ঘুড়ে আসেন মেঘের রাজ্য সাজেক ভ্যালি

নিজস্ব প্রতিবেদক
গোলাম রব্বানী, উপজেলা প্রতিনিধি হিলি (দিনাজপুর)
প্রকাশিত: সোমবার ১লা জুলাই ২০২৪ ০৩:৫৮ অপরাহ্ন
ঘুড়ে আসেন মেঘের রাজ্য সাজেক ভ্যালি

মেঘের উপত্যকায় জীবনের একটা অংশ কাটালে কেমন হবে বলুন তো? যেখানে আপনি থাকবেন মেঘের সমুদ্রের ওপরে পাহাড়ের চূড়ায়। হঠাৎ দেখা যাবে একদিকে বৃষ্টি, অন্যদিকে রোদ। সবকিছু মিলে যেন স্বর্গের এক খণ্ড এই পৃথিবীর বুকে। বলছি মেঘের রাজ্য সাজেক ভ্যালির কথা।


স্বপ্নের সাজেক যাবেন কীভাবেঃ স্বপ্নের


সাজেক যেতে হলে প্রথমে যেতে হবে খাগড়াছড়ি। লোক সংখ্যা বেশি হলে খাগড়াছড়ি সদরের শাপলা চত্বর কাউন্টার থেকে সকালে বিকেলে আসা (১২ জন) ৮০০০ টাকা এবং কোন পর্যটক দল যদি সাজেক রাত যাপন করে তাহলে ১০০০০ টাকা সাদা রংয়ের (জীপ) চাঁনদের গাড়ি রিজার্ভ করে যেতে পারেন। একটি গাড়িতে ১২ জন পর্যটক আর সবুজ রংয়ের চাঁন্দের (জীপ) গাড়িতে ১২ জনের জায়গায় একটু কষ্ট করে ১৪ জন পর্যটক যেতে পারে। অথবা ঢাকার আব্দুল্লাহপুর বা সায়েদাবাদ বাসস্ট্যান্ড থেকে বিভিন্ন গাড়িতে খাগড়াছড়ি যেতে হবে। নন-এসি ও এসি বাসের ভাড়া আলাদা হবে। 


পাহাড়ের দুই-তিন ঘণ্টার এই পথ (দিন যাওয়া দিনে আসা) গাড়িগুলো বাঘাই সেনাবাহিনী ক্যাম্পের চেকপোস্টে সকাল দশটার মধ্যে সিরিয়াল করে পর্যটকদের গুরুত্বপূর্ণ ও পরামর্শ টিপস দিয়ে সেনাবাহিনী ও পুলিশের স্কোট দিয়ে পাহাড়ি আঁকা বাকাঁ ও উঁচু নিচু পথ অতিক্রম করে আপনি পৌঁছে যাবেন মেঘের রাজ্য সাজেকে।


আবার সাজেক এর অপরুপ সৌন্দর্য উপভোগ করে যারা দিনেই ফিরে আসবেন সেই গাড়িগুলো সাজেক চেকপোস্টে দুপুর দুইটায় সিরিয়াল করে স্কোর্ট এর মাধ্যমে গাড়ি ছেড়ে দেওয়া হয় বাঘাই সেনাবাহিনীর চেকপোস্টে ফিরে আসার কার্ড জমা দিয়ে নিশ্চিত করাতে হয়। আর একই নিয়মে দুপুর দুইটায় যে গাড়ী গুলো স্কোর্টের মাধ্যমে সাজেক পৌঁছায় ওই পর্যটক গন সৃর্য উদ্বয় এবং সূর্য অস্ত যাওয়ার অপরুপ সৌন্দর্য সহ মন জুড়ানো দূর্শ ও মেঘের সাথে খেলা করে পরের দিন সাজেক ভ্যালি থেকে চলে আসে।


সাজেকে গিয়ে যারা রাত্রী যাপন করবেন তারা থাকবেন কোথায়ঃ

সাজেক ভ্যালিতে বর্তমানে ছোট-বড় মিলিয়ে প্রায় ১০০-১২০টি রিসোর্ট রয়েছে। যার সবগুলো টিন ও কঠ দিয়ে তৈরি বিভিন্ন ডিজাইনের। সাজেকের বাঁ পাশের রিসোর্টগুলো থেকে বাংলাদেশ এবং ডান পাশের রিসোর্টগুলো থেকে মিজোরামের ভিউ পাওয়া যায়।


প্রতিটি রিসোর্ট থেকে পাহাড় ও মেঘের অপরূপ সৌন্দর্য উপভোগ করা যায়। হোটেল বা রিসোর্ট বুক করেই সাজেকে আসা ভালো। হঠাৎ চলে এলে থাকার জায়গা না-ও পেতে পারেন।


মৌসুমে ও টানা ছুটিতে রিসোর্টে প্রতিটি কক্ষের এক রাতের ভাড়া পড়বে রবি থেকে বৃহস্পতিবার ২ হাজার থেকে ৩ হাজার টাকা। আর শুক্র-শনিবার সেটা বেড়ে ৩ হাজার থেকে ৪ হাজার টাকা হতে পারে কিংবা তারও কিছু বেশি। তবে বন্ধ সিজনে এখানে রুম ভাড়া অনেকটাই কম থাকে। 


ভ্যালির খাওয়াদাওয়াঃ

এখানে বেশ কিছু ভালো মানের রেস্তোরাঁ আছে। সেখানে পর্যটকরা প্যাকেজের মাধ্যমে সাশ্রয়ী দামে দেখেশুনে খেতে পারেন।


সাজেক পৌঁছার পরে কোথায় ঘুরবেনঃ


পুরো সাজেক দুর্দান্ত সুন্দর জায়গা। তবে এখানে দেখার কিছু জনপ্রিয় জায়গা আছে।

লুসাই গ্রামে দেখা যাবে পাহাড়ীদের  জীবনযাপন, ঐতিহ্য। এখানে জন প্রতি প্রবেশমূল্য ৩০ টাকা।


সর্বোচ্চ উঁচু কংলাক পাহাড়ঃ


কংলাক পাহাড়ের চূড়ায় যেতে হলে আপনাকে বেশ কিছু রাস্তা ট্র্যাকিং করতে হবে। এখান থেকে দেখা সূর্যাস্ত আপনার স্মৃতিতে সব সময় বিচরণ করবে।


মারিশ্যা হ্যালি প্যাডঃ

এটি সাজেকের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ পয়েন্ট। ভোরে সূর্যোদয় দেখার জন্য জনপ্রিয় জায়গা এটি। সে সময় মেঘের আস্তরণ এতটাই ঘন থাকে যে পাহাড়ের নিচের অংশ দেখা যায় না।


সাজেক ভ্যালিতে আগত পর্যাটকদের জন্য জরুরি তথ্য একাধিক জাতীয় পরিচয়পত্রের ফটোকপি সঙ্গে রাখবেন। জরুরি কিছু ওষুধ নিয়ে যাবেন।  ট্র্যাকিংবান্ধব জুতা সঙ্গে রাখবেন। সাজেকে সবকিছুর দাম কিছুটা বেশি। তাই প্রয়োজনীয় জিনিসপত্র সঙ্গে নিয়ে যাবেন।