বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের আহ্বায়ক হাসনাত আব্দুল্লাহ নিত্যপণ্যের দাম বৃদ্ধি ও সরকারের বর্ধিত কর নিয়ে তীব্র সমালোচনা করেছেন। বুধবার সন্ধ্যায় নিজের ভেরিফায়েড ফেসবুক পেজে এক পোস্টে তিনি দেশের সাধারণ মানুষের দুঃখ-দুর্দশা এবং সরকারের সীমাবদ্ধতার বিষয়ে ক্ষুব্ধ মন্তব্য করেন। তিনি বলেন, দেশের মানুষ সহজ-সরল জীবনযাপনে অভ্যস্ত। যখন নিত্যপ্রয়োজনীয় জিনিসপত্রের দাম অস্বাভাবিকভাবে বেড়ে যায়, তখন তারা ধরে নেয় দেশ ভালো নেই।
হাসনাত অভিযোগ করেন, ফ্যাসিজমের সহযোগীরা দেশের অর্থনীতি লুটপাট করেছে এবং অর্থ বিদেশে পাচার করেছে। সরকারি প্রকল্প থেকে কোটি কোটি টাকা আত্মসাৎ করা হয়েছে, যা অর্থনীতিকে ভঙ্গুর করে তুলেছে। তিনি উল্লেখ করেন, স্বৈরাচারী সরকার জনগণকে কথা বলতে দিত না। তবে জুলাই আন্দোলনের মাধ্যমে মানুষ তাদের কথা বলার অধিকার ফিরে পেয়েছে।
তিনি বলেন, মানুষের এই দুর্ভোগ দিনশেষে ফ্যাসিজমের কবর রচনা করেছে। জনগণকে নিপীড়ন ও শোষণ করে শাসন করা অসম্ভব। এ দেশের মানুষ প্রতিবাদ করতে জানে এবং তা করবেই। তিনি আরো বলেন, অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের সীমাবদ্ধতা ও অদক্ষতার বিরুদ্ধেও মানুষ এখন মুখ খুলছে, যা একটি গণতান্ত্রিক পরিবেশের ইঙ্গিত।
হাসনাত মনে করেন, জনগণের দাবি-দাওয়া মেনে নেওয়া সরকারের দায়িত্ব। তিনি বলেন, সাম্প্রতিক সময়ে ভ্যাট বৃদ্ধি কেন করা হলো, এর বিকল্প কী ছিল, এবং কবে নাগাদ পরিস্থিতি স্বাভাবিক হবে, এসব বিষয়ে জনগণকে অবহিত করা প্রয়োজন। তিনি মনে করেন, সরকারের এমন প্রতিটি পদক্ষেপের পূর্ণাঙ্গ ব্যাখ্যা সাধারণ মানুষের কাছে পৌঁছানো জরুরি।
তিনি হুঁশিয়ারি দেন, এ বিষয়ে গড়িমসি করলে জনগণের স্বপ্ন এবং অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের প্রতি আস্থা হুমকির মুখে পড়বে। তরুণ সমাজের প্রতি আহ্বান জানিয়ে তিনি বলেন, বিভাজনের রাজনীতিকে প্রশ্রয় না দিয়ে দেশের উন্নয়নে ভূমিকা রাখতে হবে। এদেশের জাগ্রত তরুণ সমাজ দেশের ভবিষ্যৎ। তাদের নিয়ে সঠিক পথে এগোলে দেশ উন্নতির শিখরে পৌঁছাতে সক্ষম হবে।
হাসনাত আরও বলেন, সরকারের দায়িত্ব হলো জনজীবনে সৃষ্ট চাপ লাঘব করা এবং জনগণকে সব বিষয়ে পরিষ্কার ধারণা দেওয়া। এটি করতে ব্যর্থ হলে সরকারের প্রতি মানুষের আস্থা কমবে। তিনি সতর্ক করেন, জনগণের চাহিদা এবং স্বপ্ন পূরণের ক্ষেত্রে যে কোনো উদাসীনতা ভবিষ্যতের জন্য মারাত্মক পরিণতি ডেকে আনতে পারে।
শেষে তিনি বলেন, জনগণের কল্যাণের জন্য সরকারকে চাপ দেওয়া এবং তাদের ভুল সিদ্ধান্তের বিরুদ্ধে সোচ্চার হওয়া প্রত্যেক নাগরিকের দায়িত্ব। একই সঙ্গে তিনি তরুণদের বিভ্রান্ত না করে দেশ গঠনে সর্বোচ্চ ভূমিকা রাখতে আহ্বান জানান। তার মতে, এটাই হবে জুলাই আন্দোলনের প্রকৃত সফলতা।
আপনার মতামত লিখুন :
বি: দ্র: প্রিয় পাঠক সমালোচনা আপনার অধিকার । তবে ভাষাটাও মার্জিত হতে হবে। সাথে থাকার জন্য ধন্যবাদ ।