তার জানান, নগরীর ৪১টি ওয়ার্ডের স্বাস্থ্য কেন্দ্রে নিয়োজিত চিকিৎসক, ফার্মাসিস্ট, টেকনিশিয়ান এবং স্বাস্থ্যকর্মীদের বাছাই করে আইসোলেশন সেন্টারে পোস্টিং দেয়া হয়েছিল। ঝুঁকি বিবেচনায় এসব চিকিৎসকদের বেতনসহ অন্যান্য ভাতা বাড়ানোর পাশাপাশি সরকারি নিয়ম অনুযায়ী প্রণোদনের কথাও বলা হয়েছে।

সিটি মেয়র আ জ ম নাছির উদ্দিনও এসব চিকিৎসকের সঙ্গে কথা বলেছেন। 

প্রধান স্বাস্থ্য কর্মকর্তা আরও জানান, সোমবার থেকে আইসোলেশন সেন্টারে দায়িত্ব পালনের কথা থাকলেও রোববার থেকেই তারা অফিসের সঙ্গে যোগাযোগ বন্ধ করে দেন। একাধিকবার ফোন দিলেও এদের অনেকেই ফোন ধরা থেকে বিরত থাকেন। পরবর্তীতে বিভিন্ন মাধ্যমে তাদের সিদ্ধান্ত জানার পর পরই কর্পোরেশন এসব চিকিৎসককে বরখাস্ত করে। বরখাস্ত হওয়া চিকিৎসকদের একটি অংশ আর্থিকভাবে সচ্ছল থাকায় করোনা রোগীদের সেবা দিতে আগ্রহী হয়নি বলে ধারণা করছেন তিনি। এর মাঝে বেশ কজন রয়েছেন নবীন চিকিৎসক।